কৃষি মন্ত্রী ড. মো: আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, টেকসই কৃষি উন্নয়নের জন্য কৃষি বাণিজ্যিকীকরণ অপরিহার্য। আধুনিক কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও কৃষির বহুমুখিকরণের মাধ্যমেই কৃষির উন্নয়ন সম্ভব। আমাদের যে উৎপাদন ক্ষমতা রয়েছে তার সাথে স্থানীয় এবং আর্ন্তজাতিক পরিমণ্ডলে বাজারজাত নিশ্চিত করতে পারলে এসডিজি’র চ্যালেঞ্চ মোকাবেলা করতে সক্ষম হবে।
গতকাল ঢাকার কেআইবি মাঠে জাতীয় সবজি মেলা ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পুষ্টি নিরাপত্তা ও দারিদ্র বিমোচনে বছরব্যাপী নিরাপদ সবজি চাষ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। এর আগে মেলার উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। এবার মেলায় মোট ৭১ টি ও ৫টি প্যাভেলিয়ন স্থান পেয়েছে। এবারের মেলার প্রতিপাদ্য ছিল ‘নিরাপদ সবজি করব চাষ, পুষ্টি মিলবে বার মাস। তিনি বলেন, বাংলদেশের অর্থনীতি এবং কর্মসংস্থানে কৃষির ভূমিকা অনেক। আমাদের উৎপাদিত কৃষি পণ্য রপ্তানি করতে পারলে আয় বাড়বে,আয় বাড়লে সক্ষমতা বাড়বে তখন মানুষের নিরাপদ ও পুষ্টিমান সম্পন্ন খাদ্য গ্রহণের হার বাড়বে।
কৃষিমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য এখন দুটি চ্যালেঞ্জ। জনগণের জন্য পুষ্টি ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ এবং উৎপাদনমুখী খাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে আমাদের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীকে দক্ষ মানব সম্পদে পরিণত করা। উৎপাদিত পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে মূল্য সংযোজন ও রপ্তানি বাড়াতে পারলে দেশের বাজারও সম্প্রসারণ হবে। কৃষক তার ফসলের ন্যায্য দাম পাবে। আরো বাড়বে কৃষি উৎপাদন। নিশ্চিত হবে নিরাপদ ও পুষ্টিমানসম্পন্ন খাদ্যের যোগান। লক্ষ্য পূরণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, এবং কৃষি মন্ত্রণালয়কে সমন্বিতভাবে কাজ করার পলিসি নির্ধারণ করতে হবে। আর এ জন্য কৃষি খাতের সকলের সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই। কৃষিমন্ত্রী বলেন, হাইব্রিড বীজসহ নানা সীমাবদ্ধতায় এ সম্ভাবনাকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ভ‚ট্টার জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া অনূক‚ল। দেশের প্রয়োজনীয় হাইব্রিড বীজ এখনও আমদানি করেই মেটাতে হয়। একটি বা দুটি ছাড়া আমাদের বিজ্ঞানীরা আর কোন হাইব্রিড বীজ আবিষ্কার করতে পারেননি। কেন তারা হাইব্রিড জাতের বীজ আবিষ্কার করতে পারছেন না, তাও ভেবে দেখার সময় এসেছে। টাকার অভাব নেই, তবুও বিজ্ঞানীরা কেন পারছেন না? সেমিনারের বিশেষ অতিথি বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শী বলেন, অনেক উন্নয়ন হয়েছে। বিশেষ করে বিগত ১০বছরে কৃষিক্ষেত্রে হয়েছে বিপ্লব। এ কৃতিত্ব কৃষক, কৃষিবিদ ও কৃষি বিজ্ঞানীদের। আশাব্যক্ত করে বলেন, আমি আরেকবার সবজি মেলায় আসবো, আর তখন মেলার প্রতিপাদ্য বদলে হবে ‘নিরাপদ সবজি চাষ করব চাষ, রপ্তানি করব বার মাস। উল্লেখ্য, কৃষির উৎপাদন ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে দারিদ্রের হার ০.৪১ শতাংশ হ্রাস পায় এবং কৃষি বহির্ভূত খাতে উৎপাদন ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেলে দারিদ্র হ্রাস পায় ০.২ শতাংশ। বর্তশানে দেশে ০.৪ মিলিয়ন হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হচ্ছে। ২০১৮ সালে মোট উৎপাদিত সবজি ১৫৯.৫৪ লাখ মেট্রিক টন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব জনাব মো:নাসিরুজ্জামান এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রী জনাব টিপু মুন্শি এমপি এবং কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান এমপি। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রফেসর ড.গোলাম মোর্শেদ আব্দুল হালিম, পরিচালক, উদ্যানতত্ব গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট গাজীপুর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন