সাদিক মামুন, কুমিল্লা থেকে : কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ ছাত্রী সোহাগী জাহান তনু হত্যা মামলার তদন্তের অগ্রগতির স্বার্থে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে কুমিল্লায় এসেছেন তদন্তকারী সহায়ক দলের প্রধান আবদুল কাহ্হার আকন্দ। দুপুরে তিনি কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে আসেন। বিকেলে তনুর পরিবারের লোকজনসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন সিআইডি কর্মকর্তারা। সিআইডি কার্যালয়ে প্রবেশের আগে তনুর মা আনোয়ারা বেগম দাবী করেন সেনানিবাসের অনুষ্ঠানে গান না গাওয়ার অপরাধে তার মেয়েকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তবে সিআইডি তনুর মায়ের এমন অভিযোগের বিষয়ে কোন মন্তব্য করেননি।
কলেজ ছাত্রী তনু হত্যার ৫০দিনের মাথায় তার মা আনোয়ারা বেগম গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে তিনটায় কুমিল্লা সিআইডি কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের মুখোমুখি হওয়ার আগ মুহূর্তে গণমাধ্যম কর্মীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরের এক পর্যায়ে বলেছেন ‘আমার মেয়ে আগ থেকেই সেনানিবাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান নাচ করতো। পুরস্কারও পেয়েছে।
গত মার্চের ১৭ বা ১৮ তারিখে সেনানিবাসে সেনাবাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে আমার মেয়ে তনুকে গান গাইতে বলা হয়েছিল। কিন্তু কলেজের সংগঠন থেকে সে সিলেটের শ্রীমঙ্গল যাবে তাই সেনানিবাসের অনুষ্ঠানে গান গাইতে পারবে না বলে তাদের জানিয়ে দেয়। আর গান না গাওয়াতেই ২০ মার্চ আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তনুর লাশ ওই রাতে সেনানিবাসেই পাওয়া গেছে। হত্যার পর আমার বাসা থেকে মেয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের অ্যালবাম সেনাবাহিনীর লোকজন নিয়ে যায়। আর এই কারণেই আমাদের মধ্যে এমন ধারণা জন্মে। তারা ঘটনা আড়াল করার জন্যই এসব করেছে। সিআইডির কাছে তিনদিন আগে সেনানিবাসে অনুষ্ঠানের কয়েকটি ছবি দিয়েছি।’ তনুর বাবা ইয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। তার চুল কেটে নেয়া হয়েছে। মেয়ের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল। তারপরও ডাক্তাররা মৃত্যুর কারণ খুঁজে পাচ্ছে না। ৫০দিন হয়ে গেলো মামলার কোন কুলকিনারা দেখছি না।’
ঘটনার ৫০ দিনের মাথায় তনু হত্যাকা- সম্পর্কে তনুর পরিবারের এমন বক্তব্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। তবে তনুর পরিবারের এমন দাবী প্রসঙ্গে আন্তঃবাহিনী গণসংযোগ অধিদপ্তরের (আইএসপিআর) পরিচালক লে. কর্ণেল রাশিদুল হাসান এবিষয়ে কোন মন্তব্য না করে বলেছেন তারা কিছু জানেন না। এদিকে মামলার তদন্তের অগ্রগতির স্বার্থে তদন্ত সহায়ক দলের প্রধান বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ গতকাল কুমিল্লায় পৌঁছেন। বিকেলে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন ও চাচাতো বোন লাইজু আক্তার, তনুর বন্ধু মাহমুদ, শামীম, সঙ্গীত শিল্পী শান্তসহ সাতজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহহার আকন্দ ও সিআইডি কুমিল্লার বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করীম খান। সিআইডি সূত্রে জানা গেছে, মামলার অগ্রগতির স্বার্থেই তনুর পরিবারের লোকদের সিআইডি কার্যালয়ে ডেকে আনা হয়েছে। তিন চারদিন আগে তনুর বাবা ও মা সিআইডি কার্যালয়ে এসে সেনানিবাসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে তনুর পারফরমেন্স ও পুরস্কার নেয়ার কয়েকটি ছবি দিয়ে গেছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন