টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে বিশ্ব ইজতেমার প্রস্তুতিমূলক কাজে নিয়জিত সাধারণ মুসল্লী, আলেম-উলামা ও মাদরাসা ছাত্রদের ওপর অতর্কিত নিষ্ঠুর হামলার কঠোর প্রতিবাদ জানিয়েছে ব্রিটেনের প্রতিনিধিত্বশীল উলামায়ে কেরাম। একই সাথে তারা হতাহতদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করে অবিলম্বে ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত এবং দোষীদের কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন।
গত ৫ ডিসেম্বর বুধবার লন্ডনের দারুস সুন্নায় ব্রিটেনে অবস্থানরত সর্বদলীয় উলামায়ে কেরামের এক জরুরি বৈঠক শেষে এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।
ব্রিটেনের উলামায়ে কেরাম বলেন, গত ১ ডিসেম্বর শনিবার এর ঘটনা তাবলীগ জামাতের ইতিহাসে এক কালো অধ্যায় হয়ে থাকবে। দাওয়াত ও তাবলীগ হলো ঈমান-আমল শিখা, দ্বীনের প্রচার-প্রসার এবং ভ্রাতৃত্ববোধ চর্চার অন্যতম প্ল্যাটফর্ম। তাবলীগের সকল সাথী ভাইকে এটা বুঝতে হবে যে, দ্বন্দ্ব-সংঘাত ও গায়ের জোর খাটানো তাবলীগের মৌলিক চেতনার সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রকৃত তাবলীগ অনুসারী কখনো ভাইয়ের মাথায় আঘাত করতে পারেন না। যারা না বুঝে এতে জড়িয়ে পড়েছেন, তাদের কর্তব্য দ্রæত তাওবা করে দ্বন্দ্ব-সংঘাতের পথ থেকে নিজেকে ফিরিয়ে আনা এবং আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিকট ক্ষমা চেয়ে তাদের চিকিৎসার ব্যয়ভার গ্রহণ করা।
তারা আরো বলেন, তাবলীগ জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরতজ্বী মাওলানা ইলিয়াস (রাহ.), হযরতজ্বী মাওলানা ইউসুফ কান্ধলভী (রাহ.) এবং হযরতজ্বী মাওলানা ইন’আমুল হাসান (রাহ.) এর নির্দেশিত উসূল তাবলীগের সকল সাথী ভাইকে মেনে চলতে হবে। যেই মোবারক জামাতে ‘ভাই’ ছাড়া কাউকে সম্বোধন করা হয় না, সেই জামাতের এক সাথী আরেক সাথীর মাথায় আঘাত করছে; এমন দৃশ্য কল্পনায়ও আনা যায় না।
উলামায়ে কেরাম বলেন, বাংলাদেশে মোবারক এই বিশাল জামাতের অনুসারীগণ আল্লাহর ওয়াস্তে নিজেরা কোনরূপ দ্বন্দ্ব সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি করবেন না। দেশের হক্কানী উলামায়ে কেরাম ও কাকরাইল শূরার নির্দেশনা মেনে চলুন। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ওয়াসিফুল ইসলাম, নাসিম ও আশরাফ আলী প্রমুখ গুটিকয়েক ব্যক্তি কোনোভাবেই অনুসরণযোগ্য হতে পারে না।
ব্রিটেনের উলামায়ে কেরাম শনিবারের ঘটনায় নিহতদের মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তুপ্ত পরিবারের সদ্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করেন। আহতদের যথাযথ চিকিৎসার জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান। ভবিষ্যতে যেন এমন অপ্রীতিকর পরিস্থিতির শিকার কাউকে হতে না হয়, সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি কামনা করেন।
উলামায়ে কেরাম তাবলীগ জামাতকে সকল ষড়যন্ত্র ও ফিতনা থেকে হেফাজতের জন্য মহান আল্লাহর সাহায্য কামনা করে সকলকে দোয়া করতে বলেন।
মুফতী আবদুল হান্নান সাহেবের সভাপতিত্বে এবং মাওলানা গোলাম কিবরিয়ার সঞ্চালনায় বৈঠকের শুরুতে কালামে পাক থেকে তেলাওয়াত করেন হাফিজ হোসাইন আহমদ বিশ্বনাথী। এতে উপস্থিত ছিলেন এবং উন্মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মাওলানা জিল্লুল হক, শায়খ মাওলানা তরীকুল্লাহ, শায়খুল হাদিস মাওলানা আবদুর রাহমান, মাওলানা আবদুল গফফার, মাওলানা সৈয়দ আশরাফ আলী, মাওলানা সৈয়দ মোশাররফ আলী, মুফতী আবদুল মুনতাকিম, মাওলানা মোবারক আলী, মাওলানা ফয়েজ আহমদ, মুফতী মওসুফ আহমদ, মাওলানা আবদুল হামিদ, মাওলানা মামনুন মহি উদ্দিন, মাওলানা জসিম উদ্দিন, মুফতী আজিমুদ্দিন, মাওলানা সৈয়দ নাঈম
আহমদ, মাওলানা আবদুল আজিজ, মাওলানা মাহফুয আহমদ, মুফতী সালেহ আহমদ, শামসুল হক ছাতকি, মাওলানা বুরহানুদ্দিন, মাওলানা জহির উদ্দিন, মাওলানা সৈয়দ হোসাইন আহমদ, মাওলানা সিরাজ,মাওলানা রোম্মান আহমদ, মুফতী আবদুল গফফার,মাওলানা নাজিম উদ্দিন, হাফিজ ওয়ালিদ রাহমান প্রমুখ। -প্রেস বিজ্ঞপ্তি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন