মো. দেলোয়ার হোসেন মো: হেদায়েত উল্লাহ : আজ রোববার আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হচ্ছে তাবলীগ জামাতের ৫১তম বিশ্ব ইজতেমা। দুই পর্বে অনুষ্ঠিত মোট ৩২ জেলার মুসল্লিরা এবারের ইজতেমায় যোগ দেন। আগামী বছর একইভাবে দুই ধাপে ৫২তম বিশ^ ইজতেমায় যোগ দেবেন দেশের বাকি ৩২ জেলার মুসল্লিরা।
প্রথম পর্বের ন্যায় দ্বিতীয় পর্বেও আখেরী মোনাজাতে অংশ নিতে গতকাল সন্ধ্যা থেকেই ইজতেমা ময়দান তথা টঙ্গী অভিমুখী মুসল্লিদের চাপ বাড়তে দেখা গেছে। দূর-দুরান্ত থেকে মুসল্লিরা ট্রেন, বাস, ট্রাক, লঞ্চ, নৌকাযোগে ও পায়ে হেঁটে দলে দলে ইজতেমাস্থলে আসতে শুরু করেছেন। মুসল্লিদের আখেরী মোনাজাতে অংশ নিতে ইজতেমা ময়দানে আসার এ স্রোতের কারণে গত রাত ৩টা থেকে ইজতেমার আশপাশের সড়ক মহাসড়কগুলোতে যানচলাচল বন্ধের আগাম ঘোষণা দেয় জেলা পুলিশ প্রশাসন। ফলে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুর চান্দনা চৌরাস্তা থেকে উত্তরা আবদুল্লাপুর, টঙ্গী-ঘোড়াশাল-নরসিংদী সড়কের টঙ্গী স্টেশন রোড থেকে পূবাইল মিরেরবাজার এবং টঙ্গী-আশুলিয়া রোডের আবদুল্লাপুর থেকে ধৌড় ব্রিজ পর্যন্ত যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। তবে অ্যাম্বুলেন্স, বিমানযাত্রী, ইজতেমার মুসল্লি, সংবাদপত্রবাহীসহ অত্যাবশ্যকীয় কাজে নিয়োজিত পরিবহনের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা ছিল না।
গতকাল টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে ৫১তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের দ্বিতীয় দিন ভোর থেকে এশা পর্যন্ত ইজতেমায় আগত মুসল্লিগণ উপমহাদেশের বিশিষ্ট আলেমদের গুরুত্বপূর্ণ বয়ান শুনেছেন। তাবলীগ জামাতের মুরব্বীদের মাশোয়ারা বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত বা সিডিউল অনুযায়ী শনিবার বাদ ফজর থেকে দ্বিতীয় দিনের বয়ান শুরু হয়। সিডিউল অনুযায়ী বাদ ফজর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা মুহাম্মদ খোরশেদ। বাদ জোহর বয়ান করেন ভারতের মাওলানা মুহাম্মদ ফারুক, বাদ আছর বয়ান করেছেন ভারতের মাওলানা মুহাম্মদ ইউসুফ ও মাগরিবের নামাজ শেষে ভারতের মাওলানা মুহাম্মদ শওকত আলী বয়ান করেন।
ইজতেমার বয়ান শোনার পাশাপাশি মুসল্লিরা ইবাদত বন্দেগীতে মশগুল রয়েছেন। সেই সঙ্গে ইজতেমার সব কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন। ইজতেমা থেকে দ্বীনের দাওয়াতের দীক্ষা নিয়ে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে পড়বেন চিল্লাধারী মুসল্লিরা। যারা চিল্লায় যাচ্ছেন না তারাও নিজ নিজ পাড়া মহল্লায় মসজিদভিত্তিক দ্বীনের মেহনতে নিয়োজিত হবেন।
প্রথম পর্বের ইজতেমায় বিভিন্ন মেয়াদের চিল্লাধারী প্রায় তিন হাজার তাবলীগ জামায়াত তৈরি হয়েছে বলে ইজতেমা সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এসব চিল্লাধারী তাবলীগ সদস্য দেশ বিদেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে মসজিদে মসজিদে অবস্থান করবেন আর দ্বীনের পথে মেহনতের জন্য মানুষকে উদ্বুদ্ধ করবেন। দ্বিতীয় পর্বেও প্রায় সমপরিমাণ জামায়াত তৈরি হবে বলে আশা করছেন ইজতেমা কর্তৃপক্ষ।
এবার বাংলাদেশের ৩২ জেলার লাখ লাখ মুসল্লি ছাড়াও পৃথিবীর প্রায় শতাধিক দেশের মুসল্লিরা দুই পর্বে ইজতেমায় শরিক হন।
আজ আখেরী মোনাজাত ঃ দ্বিতীয় পর্বের আখেরি মোনাজাত আজ রোববার বেলা সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে ইজতেমা সংশ্লিষ্ট শীর্ষ মুরুব্বীরা আভাস দিয়েছেন। তাবলীগ জামায়াতের শীর্ষস্থানীয় মুরুব্বীদের পরামর্শের ভিত্তিতে তাবলীগ জামায়াতের দিল্লীর মারকাজের শূরা সদস্য হযরত মাওলানা মুহাম্মদ সাদ বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ এ আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মোনাজাতে বাংলাদেশসহ সারা দুনিয়ার মানুষের সুখ, শান্তি ও কল্যাণ কামনা করে দোয়া করা হবে। আখেরি মোনাজাতে দেশ বিদেশের প্রায় ২০/২৫ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নেবেন বলে আয়োজকদের ধারণা।
ইজতেমা ময়দান পরিদর্শনে আইজিপি ঃ গতকাল শনিবার দুপুরে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপুলিশ পরিদর্শক (আইজিপি) একে এম. শহীদুল হক ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন করেন। ইজতেমা ময়দান পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে তিনি বলেন, “ইজতেমা শেষে যে সব বিদেশি মুসল্লি আরো ৪০ দিন বা তার বেশি সময় বাংলাদেশে অবস্থান করবেন তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাদের পুলিশের পর্যবেক্ষণের আওতায় রাখা হবে।
তিনি বলেন, তাদের (বিদেশি মুসল্লিদের) অনুরোধ করা হয়েছে তারা যেসব এলাকায় চিল্লায় যাবেন তার তালিকা যেন পুলিশকে দেয়া হয়। ওই সব এলাকায় পুলিশ তাদের নিরাপত্তা দেবে। এমনকি যদি তারা পল্লী এলাকাতেও যান তবুও পুলিশ তাদের পর্যবেক্ষণে রাখবে এবং নিরাপত্তা দেবে।
আইজিপির ইজতেমাস্থল পরিদর্শনের সময় তার সাথে ছিলেন, পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি (ট্রেনিং) মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এসএম মাহফুজুল হক নূরুজ্জামান, ঢাকা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (প্রশাসন) শফিকুল ইসলাম, অতিরিক্ত ডিআইজি (অপরাধ) মোহাম্মদ আলী, গাজীপুরের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, টঙ্গী থানার এএসপি গোলাম সবুর, অফিসার্স ইনচার্জ ফিরোজ তালুকদার ও আমিনুল ইসলাম প্রমুখ।
আইজিপি আরো বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিরা আসে শান্তি, কল্যাণ ও মুসলিম উম্মার কল্যাণের জন্য। এখানে কোন দুষ্কৃতিকারী কোন ধরণের নাশকতা করবে তা আমি বিশ্বাস করি না। তারা এমন সাহসও পাবে না, তাদের সে সামর্থও নেই। তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমাকে ঘিরে তাই কোন ধরনের নাশকতার আশংকা নেই। জনগণ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ পছন্দ করে না।
আইজিপি আরো বলেন, ইজতেমার আখেরি মোনাজাতের জন্য বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সাধারণ পাবলিক যে অপরাধ করে পুলিশ যদি সে অপরাধ করে তাহলে তার চেয়ে বেশি শাস্তি আমরা দেই। পুলিশের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ উঠলে তা তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বয়ানের তাৎক্ষণিক অনুবাদ ঃ মূল বয়ান উর্দুতে হলেও বাংলা, ইংরেজী, আরবি, তামিল, মালয়, তুর্কি ও ফরাসিসহ বিভিন্ন ভাষাভাষীদের জন্য তাৎক্ষণিক অনুবাদ করে ইজতেমা ময়দানে আগত সংশ্লিষ্ট মুসল্লীদের শোনানো হচ্ছে। বিভিন্ন ভাষাভাষী মুসল্লিরা আলাদা আলাদা বসেন এবং তাদের মধ্যে একজন করে মুরুব্বী ছোট মাইকের মাধ্যমে মূল বয়ানকে তাৎক্ষণিক অনুবাদ করে শুনান। মূল বক্তা বয়ানের একটি নির্দিষ্ট অংশ শেষ করার পর অনুবাদের জন্য বিরতি দেন। অনুবাদ শেষ হলে তিনি আবার বয়ান শুরু করেন। এভাবেই ইজতেমা ময়দানে তাবলীগ জামাতের মুরব্বীদের বয়ান শোনানো হয়।
আইন-শৃঙ্খলা জোরদার ঃ গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর-রশিদ জানান, ইজতেমা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পাঁচ সেক্টরে বিভক্ত হয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। ইজতেমা চলাকালীন সময় ময়দানের চারিদিকে থাকছে বিভিন্ন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সমন্বয়ে পাঁচস্তরের নিরাপত্তা বলয়। সেই সাথে থাকছে স্টাইকিং ফোর্স, চেক পোস্ট, ওয়াচ টাওয়ার এবং ইন্টারনেটের ওয়াইফাই সুবিধাসহ মিডিয়া সেন্টার। নিরাপত্তা জোরদার করতে র্যাবের কমিউনিকেশন উইংয়ের পক্ষ থেকে ১৮টি প্রবেশপথসহ চারপাশের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে ৬০টি ক্লোজসার্কিট ক্যামেরা। এছাড়াও থাকছে মেটাল ডিটেক্টর, বাইনোকুলার ও নাইটভিশন গগল্স। র্যাবের ইন্টেলিজেন্সের সদস্যরা কড়া নজরদারি রাখছেন, যাতে ইজতেমা মাঠ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকা-সহ যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটাতে না পারে। প্রতিটি খিত্তায় বিশেষ টুপি পরিহিত ও সাদা পোশাকধারী ২ জন করে গোয়েন্দা সদস্যও অবস্থান করছেন। তারা কোন প্রকার সন্ত্রাসী তৎপরতার ইঙ্গিত পেলে বিশেষ সিগনালের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের তৎক্ষণিক অবহিত করবেন বলে তিনি জানান। এছাড়াও তারা ইজতেমা মাঠসহ আশপাশের কোথায় কি হচ্ছে না হচ্ছে প্রত্যক্ষ করার জন্য ল্যাপটপ কম্পিউটারের স্ক্রিনে সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন। ১৫টি গাড়িসহ ফায়ার সার্ভিসের সদস্যদের সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে বিভিন্ন স্থানে বসানো র্যাবের ৮টি ও পুলিশের ৬টি পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। এসব টাওয়ার থেকে পর্যবেক্ষক দল সার্বক্ষণিক বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মুসল্লিদের যাতায়াত ও অবস্থান পর্যবেক্ষণ করছেন। এছাড়াও র্যাবের পর্যবেক্ষণ পোস্ট দল, ইন্টামিডিয়েট পোস্ট দল, নৌ টহল, হেলিকপ্টার টহল, স্টাইকিং রিজার্ভ, বোম্ব স্যুইপিং দল, চিকিৎসা সহায়তা কেন্দ্র, একটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও ২টি সিসি টিভি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হয়েছে।
ইজতেমায় বিদেশীসহ ৩ মুসল্লির মৃত্যু ঃ ইজতেমায় মালয়েশীয় নাগরিকসহ ৩ মুসল্লির মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন মালয়েশিয়ার শাহিদান ইব্রাহিম (৪৮), জামালপুর সদরের কাচারিপাড়ার আবুল কাশেম (৬৫) ও বগুড়ার গাবতলির মাঝবাড়ি এলাকার আব্দুর রহমান (৬০)। ইজতেমা ময়দানে শুক্রবার বাদ এশা আবুল কাশেমের, বাদ মাগরিব শাহিদানের ও বাদ ফজর আব্দুর রহমানের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।
ইজতেমা মাঠের পুলিশ নিয়ন্ত্রণ কক্ষে কর্তব্যরত পুলিশ পরিদর্শক মো. মোমিন মিয়া জানান, সকালে শাহিদান ইব্রাহিম অসুস্থ বোধ করলে তাকে প্রথমে টঙ্গী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে ঢাকার শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেয়ার পথে দুপুর দেড়টার দিকে তার মৃত্যু হয়। তার লাশ মালয়েশীয় দূতাবাসের মাধ্যমে দেশে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।
টঙ্গী হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মো. পারভেজ জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নিজ খিত্তায় হৃদরোগে আক্রান্ত হন আবুল কাশেম। সেখান থেকে টঙ্গী সরকারি হাসপাতালে আনার আগে পথেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে জানান তিনি। এর আগে বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান আব্দুর রহমান। আবুল কাশেম ও আব্দুর রহমানের লাশ তাদের গ্রামের বাড়ি পাঠানো হয়েছে বলে জানান বিশ্ব ইজতেমার মাসলেহাল জামাতের জিম্মাদার আদম আলী।
চিকিৎসা সেবা ঃ ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের অনেকে আকস্মিক বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে ইজতেমা মাঠে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন ফ্রি চিকিৎসা কেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসা নিতে দেখা গেছে। গতকাল শনিবার ফ্রি চিকিৎসা কেন্দ্র এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, মুসল্লিরা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে চিকিৎসা সেবা গ্রহণ করছেন। মুসল্লিদের স্বাস্থ্য সেবা প্রদানের জন্য ময়দানের আশপাশে ও মন্নু নগর এলাকায় ইবনে সিনা, হামদর্দ, র্যাব’র ফ্রি-মেডিক্যাল ক্যাম্প, গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন ফ্রি চিকিৎসা ক্যাম্প, গাজীপুর সিভিল সার্জন অফিস, ইন্টার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন, বাংলাদেশ হোমিও বোর্ড, আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম, টঙ্গী ওষুধ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতি, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক কলেজ, হোমিওপ্যাথিক অনুশীলন কেন্দ্র, বাংলাদেশ হোমিওপ্যাথিক পরিষদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় অর্ধশত ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসকরা বিনামূল্যে মুসল্লিদের চিকিৎসা সেবা ও ওষুধপত্র দিচ্ছেন। অসুস্থ মুসল্লিদের অধিকাংশই অতিরিক্ত শীত ও ঠা-াজনিত সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া, পেটের পীড়া, আমাশয় ও শ্বাসকষ্টের রোগী।
বিদেশী মুসল্লি ঃ বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ৯৬টি দেশ থেকে প্রায় দুই সহস্রাধিক মুসল্লি ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বে অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে। বিদেশী মুসল্লিরা আলাদাভাবে ইজতেমা ময়দানের উত্তর পশ্চিম কর্ণারে স্থাপিত বিশেষ বিদেশী মেহমান খানা ‘তাশকিল’ কামরায় অবস্থান করছেন।
যানজট নিয়ন্ত্রণ ঃ আজ রোববার বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের আখেরী মোনাজাতে অংশ নিতে আসা মুসল্লিদের অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য দক্ষিণে আন্তর্জাতিক হযরত শাহ্ জালাল (রহ.) বিমানবন্দর, পশ্চিমে উত্তরা-১১ নং সেক্টর, উত্তরে চৌরাস্তা পর্যন্ত ও পূর্বে পূবাইলের মিরের বাজার এলাকা পর্যন্ত যানবাহন বন্ধ থাকবে বলে জানান গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার। তবে গাজীপুর জেলা পুলিশের বিশেষ ব্যবস্থাপনায় ২৬টি বাস এসব সড়কে বিশেষ ব্যবস্থায় চলাচল করবে বলে জানান গাজীপুর জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ।
ইজতেমা এলাকায় ৭০ ভিক্ষুক ও হকার আটক ঃ ইজতেমা ময়দান ও আশপাশের এলাকায় উৎপাতের অভিযোগে গতকাল শনিবার পর্যন্ত ৭০ জন ভিক্ষুক ও হকারকে আটক করেছে পুলিশ। এদের কারণে মুসল্লিদের স্বাভাবিক চলাফেরায় বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। এ অভিযোগে তাদের আটক করা হয়।
উল্লেখ্য, এবারের দুই পর্বের বিশ্ব ইজতেমা গত ৮ জানুয়ারী থেকে প্রথম পর্ব শুরু হয়ে গত ১০ জানুয়ারী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে প্রথম পর্ব শেষ হয়। আজ রোববার ১৭ জানুয়ারি দ্বিতীয় পর্বের মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে দুই পর্বের ৬ দিনব্যাপী ৫১তম বিশ্ব ইজতেমা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন