বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আতঙ্কে বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি

সদস্যরা মামলায় জর্জরিত : রাজনীতি থেকে দূরে অনেকে

প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আফজাল বারী : আতঙ্কে বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি। কারণ এই কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে গা শিউরে ওঠার মতো নানা অভিযোগ আনা হচ্ছে। কমিটির কেউ জেলে, কেউ প্রবাসে আবার কয়েকজন দেশেই গা-ঢাকা দিয়ে আছেন। তারা অজানা শঙ্কা নিয়ে চলাফেরা করছেন। আরেকজন বিএনপি রাজনীতি থেকেই সরে দাঁড়িয়েছেন। বিএনপিকে কোণঠাসা করতেই ষড়যন্ত্র চলছে বলে গতকাল ইনকিলাবকে বলেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই কমিটির এক সদস্য ইনকিলাবকে বলেন, ভিন্ন দল, মত বা মতাদর্শ থাকতেই পারে তার জন্য নোংরা রাজনীতির শিকার হতে হবে এটা কাম্য নয়। তিনি জানান, তার মতো অনেকেই একই পরিস্থিতিতে আছেন। যারা ওই কমিটিকে নানাভাবে সহযোগিতা করেন তাদেরকে মামলা, গ্রেফতার ও অবিশ্বাস্যকর অভিযোগের জালে জড়ানো হতে পারে বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিএনপির তরফ থেকে বহির্বিশ্বে যোগাযোগ রাখার জন্য ‘ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি’ নামের ১০ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটিতে রয়েছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত শমসের মবিন চৌধুরী, (রাজনীতি থেকে অবসরে আছেন) সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ড. ওসমান ফারুক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী রিয়াজ রহমান, সাবেক সচিব ইনাম আহম্মেদ চৌধুরী, সাবেক সচিব আল হারুন, বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য জীবা খান ও ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। এছাড়াও গঠিত কমিটিকে সহযোগিতা করতে রয়েছেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান,  চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাবেক মন্ত্রী আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ নাসির, চেয়ারপারসনের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশেষ দূত এনাম আহম্মেদ চৌধুরী, সাংবাদিক শফিক রেহমান, মুশফিকুল ফজল আনসারী, নিলুফার চৌধুরী মনি, তাবিথ আওয়াল ও শ্যামা ওবায়েদসহ আরো কয়েকজন। ভিনদেশীদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা ছাড়াও বিএনপি দলীয় নেত্রীর সাথে সাক্ষাৎ এবং অভ্যন্তরীণ বৈঠককালে উল্লিখিতরাই অংশ নিয়ে থাকেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, ড. মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। বিগত আন্দোলনের সময় শমসের মবিন চৌধুরীকে গ্রেফতার করা হয়। পরে কারামুক্তি পান। হঠাৎ বিএনপির রাজনীতি থেকে ইস্তফা দিয়েছেন। বিএনপির অভিযোগ ছিল সরকারের নানামুখী চাপে নিজেকে গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছেন শমসের মবিন চৌধুরী। তাকে গ্রেফতারের সময় পালিয়ে আত্মরক্ষা করেছেন সাবিহ উদ্দিন আহম্মেদ। বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয় থেকে বাসায় যাবার পথে রিয়াজ রহমানকে গুলি করা হয়। তার গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তারপর থেকে রিয়াজ রহমান অনেকটাই নিজ গৃহে প্রায় বন্দী জীবনযাপন করছেন। মাত্র ২-৩ দিন গুলশান কার্যালয়ে এসেছিলেন রিয়াজ রহমান। প্রবীণ সাংবাদিক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে মামলা, গ্রেফতার এবং রিমান্ডে নেয়া হয়। তিনি এখন জেলে। লন্ডনে অবস্থানরত মুশফিকুল ফজল আনসারী দেশে ফিরতে পারছেন না বলে গণমাধ্যমে অভিযোগ করেছেন। চট্টগ্রামের গিয়াস কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধেও স্থানীয়ভাবে মামলা দেয়া হয়েছে।
সর্বশেষ গতকাল ড.ওসমান ফারুকের বিরুদ্ধে একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
গত ধানমন্ডিতে তদন্ত সংস্থার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংস্থার সিনিয়র সমন্বয়ক সানাউল হক খান বলেন, একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্ত করতে গিয়ে ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ১১ জন অধ্যাপকের নাম পাওয়া গেছে, যারা স্বাধীনতাবিরোধী কর্মকা- করেছেন। তাদের মধ্যে ড. ওসমান ফারুকের নামও রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি সদস্য ড. আসাদুজ্জামান রিপন ইনকিলাবকে বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল। বিভিন্ন সময় রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে। সেই দলটির একটি কূটনীতিক কোর থাকবে- এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সে জন্য রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে হাস্যকর মামলায় জড়ানোটা দুঃখজনক। সরকারের উচিত বিদ্বেষের রাজনীতি পরিহার করে সুষ্ঠু-গণতান্ত্রিক রাজনীতির চর্চা করা।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন