শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৩ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

বাংলাদেশকে তুলে ধরা হবে

জেনেভায় বিশ্ব বিনিয়োগ সম্মেলন

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ৮ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়ন বিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের উদ্যোগে চলতি মাসের ২২ থেকে ২৬ অক্টোবর জেনেভায় বিশ্ব বিনিয়োগ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্র প্রধানদের পাশাপাশি মন্ত্রী, বিনিয়োগকারী, উর্ধ্বতন সরকারী কর্মকর্তা, বেসরকারী প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী এবং আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা অংশ নেবেন। ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত ইস্যুর পাশাপাশি এবারের বিনিয়োগ সম্মেলনে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে গৃহীত এজেন্ডা-২০৩০ বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হবে। বিশ্বনেতাদের পাশাপাশি এবারের সম্মেলনে ১৬০টি দেশের প্রায় চার হাজার বিনিয়োগকারী উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করবেন। বাণিজ্যমন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, এবারের সম্মেলনে বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাংলাদেশ সরকারের নেয়া উদ্যোগ ও কর্মসূচী সফলভাবে তুলে ধরার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশ ও বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে বিনিয়োগের সম্ভাবনা সম্পর্কে নতুন করে ধারণা পাবে। এছাড়া সম্মেলনের মাধ্যমে আঙ্কটাড সদস্য দেশগুলোর মধ্যে বেসরকারী খাতে উদ্ভাবনী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অগ্রাধিকার পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে জাতিসংঘের বাণিজ্য ও উন্নয়নবিষয়ক সংস্থা আঙ্কটাডের সহায়তা চাইবে বাংলাদেশ। বিশ্ব উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ টানতে কর্মকৌশল নির্ধারণসহ এজেন্ডা চূড়ান্ত করে আনা হয়েছে। ওই সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ। বাংলাদেশ যে, বিনিয়োগের উর্বরভূমি সেটা সরকারের পক্ষ থেকে বিশ্ববাসীর সামনে উপস্থাপন করা হবে।
বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগ ও উন্নয়ন সম্পর্কিত ইস্যু নিয়ে আলোচনা ও এ বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়নের একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈশ্বিক ফোরাম হচ্ছে বিশ্ব বিনিয়োগ সম্মেলন। ব্যাপক সম্প্রচারের মাধ্যমে এ ফোরাম বিনিয়োগের লক্ষ্যস্থল হিসেবে বিশ্বের ব্যবসা ও বাণিজ্য নেতাদের কাছে বাংলাদেশের পরিচিতি বাড়াতে সহায়তা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। জানা গেছে, এর আগে নাইরোবী ও জেনেভায় অনুষ্ঠিত ওয়র্ল্ড ইনভেস্টমেন্ট ফোরামের বৈঠকে আঙ্কটাড কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়তা করার আশ্বাস দেয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত কয়েক বছর দেশে-বিদেশে বেশকিছু আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বিদেশী বিনিয়োগকারীদের সম্মেলনেও সমানতালে অংশগ্রহণ করা হয়। ফলে গত এক দশকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ আসা শুরু হয়েছে।
জানা গেছে, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্য অর্জনে শুধু উন্নয়নশীল দেশগুলোতেই বছরে তিন দশমিক নয় ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ প্রয়োজন। এর বিপরীতে বর্তমানে প্রতি বছর মাত্র এক দশমিক চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনয়োগ হচ্ছে। বাংলাদেশসহ জলবায়ুর ঝুঁকিতে থাকা স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে অধিকহারে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে আঙ্কটাডের সদস্য রাষ্ট্রগুলোর প্রতিও আহবান জানানো হবে। এছাড়া সম্মেলনে বেসরকারীখাতে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে বিনিয়োগ উদ্বুদ্ধ করতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বিশ্ব সম্প্রদায়ের হস্তক্ষেপ চাওয়া হবে বলে জানা গেছে। কারণ বেসরকারী খাতে বিপুল পরিমাণ অর্থ থাকলেও তা সৃজনশীল খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে না। উন্নয়নশীল দেশগুলোতে সরকারী পর্যায়ে বিনিয়োগ আসলেও, বেসরকারী খাতে বিনিয়োগ আসে না। এ কারণে এবারের সম্মেলনে বেসরকারী খাতের বিনিয়োগের ব্যাপারেও বিশ্ব নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে। এতে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের সিদ্ধান্তকে বাস্তবে রূপায়নের জন্য জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য, বিনিয়োগ, অর্থায়ন ও প্রযুক্তি স্থানান্তরের বিষয়ে কার্যকর সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) সূত্রে জানা গেছে, বিদেশী বিনিয়োগ টানতে বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে, বাংলাদেশ রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (বেপজা) মাধ্যমে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়ানো, ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্পে বিনিয়োগ উৎসাহিত করতে মৃত বিসিক শিল্পনগরীগুলোকে চাঙ্গা করা, গ্যাস সংকট নিরসনে বিদেশ থেকে তরল গ্যাস আমদানি ও বিদ্যুৎ ঘাটতি নিরসনসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বড় প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে সহযোগী বিনিয়োগকারী হিসেবে বিদেশিদের আকৃষ্ট করার পদক্ষেপ নিয়ে কাজ করছে সরকার। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বিনিয়োগ বাড়ানোর বিষয়ে বলেছেন, বিনিয়োগ বাড়ানোর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সমস্যা ছিল গ্যাসের সংকট। তরল গ্যাস আমদানি করে এ সংকট মোকাবিলা করা হবে। ইতোমধ্যে এ গ্যাস আমদানি শুরু হয়েছে। ফলে বিনিয়োগের বন্ধ্যত্ব আর থাকবে না বলে মনে করি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন