যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে অবস্থিত বৃহৎ ইসলামি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ ও অ্যাডুকেশন সেন্টারের পরিচালক ও বাংলাদেশের জনপ্রিয় পত্রিকা সাপ্তাহিক পূর্বদিকের প্রকাশক আলহাজ হাফিয সাব্বির আহমদ বলেছেন, প্রখ্যাত বুযুর্গ আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) ভারতীয় উপমহাদেশের আলেমদের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তি ছিলেন। তিনি আজীবন মানুষকে সত্যের পথে আহবান করেছেন। ইসলাম ও দেশ বিরোধী সকল ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন বলিষ্ট কণ্ঠ। ফুলতলী ছাহেব এমন এক শতাব্দিতে জন্মেছিলেন যা ইতিহাসের স্মরণীয় কাল। একাধারে তিনি ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত ভারত রাষ্ট্র, পাকিস্তান রাষ্ট্র ও বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নাগরিক ছিলেন। সে সময় অনেক ভাঙাগড়ার খেলা হয়েছে। অনেকে অনেকভাবে বিক্রি হয়েছেন। ক্ষমতার অংশিদার হয়েছেন। ফুলতলী ছাহেবের কাছেও অনেক লোভনীয় অফার ছিল। কিন্তু তিনি কোন সরকারেরই তল্পিবাহক হননি। এসব দুনিয়াবি ক্ষমতাকে তিনি পায়ে দলেছেন। তাঁর বিবেক ও উন্নত শির কারো কাছে বন্ধক রাখেন নি। সকল সরকারের আমলেই তাঁকে ইসলামে স্বার্থে কথা বলতে হয়েছে। সংগ্রাম করতে হয়েছে। আন্দোলনের মাঠে নেতৃত্ব দিতে হয়েছে। তিনি ছিলেন ইসলামের পাহারাদার। এই অকুতোভয় বীরমুজাহিদ কারো রক্তচক্ষুকে কখনো পরোয়া করেন নি। যখন যা বলার ও করার তাই তিনি করেছেন।
আলহাজ হাফিয সাব্বির আহমদ গতকাল (১১ জানুয়ারি) বিকাল ২টায় যুক্তরাজ্যের বার্মিংহামে সিরাজাম মুনিরায় হযরত আল্লামা ফুলতলী ছাহেব কিবলাহ (র.) এর ঈসালে সাওয়াব উপলক্ষে আয়োজিত ‘ফুলতলী ছাহেবের কর্মময় জীবন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথাগুলো বলেন।
সিরাজাম মুনিরা জামে মসজিদ ও অ্যাডুকেশন সেন্টারের পরিচালক আলহাজ কাজী মো. নানু মিয়ার সভাপতিত্বে ও মসজিদের ইমাম ক্বারী মো. আহমদ আলীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ফুলতলী ইসলামিক সেন্টার কভেন্ট্রি ইউকের ইমাম হাফিয মো. দেলওয়ার হাসান সুমন, সৈয়দ তাজুল ইসলাম, আলহাজ আমিরুল হক, আলহাজ মো. আব্দুল মালিক, মো. আব্দুর রব, মো. মোদাচ্ছির মিয়া, মো. মুশফিক প্রমুখ।
আলহাজ সাব্বির আহমদ বলেন, পূর্বসূরীদের মতো ফুলতলী ছাহেব এই জমিনে ইসলামি আকিদা-বিশ্বাস, তাহযিব, তামাদ্দুনের বিকাশের জন্য আজীবন লড়েছেন। মাদরাসা শিক্ষাকে নিয়ে ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিয়েছেন। ইরাকে ইঙ্গ-মার্কিন হামলার প্রতিবাদ সমাবেশে মার্কিন সরকারের প্রতি হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। কুখ্যাত লেখিকা তসলিমা নাসরিনের ইসলাম বিরোধী লেখালেখির প্রতিবাদ করেছেন। তৎকালিন সরকারকে তাকে প্রশ্রয় না দেয়ার জন্য সাবধান করেছেন। ইসলামের স্বার্থে যখন তিনি মাঠে নেমেছেন তখনই জমিন কেঁপে উঠেছে। তার হুমকিতে বিভিন্ন আমলের সরকারের মসনদ নড়বড়ে হয়ে গেছে। কুফরি ও বাতিল শক্তির বিরুদ্ধে তিনি ছিলেন আপোষহীন ব্যক্তিত্ব।
তিনি মানুষকে ঘরে বাইরে তালিম দিয়েছেন। খানকা করেছেন, মাহফিলে যোগ দিয়েছেন। মানুষকে সহিহ কুরআন তেলাওয়াত শিক্ষা দিয়েছেন। দারুল কেরাত মজিদিয়া ফুলতলী ট্রাস্টের মাধ্যমে অভিনব সিলেবাস পদ্ধতি প্রনয়ন করে হাজার হাজার কেন্দ্র গড়ে তুলেছেন। এই প্রতিষ্ঠানটি এখন আন্তর্জাতিক মানের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিশ্বব্যাপি সমাদৃত।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন