কর্পোরেট রিপোর্টার : বাজারে গিয়ে কেনাকাটার দিন কমে আসছে। বিশ্বের অনেক মানুষই এখন কেনাকাটায় ই-কমার্সের দিকে ঝুঁকছে। কর্মব্যস্ত জীবনে, প্রযুক্তির এই অভূতপূর্ব বিকাশের যুগে বদলাচ্ছে মানুষের অভ্যাস। বড় ধরনের পণ্য থেকে ছোটখাটো পণ্য সবই এখন কেনা যাচ্ছে ঘরে বসে। মাউসের এক ক্লিকে। অনলাইন কেনাকাটায় মানুষের এই আগ্রহ উৎসাহিত করছে উদ্যোক্তাদেরও। দেশে দেশে বিকশিত হচ্ছে নতুন এই খাতটি। তবে সব দেশ কিন্তু সমানতালে আগাচ্ছে না এই দৌড়ে। ভারতের ই-কমার্সে প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি। বিএমআর অ্যাডভাইজরসের একজন অংশীদার ভিভেক গুপ্তা বলেন, ই-কমার্সের বিষয়ে সরকারের এই স্পষ্ট অবস্থান অনেক দিন ধরেই বিলম্বিত অবস্থায় ছিল। কিন্তু সম্প্রতি ভালো বিষয়টি সম্পর্কে কিছুটা স্পষ্টতা পাওয়া গেল। আর এ কারণেই খাতটি খুব শিগগরিই আরো বিকশিত হবে বলে মনে করেন তিনি। সম্প্রতি এক জরিপে দেখা গেছে, খাতটি সবচেয়ে বেশি বিকশিত হয়েছে ভারতে। এক গবেষণার বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, আগামী চার বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের মধ্যে ই-কমার্স খাতে ভারতের আয় গিয়ে দাঁড়াবে ১২০ বিলিয়ন ডলারে। বর্তমানে খাতটিতে ভারতের আয় ৩০ বিলিয়ন ডলার। এসোসাম ফরেস্টার নামক গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণার বরাত দিয়ে খবরে বলা হয়েছে, সামগ্রিকভাবে চীন বা জাপানের মতো প্রযুক্তিনির্ভর দেশের মতো না হলেও ভারতের ই-কমার্সে প্রবৃদ্ধির হার সবচেয়ে বেশি। ২০১৫ সালে ভারতে যেখানে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি ঘটেছে ৫১ শতাংশ সেখানে একই সময়ে চীনে প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১৮ শতাংশ আর জাপানে হয়েছে ১১ শতাংশ। এশিয়ার আরেক প্রযুক্তিনির্ভর দেশ দক্ষিণ কোরিয়ায় হয়েছে মাত্র ১০ শতাংশ। ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ব্রিকসভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে প্রতি বছর ভারতেই সবচেয়ে বেশিসংখ্যক মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহারে যুক্ত হচ্ছে। ২০১৫ সালে দেশটিতে নতুন করে প্রায় ২৫ কোটি মানুষ ইন্টারনেট সেবার আওতায় এসেছে। খবরে প্রকাশ, ভারতে বর্তমানে প্রায় ৪০ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। সেখানে ব্রাজিলে মাত্র ২১ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে। আর রাশিয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহার করে ১৩ কোটি মানুষ। গবেষণায় দেখা গেছে, ভারতে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের বেশির ভাগের বয়সই ১৫ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। এই বয়সে সবার মধ্যে অনলাইন নিয়ে বিস্তর কৌতূহলও আছে। তাই তারা ই-কমার্স পদ্ধতি সেখানে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। দেখা গেছে আলোচ্য সময়ে, ভ্রমণ, ফ্যাশন, ভোগ্যপণ্যসহ সেবা খাতের সাইটগুলো ভালো ব্যবসা করেছে। এসব খাতে নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান যুক্ত হচ্ছে। এদিকে বিষয়টি নিয়ে ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে খাতটি বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। সেই কারণে এই খাতের ব্যাপক প্রসার ঘটতে পারে। আবার কৃষিপণ্য অনলাইনে বিপণনের জন্য দেশটির সরকার নতুন পক্ষেপ নিয়েছে। উল্লেখ্য, দেশটিতে বর্তমানে বিশ্বখ্যাত ই-কমার্স জায়ান্ট অ্যামাজন এবং বিদেশি অর্থায়নে পরিচালিত স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ফ্লিপকার্ট ও ¯œ্যাপডিল ব্যবসা করছে। এদের ইনভেন্টরি নেই বরং তারা একটি প্লাটফর্ম তৈরি করার মাধ্যমে ক্রেতা এবং বিক্রেতার মধ্যে সংযোগ ঘটায় এবং মধ্যস্বত্বভোগী হিসাবে কমিশন পায়। আর এসব কারণেই দেশটির ই-কমার্স খাত এভাবে বিকশিত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন