শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আইএসের অজুহাতে বাংলাদেশে ঢুকতে চায় আমেরিকা-আওয়ামী ওলামা লীগসহ ১৩ দল

ইমরানের গ্রেফতার ও রিমান্ড দাবি

প্রকাশের সময় : ৮ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশে আইএস অবস্থানের উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার, সজীব ওয়াজেদ জয়ের হত্যার চক্রান্তে জড়িতদের গ্রেফতার ও ফাঁসিসহ ৫ দফা দাবিতে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগসহ সমমনা ১৩টি ইসলামিক দল গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিশাল মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সন্ত্রাসী আইএসের অজুহাতে আমেরিকা বাংলাদেশে ঢুকতে চায়। আইএস সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের বাহানায় আমেরিকা ও ইহুদিচক্র ইরাক, সিরিয়া দখল করে পর্যায়ক্রমে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোকে গ্রাস করার ধারাবাহিকতায় এখন বাংলাদেশে আইএসের ধুয়া তুলেছে। অথচ ওদের দেশে হত্যা, গুম বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। কিন্তু ইহুদি নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া তা প্রকাশ করে না।
মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, জয় হত্যা সম্পর্কে শফিক রেহমানের অভিযোগকে বায়বীয় বলে রাজাকার পরিবারের ছেলে প্রাক্তন শিবির নেতা এইচ ইমরান রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ করেছে। দুর্নীতিবাজ, চরিত্রহীন ইমরান, সরকারবিরোধী দেশী-বিদেশী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। হাফেজ মাওলানা মোস্তফা চৌধুরী বাগেরহাটির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন মুহম্মদ আনোয়ার হুসাইন, প্রিন্সিপাল বঙ্গবন্ধু ল’ কলেজ ও আইনজীবী- সুপ্রিম কোর্ট। আলহাজ হাফেজ মাওলানা মুহম্মদ আব্দুস সাত্তার, কার্যকরী সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী, সভাপতি বঙ্গবন্ধু ওলামা ফাউন্ডেশন। হাফেজ, ক্বারী মাওলানা মুফতি আব্দুর রহীম (পীর সাহেব), শেরপুর, সহ-সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, মাওলানা মুজিবুর রহমান চিশতি সহ-সভাপতি বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ, মাওলানা কাজী মুহম্মদ আহমাদুর রহমান, চেয়ারম্যান হক্কানী তরীকত ফেডারেশন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘আইএস মোকাবেলায় বাংলাদেশকে সহায়তা দিতে চায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র’ গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করে এ প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেশাই। তাছাড়া গত ৫ অক্টোবর কূটনৈতিক প্রতিবেদকদের সংগঠন ডিক্যাবের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত বলেছে, ‘বাংলাদেশে আইএসের উত্থান ঠেকাতে যা দরকার তা আমাদের আছে’। এসব বক্তব্যের দ্বারা সুস্পষ্ট যে, আইএসের অজুহাতে আমেরিকা বাংলাদেশে ঢুকতে চায়। বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। আর এ লক্ষ্যেই আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বাংলাদেশে সুপরিকল্পিতভাবে দেশী-বিদেশী নাগরিকদের হত্যা করা হচ্ছে। একই সাথে আইএসের মুখপত্র ইহুদিবাদী ‘সাইট ইন্টেলিজেন্স’ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আইএসের নামে এ দেশে সন্ত্রাসী হত্যাকা-ের দায় স্বীকার করানো হচ্ছে। এসবই এ দেশ ও বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র।
বক্তারা বলেন, যে আমেরিকা বাংলাদেশে আইএস আছে বলে প্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধেই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘আইএস’ তৈরির অভিযোগ রয়েছে। দ্য নিউইয়র্ক টাইমস, তাজিকিস্তানের সাপ্তাহিক ‘ফার্জ’, বার্তা সংস্থা আইআরআইবিসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়া সন্ত্রাসী গোষ্ঠী ‘আইএস’ তৈরির পেছনে মার্র্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা ফাঁস করেছে।
মানববন্ধনে উত্থাপিত ৫ দফা দাবিগুলো হচ্ছেÑ আইএসের নামে উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচারণা এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে অযাচিত মন্তব্য ও হস্তক্ষেপের জন্য আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রী মহলের প্রতি কঠোর নিন্দাবাদ এবং প্রতিহতের ঘোষণা। পাশাপাশি এ দেশে যারা আইএস অস্তিত্বে¡র প্রচারণা তথা ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত তাদেরকে অবিলম্বে গ্রেফতার করা ও রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার আওতায় আনার দাবি।
প্রধানমন্ত্রী তনয় ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের হত্যা চক্রান্তে জড়িত শফিক রেহমানের ফাঁসি দেয়া।
সজীব ওয়াজেদ জয়ের হত্যা চক্রান্ত সমর্থনকারী ইসলামবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদের পৃষ্ঠপোষক ইমরান সরকারের অবিলম্বে গ্রেফতার ও রিমান্ডে নেয়া।
৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত সম্বলিত পাঠ্যপুস্তক এবং মুসলমান শিক্ষার্থীদের হিন্দুধর্ম নীতিতে বিশ্বাসী ও শ্রদ্ধাশীল করে তোলা এবং হিন্দু আচারে অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্য ষড়যন্ত্রমূলক সিলেবাসসহ শিক্ষানীতি-২০১০ ও শিক্ষা আইন-২০১৬ অবিলম্বে বাতিল করা।
আসন্ন পবিত্র শবেবরাত উপলক্ষে ৩ দিন ছুটি প্রদান এবং মিডিয়ায় পবিত্র শবেবরাতবিরোধী পদক্ষেপ কঠোরভাবে বন্ধ এবং শবেবরাতবিরোধীদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ।
শফিক রেহমান প্রসঙ্গে বক্তারা বলেন, নির্দিষ্ট ঘটনার প্রেক্ষিতেই তাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু এসবকে অস্বীকার করে ইমরান তা বায়বীয় বলে মূলত রাষ্ট্রদ্রোহী কাজ করেছে। সে রাষ্ট্রের পুলিশ ও আইনি প্রক্রিয়াকে তুচ্ছ ও অসত্য বলে অবজ্ঞা ও অস্বীকার করেছে। এই ইমরান ‘শেখ হাসিনার সরকার রাজাকারের পাহারা দেয় বলে স্লোগান দিয়েছে। ড. ইউনূস, মান্না, মাহমুদুর রহমানদের ফর্মুলা অনুযায়ী আওয়ামী লীগের বিরোধিতা করার জন্য আলাদা রাজনৈতিক দল গঠনের ব্যর্থ ষড়যন্ত্র করেছে। তার বিরুদ্ধে পাকিস্তানি আইএসআইয়ের অর্থ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। রানা প্লাজার দুর্যোগ পুঁজি করে টাকা গ্রহণ এবং গণজাগরণ মঞ্চের ইমেজকে ব্যবহার করে দেশী-বিদেশী সংস্থা থেকে বিপুল অর্থ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার ঘনিষ্ঠজনেরা বলেছে টাকার বিনিময়ে সে বিদেশী এজেন্ডাও বাস্তবায়ন করেছে। গণজাগরণ মঞ্চের নির্দিষ্ট ৬ দফার বিরুদ্ধে অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে তার বক্তব্য দেয়ার উদ্দেশ্য কী? তা এখন ওপেন সিক্রেট। তাই ইমরান এইচ সরকারকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিয়ে তার ষড়যন্ত্রের সব তথ্য উদঘাটনসহ সংশ্লিষ্ট সবার বিচার করে সর্বোচ্চ শাস্তি দিতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন