স্টাফ রিপোর্টার : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, রোজ কেয়ামত পর্যন্ত শর্ত পূরণ করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেবে বলে মনে হয় না। তারা নতুন নতুন শর্ত দিতেই থাকবে। তাই জিএসপি নিয়ে যতো কম ভাবা যায় ততোই ভালো। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা বন্ধ প্রসঙ্গে সরকারি দলের এমপি আবদুল মান্নানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে গতকাল সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, জিএসপি সুবিধা বহালে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই যথেষ্ট। অপর এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, আসন্ন রমজানে কেউ কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাজারে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টিকারীদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি দিয়ে মন্ত্রী বলেন, পবিত্র রমজান মাসে কেউ কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। গত দু’বছরের মতো এবারও রমজানে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি সুবিধা বন্ধ প্রসঙ্গে সরকারি দলের সংসদ সদস্য আবদুল মান্নানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, রোজ কেয়ামত পর্যন্ত শর্ত পূরণ করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জিএসপি সুবিধা ফিরিয়ে দেবে বলে মনে হয় না। তারা নতুন নতুন শর্ত দিতেই থাকবে। তাই জিএসপি নিয়ে যতো কম ভাবা যায় ততোই ভালো। জিএসপি সুবিধা বহালে একটি রাজনৈতিক সিদ্ধান্তই যথেষ্ট।
এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী আরও বলেন, রানা পাজা ধসের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অনাকাক্সিক্ষতভাবে জিএসপি সুবিধা বন্ধ করে দেয়। তারা বাংলাদেশের ওপর ১৬টি শর্তারোপ করে।
একটি স্বাধীন দেশের ওপর অন্য একটি দেশ কখনোই কোনো শর্তারোপ করতে পারে না। এরপরও আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া সবগুলো শর্তই পূরণ করেছি।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বৈঠকে বলেছে, এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে। তবে আরও উন্নতি করতে হবে। আমরা জানি না সেটি আর কী হতে পারে? আসলে কেয়ামত পর্যন্ত আমরা শর্ত পূরণ করলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একের পর এক শর্ত দিতেই থাকবে। তাহলে আমরা কী করে সেটা পূরণ করবো?
এটার জন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছার প্রয়োজন। আর জিএসপি না পেলেও আমাদের কোনো ক্ষতি নেই। বাংলাদেশ এখন পোশাক শিল্প রফতানিতে বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি, এগিয়ে যাবোই।
বিএনএফের সভাপতি এস এম আবুল কালাম আজাদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বিশ্বের চীন ও ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। বর্তমানে চীনের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি ৭ হাজার ৪২৪ এবং ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৫ হাজার ২৮৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। সব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য বৈষম্য হ্রাসে সরকার বহুবিধা কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ জানান, যেসব দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক রয়েছে তাদের সঙ্গে বাণিজ্য বৈষম্য হ্রাস এবং বাণিজ্য বৃদ্ধির জন্য বর্তমান সরকার নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
সরকার ইতোমধ্যে কয়েকটি আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। এসব চুক্তি ও বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার আওতায় বাংলাদেশ ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৮টি দেশসহ বিশ্বের মোট ৫২টি দেশে উলেখযোগ্য পরিমাণ পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার সুবিধা পাচ্ছে।
তোফায়েল আহমেদ বলেন, আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপালের মধ্যে বিদ্যুৎ, পানি সম্পদ, ট্রানজিট ও কানেক্টিভিটি বিষয়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়েছে।
বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মিয়ানমারকে নিয়ে আঞ্চলিক বাণিজ্য জোট গঠন করা হয়েছে, যা এ অঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ও বাণিজ্য বৃদ্ধিতে উলেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন