শামীম চৌধুরী : দ্বিতীয়বারের মতো অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের একক স্বাগতিক বাংলাদেশ, ২ বছর আগে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা আইসিসি’র সভায় এই সুখবরটি পেয়েছে বিসিবি। আইসিসি’র ওই ঘোষণা শুনেই অতীতের ১০টি আসরের উত্তেজনা ছাপিয়ে ১৬ দেশের অংশগ্রহণে আইসিসি’র ইতিহাসে সেরা অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু বিসিবি এবং বাংলাদেশ সরকারের। ৮টি ভেন্যুতে ঝকঝকে তকতকে করতে সংস্কার কাজ সম্পন্ন করেছে ইতোমধ্যে বিসিবি এবং জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। চেষ্টার ত্রুটি নেই কিছুতেই। নিরাপত্তা বিঘিœত হওয়ার শংকায় অস্ট্রেলিয়া তাদের দল প্রত্যাহার করে নেয়ায়ও আসরটিতে ফেলেনি বিরুপ প্রভাব। যুব বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ নিরাপত্তার রেকর্ডও হতে যাচ্ছে এই আসরটি। বিসিবি এবং সরকারের ব্যাপক নিরাপত্তা পরিকল্পনায় আশ্বস্ত হয়েছে আইসিসি, সন্তুষ্ট হয়েছে অংশগ্রহণকারী দেশসমূহ। অস্ট্রেলিয়ার অপারাগতায় আয়ারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করে প্রশংসিত উদ্যোগ নিয়েছে আইসিসি। ১৯ দিনে দেশের ৮টি ভেন্যুতে ৪৮টি ম্যাচ, কাপ এবং প্লেট পর্বের প্রতিযোগিতায় আসরের শেষ দিনটি পর্যন্ত অংশগ্রহণকারী সকল দেশের বাংলাদেশে অবস্থানÑ এমন বিশাল আয়োজনের পর্দা উঠছে আজ। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ ‘এ’ গ্রুপে স্বাগতিক বাংলাদেশ এবং ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দ.আফ্রিকার মধ্যে ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠছে ভবিষ্যতের ক্রিকেটার খুঁজে নেয়ার আসর। একই দিনে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ‘সি’ গ্রুপে ইংল্যান্ড মুখোমুখি হচ্ছে ফিজির।
ব্রায়ান লারা, ক্রিস গেইল, ইনজামাম, শেবাগ, মাইকেল ক্লার্ক, যুবরাজ সিং, স্টিভেন স্মিথ, কোহলী, ম্যাককালাম, জো রুট, সাকিব, মুশফিকুর, সৌম্য, মুস্তাফিজুরদের আগমনী বার্তা যুব বিশ্বকাপ থেকেই। ভবিষ্যতের তারকা তৈরির মঞ্চ থেকে এবার কাদের আবির্ভাব ঘটে, সেদিকেই তাকিয়ে বিশ্ব। তবে ২০০৪ সালে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে বর্ণাঢ্য উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আসরের উত্তাপ ছাড়িয়ে দিলেও এবার ৯টি টেস্ট প্লেয়িং এবং ৭টি আইসিসি’র সহযোগী সদস্য দেশকে নিয়ে অনুষ্ঠেয় এই আসরে খরচ সাশ্রয়ে রাখা হয়নি উদ্বোধনী অনুষ্ঠান।
ঢাকার ২টি (মিরপুর ও ফতুল্লা), চট্টগ্রামের ২টি (এম এ আজিজ ও জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম), সিলেটের ২টি (সিলেট জেলাও বিভাগীয় স্টেডিয়াম) এবং কক্সবাজারের ২টি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচগুলো। ৪৮টি ম্যাচের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের শেখ কামাল স্টেডিয়াম কমপ্লেক্সের ২টি ভেন্যুতে। প্লেট পর্বের সবগুলো ম্যাচই হবে কক্সবাজারে। সুপার লীগের ম্যাচগুলো হবে সেখানে মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়াম এবং ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে। আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে হবে টুর্নামেন্টের ফাইনাল।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ ইতিহাসে সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত গত আসরে (২০১৪) সর্বোচচ ১১টি ম্যাচ সরাসারি টেলিভিশনে হয়েছে সম্প্রচার। ২০১৬ অনূধর্ব-১৯ বিশ্বকাপে সেখানে ২০টি ম্যাচ হবে সরাসরি সম্প্রচার! শুধু তাই নয়, আসরকে ঘিরে ব্যাপক চাহিদা তৈরি হওয়ায় এই প্রথমবারের মতো বিশ্বব্যাপী ম্যাচ সম্প্রচারে ১৫টি টেলিভিশন প্রতিষ্ঠানের কাছে টিভি সত্ত্ব বিক্রি করেছে আইসিসি। অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে ম্যাচ সম্প্রচারে প্রতিটি ভেন্যুতে ২২টি করে ক্যামেরা থাকবে, থাকছে হক আই প্রযুক্তি! ধারাভাষ্যকর প্যানেলেও থাকছেন নামকরা ক্রিকেট ব্যক্তিত্ব। এই আসরের প্রচারণায় ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ, ইংল্যান্ডের ড্যান লরেন্স, দ.আফ্রিকার মুলডার, ভারতের ইশান কিষানকে নিয়ে বানানো হয়েছে প্রমো। দর্শকের ব্যাপক আগ্রহের কথা মাথায় রেখে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে কক্সবাজারের ২টি ভেন্যু ছাড়া সকল ভেন্যুতেই থাকছে টিকিট।
প্রথম রাউন্ডে আছে প্রতিটি গ্রুপে ৪টি করে দল। প্রতি গ্রুপের সেরা দুই দল খেলবে খেলবে সুপার লিগ রাউন্ডে, নক আউপ পর্বে। গ্রুপ রাউন্ডে প্রতি গ্রুপের শেষ দুই খেলবে প্লেট চ্যাম্পিয়নশিপে, এখানেও ম্যাচগুলো নক আউট রাউন্ড। এই আসরে বাংলাদেশ দলকে ঘিরে প্রত্যাশার চাপ একটু বেশি, সাম্প্রতিক ধারাবাহিক পারফরমেন্সে বাংলাদেশ দলকে ঘিরে ট্রফিতে চোখ এদেশের ক্রিকেট প্রেমীদের। স্বপ্ন পূরণের মিশনে যুব টাইগারদের জন্য রইল শুভকামনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন