রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামী জীবন

মাতা-পিতার খেদমত

মো:শামসুল ইসলাম সাদিক | প্রকাশের সময় : ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

শেষ

ইসলামের ইতিহাসে মাতা-পিতার দায়িত্ব ও গুরুত্ব অপরিসীম। মাতা-পিতার সম্মান ও মর্যাদা বিষয়ক অনেক প্রমাণ আল- হাদিসের মাধ্যমে পাওয়া যায়।হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:)-থেকে বর্ণিত, রাসুলে পাক (সা:)-ইরশাদ করেন- যখন কোন সন্তান তার আপন মাতা-পিতার প্রতি রহমতের দৃষ্টিতে তাকায়, তখন রাব্বে কারিম তার প্রতিটি দৃষ্টির বিনিময়ে তার আমলনামায় একটি ‘মকবুল হজ্ব’ এর ছওয়াব লিপিবদ্ধ করেদিবেন। সাহাবায়ে কেরামগণ আরজ করলেন ইয়া রাসূলাল্লাহ! যদি কোন ব্যক্তি দৈনিক একশত বার এরূপ থাকায় তবুও কি সে এই ছওয়াব পাবে ? তিনি জবাবে বললেন ‘হ্যাঁ’। রাব্বে কারিম অতি মহান, অতি পবিত্র (বায়হাকি)। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর (রা:) থেকে বর্ণিত , রাসুলে পাক (সা:) ইরশাদ করেন- মাতা-পিতার সন্তুষ্টির মধ্যেই রাব্বে কারিমের সন্তুষ্টি এবং মাতা-পিতার অসন্তুষ্টির মধ্যেই রাব্বে কারিমের অসন্তুষ্টি নিহিত (তিরমীজি)। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেন – রাসুলে পাক (সা:) ইরশাদ করেন- তারনাসিকা ধূলিসাৎ হোক, তার নাসিকা ধূলিসাৎ হোক , তার নাসিকা ধূলিসাৎ হোক- একথা তিন বার বললেন। জিজ্ঞেস করা হল- ইয়া রাসূলাল্লাহ ! কে সে ? যার নাসিকা ধূলিসাৎ হোক । তিনি বললেন - যে ব্যক্তি তার মাতা-পিতার একজনকে অথবা উভয়জনকে তাদের বার্ধক্য অবস্থায় পেল অথচ (তাদের খেদমত করে ) সে বেহেশতে প্রবেশ করলো না (মুসলিম শরীফ)। হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা:) বর্ণিত ,রাসুলে পাক (সা:) ইরশাদ করেন- “যে ব্যক্তি তার মায়ের চক্ষুদ্বয়ের মধ্যভাগে চুমা দিবে সে দোযখ থেকে মুক্তি পাবে”(বায়হাকী ও ইবনে আদী) । অনত্রে একটি হাদিসে রাসুলে পাক (সা:) ইরশাদ করেন- যে ব্যক্তি তার মায়ের পা চুম্বন করলো (কদমবুছি করলো) সে যেন বেহেশতের চৌকাঠে চুম্বন করলো (দুররুল মুহতার )।
মাতা-পিতার প্রতি যারা খারাফ ব্যবহার করার পরিমাণ অত্যন্ত ভয়াবহ। যারা মাতা-পিতার অবাধ্য, যারা কষ্ট দেয়, তাঁদের সাথে দুর্ব্যবহার করে তাদের উপর আল্লাহ ও তাঁর রাসুল (সা:) এবং ফেরেস্তার অভিসম্পাত করেন। মাতা-পিতার অবাধ্য হওয়া বা তাদের কে কষ্ট দেয়া বা তাদেরকে অত্যাচার করা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ। এরূপ কাজে রাব্বে কারিম কখন ক্ষমা করবেন না। হযরত আবু বাকরা (রা:) হতে বর্ণিত, রাসুলে পাক (সা:) ইরশাদ করেন- প্রত্যেক গুণাহ থেকে রাব্বে কারিম যতটা ইচ্ছা ক্ষমা করে দেন। কিন্তু মাতা-পিতার সাথে যে নাফরমানি করবে তা ক্ষমা করেন না;বরং তার শাস্তি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে মৃত্যুর পূর্বে দুনিয়ার জীবনে প্রদান করেন (বায়হাকী) মাতা-পিতার অবাধ্য ছেলে ও মেয়ে যত বেশি ইবাদত করুক না কেন সে কোনো সময় রাব্বে কারিমের প্রিয় হতে পারবে না। কেননা কেহ যদি তার সারাজীবন মাতা-পিতার খেদমত করি না কেন তবুও তাঁদের ঋণ শোধ করা যাবে না।
সারাজীবন মাতা-পিতার খেদমত করে ,তাদের কাছ থেকে দোয়া নেয়া আমাদের জন্য একান্ত জরুরী। কেননা মাতা-পিতার নেক দোয়া নেয়া প্রত্যেক সন্তানের সুন্দর জীবনের শ্রেষ্ঠ পাথেয়। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হতে বর্ণিত ,রাসুলে পাক (সা:) ইরশাদ করেন- তিন ব্যক্তির দোয়া সাথে সাথে রাব্বে কারিমের দরবারে কবুল হয়, তাতে কোনো সন্দেহ নাই- মাতা-পিতার দোয়া, মুসাফিরের দোয়া ও মজলুমের দোয়া (তিরমীজি,আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ)। তাই আমাদের সকলের একান্ত জরুরী মাতা-পিতার খেদমত করা। রাব্বে কারিম আমাদের সবাইকে মাতা-পিতার খেদমত করার দাওফিক দান করুন। আমিন

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন