শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

তানোরে গলা কেটে হত্যা ‘পীর’ উপাধি নিয়ে পরিবারের ক্ষোভ কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ

প্রকাশের সময় : ১০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহীর তানোর উপজেলার বাঁধাইড় ইউপির জুমারপাড়ার আমবাগানে পীরের মুরিদ মোহাম্মদ শহীদুল্লাহকে গলা কেটে হত্যার এখনো কোনো ক্লু পায়নি পুলিশ।
ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও জড়িত সন্দেহে কাউকে গ্রেফতারও করা যায়নি। এদিকে নিহত শহিদুল্লাহকে পীর বলে প্রচার করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তার পরিবারের সদস্যরা। নিহতের ছোট ছেলে রাব্বি আহমেদ বলেন, আমরা জানি একজন পীরের আস্তানা থাকে। কিন্তু আমার বাবার তা ছিলো না। তবে তিনি পীরের ভক্ত ছিলেন। এ জন্য ১০-১২ বছর আগে রাজবাড়ির গোয়ালন্দ উপজেলায় পীরের কাছে যেতেন। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরে আর যাননি। তবে মোবাইলে পীরের সাথে কথা বলতেন। এরপর চাপাইনবাবগঞ্জ ও ঢাকায় কিছু তার নিজের ভক্ত তৈরি হয়। তারা আমাদের বাড়িতে আসতেন। আবার বাবাও তাদের সাথে দেখা করার জন্য যেতেন। ভক্তরা ছিলেন বেশিরভাগ দিনমজুর শ্রমিক। এজন্য যে আমার বাবা পীর হয়ে গেছেন তা ঠিক না। আর এই পীর উপাধিটা কারা ছড়িয়ে দিলো তা আমরা বুঝতে পারছিনা। তাকে তো সাধারণ মানুষের মতো পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। অপর ছেলে ইকবাল হোসেন বলেন, আমার বাবা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন না। কিন্তু আমাদেরকে নামাজ পড়া থেকে বিরত রাখতেন না। তিনি গভীর রাতে নামাজ পড়তেন। রোজাও রাখতেন না। এলাকার লোকজনকে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি হবে এমন কথাও তিনি বলতেন না।
তবে পুলিশ বলছে, শহীদুল্লাহ ফরিদপুরের গোয়ালন্দঘাটের পীর নূর মোহাম্মদ ওরফে নুরু ফকিরের অনুসারী হলেও বর্তমানে তিনি নিজেকেই পীর বলে দাবি করে বেশকিছু মুরিদান তৈরী করেছিলেন। কিন্তু নিজে নামাজ আদায় করতেন না। আর এ ধর্মানুভূতির কারণেই তাকে হত্যা করা হয়েছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক এএফএম রেজাউল করিম সিদ্দিকীহত্যাসহ যেসব হত্যাকা- ঘটেছে তার সঙ্গে শহীদুল্লাহর হত্যাকা-টিরও যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে বলেও পুলিশ দাবি করেছে।
তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, এই হত্যাকা- কী কারণে ঘটেছে তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। হত্যাকা-ের কোনো ক্লু না পেলেও সন্দেহভাজনদের আটকের জন্য অভিযানও চলছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে তারা এ হত্যাকা-ের ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালাচ্ছেন। পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরাও এ হত্যা রহস্য ও জড়িতদের চিহ্নিত করার জন্য কাজ করে যাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
জেলা পুলিশ সুপার বলেন, ধারণা করা হচ্ছে যারা শহীদুল্লাহকে মোটরসাইকেলে তুলে নিয়ে গেছে, তারাই এই হত্যাকা-টি ঘটিয়েছে। সাম্প্রতিককালে যেসব হত্যাকা- ঘটছে তার সঙ্গে এই হত্যা প্রক্রিয়ার মিল রয়েছে। কোপ দেওয়ার ধরণও একই রকম। এ থেকে ধারণা করা হচ্ছে উগ্রপন্থী কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী এই হত্যাকা- ঘটাতে পারে। আবার অন্যরাও করতে পারে। মামলার এজাহারে বাদী নিহত শহীদল্লাহর ছেলে রাসেল জমিজমা নিয়ে বিরোধের একটি পুরোনো বিষয় উল্লেখ করেছে। সেটিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন