শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

ক্ষুব্ধ মানুষের প্রতিরোধ চট্টগ্রামে গণপিটুনিতে ৩ ডাকাত নিহত : অস্ত্রসহ আটক ৫

প্রকাশের সময় : ২৮ এপ্রিল, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : চট্টগ্রামে ছিনতাই, ডাকাতিতে অতিষ্ঠ জনতা অবশেষে আইন হাতে তুলে নিয়েছে। ডাকাতির প্রস্তুতিকালে ৩ যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে বিক্ষুব্ধরা। নগরীর আকবর শাহ থানার উত্তর কাট্টলী বেড়িবাঁধ এলাকায় গতকাল (বুধবার) ভোরে গণপিটুনির এই ঘটনা ঘটে। পরে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় পুলিশ সেখান থেকে অস্ত্রসহ আরও ৫ ডাকাতকে পাকড়াও করে।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কয়েকদিন ধরে ওই এলাকায় বেপরোয়া ছিনতাই ডাকাতি হচ্ছিল। বাসাবাড়ি থেকে শুরু করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান কোনকিছুই বাদ পড়ছে না সন্ত্রাসীদের টার্গেট থেকে। নিজেদের নিরাপত্তায় স্থানীয়রা এলাকায় রাত জেগে পাহারা বসাতে বাধ্য হয়। লাঠিসোঁটা নিয়ে পাহারা দেয়ার মধ্যেই ওই ডাকাতি প্রস্তুতির খবর আসে তাদের কাছে। এরপর তারা এলাকা ঘেরাও করে ৩ ডাকাতকে পাকড়াও করে পিটিয়ে হত্যা করে।
আকবর শাহ থানার ওসি সদীপ কুমার দাশ জানান, গণপিটুনির ঘটনার পর সেখান থেকে ডাকাত সন্দেহে ৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত তিনজনের মধ্যে সাগর ওরফে লম্বা সাগর (৩০) ও মো. রাসেল (২২) নামে দুইজনের নাম জানা গেলেও অন্য্যজনকে শনাক্ত করা যায়নি। ওসি বলেন, উত্তর কাট্টলী বেড়িবাঁধ এলাকায় বেশ কিছুদিন ধরে ‘ডাকাতের উৎপাত’ বেড়ে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন পালা করে পাহারা বসিয়েছিল।
রাত ৩টার দিকে একদল দুর্বৃত্ত সেখানে ডাকাতি করতে গেলে স্থানীয়রা ধরে পিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যায়। নিহত সাগর ওই ডাকাত দলটির নেতা। ঘটনাস্থল থেকে একটি এলজি, একটি পিস্তল, তিনটি কার্তুজ, তিনটি রামদা ও একটি হকিস্টিক উদ্ধার করা হয়েছে। সংঘবদ্ধ ডাকাত চক্রের উত্থান জনতার সম্মিলিত প্রতিরোধে আপাতত ঠেকানো গেলেও এলাকাবাসী এখনও আশংকামুক্ত হতে পারেনি। তারা বলছেন, একাধিক সন্ত্রাসী গ্রুপ ওই এলাকায় তৎপর রয়েছে। একটি গ্রুপের এই কয়েকজন ধরা পড়লেও বাকিরা এখনও সক্রিয় রয়েছে।
ওসি বলেন, রাত জেগে পাহারা দেয়ার ক্ষেত্রে আমরাও জনতার সঙ্গে একাত্ম হই। আমরা কিছুটা কৌশল পরিবর্তন করি। সেই কৌশলের কাছে হার মেনে ধরা পড়েছে ডাকাতদল। আপাতত পুরো এলাকার লোকজন শান্তিতে থাকবে বলে আশা করছি। অভিযানে আকবর শাহ থানা পুলিশের সঙ্গে পাহাড়তলী থানা পুলিশের একটি টিমও অংশ নেয় বলে জানিয়েছেন পাহাড়তলী থানার ওসি রনজিত কুমার বড়ুয়া।
স্থানীয়রা জানান, সীতাকু-ের জঙ্গল সলিমপুর এলাকা থেকে ডাকাতরা এসে বেড়িবাঁধে অবস্থান নেয়। তারপর উত্তর কাট্টলীর বিভিন্ন বাড়িতে ডাকাতি করে। ডাকাতরা এলাকার মানুষের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। বেড়িবাঁধ ব্যবহার করে ডাকাতদের আনাগোণা বন্ধে নগরীর আকবর শাহ, পাহাড়তলী ও জেলার সীতাকু- থানা পুলিশকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ওই এলাকার মত মহানগরীর অন্যান্য এলাকাতেও ছিনতাইকারী ও ডাকাতদের তৎপরতা বেড়েছে। প্রতিনিয়ত নগরীর বিভিন্ন স্পটে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ও রিকশাযোগে ছিনতাইকারীরা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় টহল দেয়। সুযোগ বুঝে তারা লোকজনের কাছ থেকে টাকা, মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র কেড়ে নেয়। হেঁটেও পথচারীদের কাছ থেকে সর্বস্ব ছিনতাই করছে দুর্বৃত্তরা। মহানগরীর অন্তত অর্ধশতাধিক স্পটে ছিনতাই ও ঝাপটাবাজি এবং টানাপার্টির উৎপাত চলছে। বড় অংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হলেও ছোটখাটো ঘটনার অধিকাংশই থানায় রেকর্ড থাকে না। কারণ ভুক্তভোগীরা এসব ঘটনায় থানায় মামলা করতে যায় না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন