বিশিষ্ট আইনজীবী ড. শাহ্দীন মালিক বলেছেন, বাংলাদেশে বিভিন্ন সময়ে ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা সংরক্ষণের সংকীর্ণ স্বার্থে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে। এর থেকে কোনো দলই মুক্ত নয়। তিনি বলেন, সামরিক শাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে আদি সংবিধানকে সংশোধন করা হয়েছে।বেসামরিক সরকারের সময়েও সংবিধানে সংশোধনী আনা হয়েছে। বারবার সংবিধান সংশোধনের ফলে জনগণের ক্ষমতা খর্ব হয়েছে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যকার ক্ষমতার ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে। গতকাল বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ সফিউর রহমান মিলনায়তনে বাংলাদেশ সংবিধান চতুর্থ স্মারক বক্তৃতা ২০১৮ ও সংবিধান দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় স্মারক বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি মিলনায়তনে বাঙলার পাঠশালা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
ড. শাহ্দীন মালিক বলেন, মুক্তিযুদ্ধের আশা আকাঙ্খার ভিত্তিতে ১৯৭২ সালে আদি সংবিধান প্রণীত হয়েছিলো। পরে সেই সংবিধানে অনেক কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। চতুর্থ সংশোধনী গৃহীত হলেও তা ছিলো আদি সংবিধান থেকে মৌলিক বিচ্যুতি। এতে সংসদীয় প্রথা বাতিল করে দেশে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু করা হয়। এখন আদি সংবিধানে ফিরে যেতে হলে একাত্র উপায় হচ্ছে সংশোধিত সংবিধানের পুন:সংশোধন।
তিনি বলেন, বিচারকদের শৃঙ্খলাবিধি পাসের ফলে আমার কাছে মনে হয়, নিম্ন আদালতের বিচারকদের ওপর মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণ আরো বেড়ে গেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন পাসের ফলে আমাদের বাক স্বাধীনতা বলে বোধ হয় আর কিছু থাকবে না। বলতে হবে আমাদের সংবিধানে একসময় লেখা ছিলো, আমাদের বাকস্বাধীনতা আছে। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, মূল সংবিধান থেকে আমরা সরে এসেছি। ১৭বার এটি সংশোধন করা হয়েছে। কেউ কেউ নিজেদের স্বার্থে সংবিধান সংশোধন করেছেন। কেউ নির্বাচনের যোগ্য ছিলো না, সংবিধান সংশোধন করে তাকে যোগ্য করা হয়েছে। কখনো সামরিক শাসনকে বৈধতা দেয়া হয়েছে। দেশের জনগণকে বলা হয় প্রজাতন্ত্রের মালিক, আমরা যেটা করতে পারি, জনগণকে সচেতন করা, তারা যাতে সচেতন হয়ে চাপ সৃষ্টি করে সংবিধানকে যতদূর সম্ভব মৌলিক ন্যায়ানুগ জায়গায় ফিরে যেতে পারে। জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক এমএম আকাশ ও আইন বিভাগের অধ্যাপক শাহনাজ হুদা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন