প্রকৃতি মানুষের জন্য যে সব উপকারী সবজি দিয়েছে শসা তার মধ্যে অন্যতম। শসা শুধু সবজিই নয়, এটি একটি আশ্চর্য ফলও বটে। এটি মানুষের শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। তাই সবারই খাবারের তালিকায় অবশ্যই শসা রাখা উচিত। এখন শসা কীভাবে আমাদের উপকারে লাগে তা দেখা যাক।
পানির যোগান : পানি ছাড়া মানুষের শরীর চলে না। পানি শরীর থেকে বিষক্রিয়া দূর করে শরীর পরিষ্কার রাখে। পানি সারাদেহে অত্যাবশ্যক পুষ্টি ছড়িয়ে পড়ায় সাহায্য করে। সবচেয়ে বড় কথা, শরীরের জন্য স্বাভাবিক ৯৮.৬ ডিগ্রি তাপমাত্রা স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করে। কিন্তু অনেকেরই জানা নেই যে মানুষের দৈনিক প্রয়োজনীয় পানির ৪০ শতাংশই আসে খাবার থেকে, যেমন শসার মত খাবার। শসার ৯৫ শতাংশই পানি। তাই আপনি যখন শসা খাবেন তখন একই সাথে খাবার ও পানি দুই-ই খাওয়া হবে।
দরকারী পুষ্টি : শসার ক্যালোরি খুব কম। মাঝারি সাইজের একটি শসার ক্যালোরি ১৫-১৭। কিন্তু এই নিম্ন ক্যালোরির খাবারটি ফাইবার, কার্বোহাইড্রেটস, প্রোটিন, ভিটামিন সি, কে ও বি, পটাশিয়াম ম্যাঙ্গানিজ, আয়রন, জিংক, রিবোফ্লেভিন ও ম্যাগনেশিয়ামে পূর্ণ। একটি কথা, আপনি যদি শসা থেকে এসব পুরো পেতে চান তবে খোসা ছাড়াবেন না। কারণ, খোসার মধ্যে অনেক পুষ্টি, বিশেষ করে ফাইবার থাকে।
ওজন কমাতে শসা : শসাতে কম ক্যালোরি, উচ্চ পুষ্টিমান ও পানির উপাদান থাকায় তা আপনার হজমে অনেক সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে, কম পানিসহ খাবার গ্রহণের চেয়ে বেশী পানিসহ গ্রহণ করা খাবার বেশী ওজন হ্রাস করে। মানব পুষ্টি, খাদ্য ও ব্যায়াম দফতর পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, খাবার পানি বেশী পরিমাণ ক্যালোরি পোড়াতে সাহায্য করে। উচ্চ ক্যালোরিযুক্ত খাবারের পরিবর্তে শসা যোগ করুন, দেখবেন আপনার ওজন হ্রাসে বড় রকম সাফল্য এসেছে।
ব্লাড সুগার কমাবে : শসাতে ভিটামিন সি, বেটা-ক্যারোটিন ও ম্যাঙ্গানিজসহ কিছু অ্যান্টি অক্সিড্যান্টস রয়েছে। সে সাথে আছে লিগনান নামে আখ্যায়িত পলিফেনল। এই পলিফেনল অক্সিডেটিভ চাপ হ্রাস করে যার ফলে খারাপ কোলেস্টরেল ও ব্লাড সুগারের মাত্রা হ্রাস পায়। ওয়েবএমডির তথ্যমতে, পলিফেনল গ্রহণ বহু ডায়াবেটিস ওষুধের মত যা শুধু ডায়াবেটিস চিকিৎসায়ই সাহায্য করে না, তা প্রতিরোধেও সাহায্য করে।
উদ্বেগ দূর করে : শসায় ভিটামিন বি১, ভিটামিন বি৫ ও ভিটামিন বি৭সহ নানা রকম বি ভিটামিন রয়েছে। এগুলো উদ্বেগ কমায় ও মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। বি ভিটামিন শক্তি তৈরি করে।
চুল, নখ ও ত্বকের জন্য উপকারী : শসায় রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি, কে, ম্যাঙ্গানিজ, কপার ও পটাশিয়াম যা শরীরের জন্য ও দেহে রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা তৈরিতে সহায়তা করে। আপনার শরীর সুস্থ ও রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থা সবল থাকলে তা চুল, নখ ও ত্বক ভালো রাখবে।
হজমে সাহায্য : শসায় উচ্চ পরিমাণে পানি ও ফাইবার থাকায় শরীরে খাদ্যের সঞ্চরণশীলতায় সাহায্য করে, অন্ত্রে ভাল ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে, পেটে হজমে সাহায্য করে।
হার্ট ভালো রাখে : শসার পটাশিয়াম হার্টকে ভালো রাখতে সাহায্য করে। সবার জানা যে পটাশিয়াম মাসল ও নার্ভের জন্য উপকারী এবং কিডনিকে রক্ত শোধনে সাহায্য করে। পরিণতিতে তা হার্টকে সারাদেহে পরিষ্কার ও সুস্থ রক্ত চলাচলে সহায়তা করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, অতি অল্প পরিমাণ পটাশিয়াম হৃদরোগের সৃষ্টি করে। তাই পটাশিয়ামের জন্য শসা খেতে হবে। সূত্র : বিদেশী পত্রিকা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন