ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে নতুন যুক্ত হওয়া ৩৬টি ওয়ার্ডের নির্বাচনে বেশির ভাগ প্রতিদ্ব›িদ্বই আওয়ামী লীগের। ২৮ ফেব্রুয়ারির এ ভোটে এখন পর্যন্ত প্রতিটি ওয়ার্ডে দলের ৫ থেকে ৮ জন প্রার্থী নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে দলীয় মনোনয়নের পর প্রার্থীর সংখ্যা কমে আসবে বলে জানিয়েছেন দলটির নেতারা।
নির্বাচনী প্রচারণা এখনও জমে না উঠলেও গণসংযোগ চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। গতকাল ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশেনের ৬৫ নাম্বার ওয়ার্ড পরিদর্শন করে প্রার্থীদের ব্যস্ততা লক্ষ্য করা যায়। তবে দলের মনোনয়ন ও নির্বাচন কমিশন থেকে প্রতীক বরাদ্দের পর প্রচারণা জমে উঠবে বলে জানান প্রার্থীরা।
ডেমরা ও যাত্রাবাড়ি উভয় থানার অন্তর্গত এ ওয়ার্ডটি ছিল আগে মাতুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদ। অন্য ওয়ার্ডগুলোর চেয়ে এই ওয়ার্ড অনেকটা বড়। ইউনিয়র পরিষদ ৭, ৮, ৯ এই ৩টি ওয়ার্ড মিলে গঠিত হয়েছে এ ওয়ার্ড। ওয়ার্ডের সীমানা হচ্ছে মাতুয়াইলের মোমেনবাগ, আদর্শবাগ, রহমতপুর, মধুবাগ, মুসলিমনগর, মোগল নগর, খুড়িয়াপাড়া, কেরানী পাড়া, দক্ষিণ পাড়া, ভূইয়া বাড়ী, খানবাড়ী, রায়েরবাগ, হাশেম রোড, রায়েরবাগ খানকা, মাতুয়াইল মেডিক্যাল ও সাদ্দাম মার্কেট, তুষারধারা, গিরিধারা ও বিশ্ব রোডের দক্ষিণ অংশ।
এখানে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে মাতুয়াইল ইউনিয়র আওয়ামী লীগের সভাপতি লুৎফর রহমান খান, যাত্রাবাড়ি থানা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আমিন নীরু, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা এনামুল ইসলাম, সাবেক মাতুয়াইল যুবলীগ সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ, মাতুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শান্ত নূর খান শান্ত, স্বতন্ত্র প্রার্থী দুইজন তারা হলেন- শামসুদ্দিন ভূইয়া ও মিজানুর রহমান। এখানে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের মধ্যে লড়াই জমবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।
এ ওয়ার্ডের মূল সমস্যা হচ্ছে জলাবদ্ধতা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা সংকট ও মাদক। এছাড়া ভোটের মাঠে স্থানীয় ও বিভিন্ন জেলা থেকে আগত ভোটারদের মাঝে কিছু বিভাজনও প্রভাব ফেলে নির্বাচনের মাঠে। দেশের সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে গতি মিলিয়ে উন্নয়ন হচ্ছে এখানেও। সকল নাগরিককে সঙ্গে নিয়ে উন্নয়নে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে কাউন্সিলর হতে চান প্রার্থীরা।
কাউন্সিলর পদপ্রার্থী যাত্রাবাড়ি থানা যুবলীগের সভাপতি নুরুল আমিন নীরু ইনকিলাবকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দলের সঙ্গে কাজ করছি। এক সময় ছাত্রলীগ করেছি, মাতুয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের এবং যাত্রাবাড়ি থানা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি। নিজের টাকা দিয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করছি। রাস্তাঘাট মেরামত করেছি। যারা মারা যায় তাদের বিনামূল্যে কাফনের কাপড় দিয়ে থাকেন তিনি। ইতোমধ্যে এই ওয়ার্ডের রোগীদের সেবায় একটি ফ্রি এ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করার উদ্যাগ নিয়েছেন যা নির্বাচনের আগেই উদ্বোধন করবেন। যেকোন রোগী যেকোন সময় ফোন দিয়ে এ সেবা গ্রহণ করতে পারবে কোন টাকা লাগবে না। তিনি বলেন, আমি যদি কাউন্সিলর হতে পারি তাহলে আমার ব্যক্তি পর্যায়ের উন্নয়ন কাজগুলো রাষ্ট্রীয় ভাবে আরো বড় পরিসরে করা সুযোগ পাব। জলাবদ্ধতা ও মাদক চিরতরে দূরীকরণে সর্বাত্মক লড়াই করবো। হয় মাদক থাকবে না হয় তিনি থাকবেন বলেও জানান তিনি। দলের মনোনয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, আশা করছি আমি দলের মনোনয়ন পাব, তবে মনোনয়ন যদি না-ও পাই তাহলে দলের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করবো।
আরেক প্রার্থী মাতুয়াইল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত কমিটির সহ-সভাপতি মো. এনামুল ইসলাম এনাম ইনকিলাবকে বলেন, প্রতিদিনই আমার সমর্থকরা বিভিন্ন এলাকায় প্রচারণা চালাচ্ছে। ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। দলের মনোনয়নের বিষয়ে শতভাগ এনাম বলেন, নির্বাচিত হলে দেশের সার্বিক উন্নয়নের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করবো। এছাড়া এলাকার জলাবদ্ধতা ও মাদক নিরসনে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করব।
তিনি জানান, ভোটের সমীকরণে স্থানীয় ভোটারের চেয়ে বাইরের ভোটার অর্থাৎ বিভিন্ন জেলা থেকে এসে বাড়ি করে স্থানীয় হয়েছেন যারা এখানে তাদের সংখ্যা বেশি। একজন ভিন্ন জেলার প্রার্থী হিসেবে সকলের সহানুভূতি ও সমর্থনে তিনি এগিয়ে আছেন বলেও জানান তিনি।
অপর দিকে মাতুয়াইল ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগ নেতা হারুন অর রশিদ ইনকিলাবকে বলেন, সাধারণ মানুষকে ভালবেসে এই এলাকায় আমি রাজনীতি করছি। মাতুয়াইলের সদ্য প্রয়াত চেয়ারম্যানের সঙ্গী হিসেবে এলাকার সার্বিক উন্নয়নে তিনি ভূমিকা রেখেছেন। ডেমরা থানায় তিনিই প্রথম বিএনপি আমলে জেল খেটেছেন বলে জানান তিনি। প্রতিদিন গণসংযোগ চালাচ্ছেন, সাধারণ মানুষের দোয়ায় তাদের জন্য কাজ করার অনুপ্রেরণা পাচ্ছি। ইনশাআল্লাহ নির্বাচনে জয়লাভ করবো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন