স্টাফ রিপোর্টার : তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার বিধান সংক্রান্ত সংবিধানের ১৩তম (ত্রয়োদশ সংশোধনী) বাতিল করে আপিল বিভাগের দেয়া রায় পুনঃশুনানি করার দাবি জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি খন্দকার মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, অবসরে যাওয়ার পর সাবেক দুই বিচারপতির লেখা ১৬৮টি মামলার যদি পুনরায় শুনানি হয়, তাহলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে মামলারও পুনঃশুনানি করা উচিত। ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল করে আপিল বিভাগের রায়টিও ১৬ মাস পর স্বাক্ষর হয়েছিল। গতকাল (সোমবার) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে তার নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্প্রতি অবসরের পর সাবেক প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেন ও আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর ১৬৮ মামলা পুনঃশুনানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। আগামী ৫ মে এসব মামলার শুনানি শুরু হবে। পুনঃশুনানির সিদ্ধান্ত নেয়ার ঠিক চার দিন পর এ দাবি জানান সমিতির সাবেক সভাপতি।
খন্দকার মাহবুব বলেন, দেশের সর্বোচ্চ আদালতের এই যদি সিদ্ধান্ত হয় (অবসরের পর রায় লেখা অবৈধ), তবে একইভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ বলে দেয়া রায়ও পুনঃশুনানি করতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার বৈধ বলে হাইকোর্টের স্পেশাল বেঞ্চ রায় দিয়েছিল। সেই রায়টি খায়রুল হক সাহেবের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৯ জন বিচারক অবৈধ ঘোষণা করেন। রায়ে বলা হলো তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, সুতরাং এটি অবৈধ।
বিচারপতি খায়রুল হকের দেয়া এই রায়ের ব্যাপারে সিনিয়র এই আইনজীবী বলেন, এই রায়টি তৎকালীন প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক সাহেব অবসরের ১৬ মাস পর স্বাক্ষর করেন। একজন আইনজীবী হিসেবে আমরা আগেও বলেছি, অবসরে যাওয়ার পর খায়রুল হক সাহেব যে রায় স্বাক্ষর করেছেন সেটি অবৈধ। আমরা আশা করছি বর্তমান প্রধান বিচারপতি এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট মতামত দেবেন। এবং আমরা মনে করি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে যে রায় দেয়া হয়েছিল, সেটা অবৈধ রায়। এই মামলাটিও পুনঃশুনানি করা উচিত।
অবসরে যাওয়া বিচারপতিরা শপথের মধ্যে থাকেন না উল্লেখ করে খন্দকার মাহবুব বলেন, অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখা হয়েছে এ কারণে ১৬৮ মামলা পুনঃশুনানি হবে। যেহেতু সংবিধানের আলোকে অবসরের পর বিচারপতির শপথ বহাল থাকে না ও তিনি সাধারণ নাগরিকের মতো হয়ে যান, তাই তাদের রায় অবৈধ। একইভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল করে খায়রুল হক সাহেবের রায়ও অবৈধ। বিষয়টি আপনারা আদালতের নজরে আনবেন কি নাÑ জানতে চাইলে খন্দকার মাহবুব বলেন, আদালতের নজরে আনা হবে কি না তা ভবিষ্যৎ বলে দেবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন