শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

এ পর্যন্ত নিহত ৭১ আহত ৬ শতাধিক

চলমান ইউপি ভোট সহিংসতার : সুজন

প্রকাশের সময় : ৬ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বিভীষিকাময় সহিংসতা ও অস্ত্রের ঝনঝনানি ছিল বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সাধারণ সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, চলমান ইউপি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এ পর্যন্ত নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনকালীন ও নির্বাচন পরবর্তী সংঘর্ষ এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক বিরোধের জেরে নিহত হয়েছেন ৭১ জন এবং আহত হয়েছেন ৬ শতাধিক।
বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব কথা বলেন।
তিনি বলেন, নিহতের মধ্যে সর্বোচ্চ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের প্রাণহানি ঘটেছে। দলটির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর আগে ১৯৮৮ সালের ইউপি নির্বাচন চলাকালীন সময়ে সর্বোচ্চ ৮০ জনের প্রাণহানি ঘটে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও সুজনের সভাপতি হাফিজ উদ্দীন আহমেদ খান বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ব্যাপক সহিংসতা ও অনিয়মের ঘটনা সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়া চেয়ারম্যান পদে প্রায় ১৫০ জনের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এর মাধ্যমে খারাপ নির্বাচনের একটি ট্রেন্ড/নজির সৃষ্টি হচ্ছে। অথচ নির্বাচন হচ্ছে গণতন্ত্রের প্রথম ধাপ। তাই সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা অতীব গুরুত্বপূর্ণ। মনোনয়ন বাণিজ্য রোধে দলীয় প্যানেল থেকে প্রার্থী মনোনয়ন দেয়া যেতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন সুজনের সমন্বয়ক দিলীপ কুমার সরকার। তিনি বলেন, চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বিভিন্ন সহিংসতায় ৭১ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এর মধ্যে আওয়ামী লীগের ২৯ জন, আওয়ামী লীগ বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মী বা সমর্থক ৭ জন। এছাড়াও বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ২ জন, জাতীয় পার্টির ১ জন, জাতীয় পার্টি-জেপির ১ জন, জনসংহতি সমিতির ১ জন, মেম্বার প্রার্থীর কর্মী বা সমর্থক ১৫ জন এবং ১৬ জন সাধারণ মানুষ রয়েছেন প্রাণহানির তালিকায়।
প্রাণহানির তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, প্রথম ধাপের নির্বাচনের পূর্বে ১০ জন, প্রথম ধাপের নির্বাচনের দিন ১১ জন এবং প্রথম ধাপের নির্বাচনের পর থেকে দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত ১১ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া দ্বিতীয় ধাপের নির্বাচনের দিন ৯ জন, নির্বাচনের পর থেকে তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের পূর্ব পর্যন্ত ১৭ জন, তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের দিন ৫ জন এবং তৃতীয় ধাপের নির্বাচনের পর থেকে এ পর্যন্ত ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
দিলীপ কুমার বলেন, চেয়ারম্যান পদে  বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি ইতোমধ্যে সর্বকালের রেকর্ড ছাড়িয়েছে। প্রথম ধাপ থেকে শুরু করে চতুর্থ ধাপের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ও প্রত্যাহারের পর এই সংখ্যা ১৫০-এ দাঁড়িয়েছে। প্রথম ধাপে ৫৪ জন, দ্বিতীয় ধাপে ৩৪ জন, তৃতীয় ধাপে ২৯ জন এবং চতুর্থ ধাপে ৩৩ জন চেয়াম্যান প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। এরা সবাই আওয়ামী লীগের।
তিনি বলেন, চার ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) প্রার্থী শূন্য ছিল বা আছে ৩৮৮টি ইউনিয়নে। প্রথম ধাপে ১১৯ ইউনিয়ন, দ্বিতীয় ধাপে ৭৯ ইউনিয়ন এবং তৃতীয় ধাপে ৮১ ইউনিয়নে বিএনপির প্রার্থী শূন্য ছিল। চতুর্থ ধাপেও ১০৯টি ইউনিয়নে দলটির কোনো প্রার্থী নেই। কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয় বিএনপির প্রার্থীদের অনেক স্থানে ভয়ভীতি প্রদর্শন, মনোয়নপত্র জমাদানে বাধা, মনোয়নপত্র কেড়ে নেয়া বা ছিঁড়ে ফেলার কারণে তারা জমা দিতে পারেনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন সুজনের সভাপতি হাফিজ উদ্দীন আহমেদ, সুজনের জাতীয় কমিটির সদস্য মোহাম্মাদ জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন