ইনকিলাব ডেস্ক : সড়কের দেয়ালচিত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুটিনের গভীর চুম্বনের ছবি সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র লিথুয়ানিয়ায় সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। দৃশ্যত এই ছবির মাধ্যমে মস্কোর প্রতি হোয়াইট হাউজের আশাবাদী মনোভাব সম্পর্কে মানুষের উদ্বেগই তুলে ধরা হয়েছে।
লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে দেয়ালে আঁকা এই চিত্রকর্ম ১৯৭৯ সালের একটি বিখ্যাত ছবির কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। সেই ছবিতে দেখা যায়, তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতা লিওনিদ ব্রেঝনেভ সাবেক পূর্ব জার্মান প্রেসিডেন্ট ও ঘনিষ্ঠ মিত্র এরিখ হোনেকারকে চুম্বন করছেন।
¯œায়ুযুদ্ধ যুগের দুই কমিউনিস্ট নেতার মধ্যকার সেই ‘ভ্রাতৃত্বের চুম্বনকে’ বার্লিন প্রাচীরে চিত্রকর্মের মাধ্যমে অমরত্ব প্রদান করা হয়েছিল বলেই তখন ধারণা করা হতো।
নিজের বার্গার শপের বাইরের দেয়ালে এই বিশাল চিত্রকর্মটি স্থাপনকারী ডোমিনিকাস সেসকাউসকাস বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, মনে হচ্ছে আমরা এক নতুন ¯œায়ুযুদ্ধের দিকে ধাবিত হচ্ছি। ট্রাম্পকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, আমেরিকায় হয়তো এমন একজন প্রেসিডেন্ট হতে পারেন যিনি রাশিয়ার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে চান।
আমরা দুই বীরের (পুটিন ও ট্রাম্প ) মধ্যে অনেক মিল দেখতে পাচ্ছি। তিনি বলেন, দুইজনেরই বিশাল অহমিকাবোধ রয়েছে এবং এটা মজাদার হলেও দেখা যাচ্ছে যে তারা বরাবর বেশ ভালোই এগিয়ে যাচ্ছেন।
কয়েক বছর ধরে মস্কো ও ওয়াশিংটনের মধ্যেকার সম্পর্কে যখন টানাপড়েন চলছে, তখন ট্রাম্প রুশ নেতা পুটিনকে সমর্থন করে তাকে ‘একজন শক্তিশালী নেতা’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। বিনিময়ে পুটিনও ‘নিঃসন্দেহে প্রতিভাধর’ বর্ণনা করে এক ‘অসাধারণ’ ব্যক্তিত্ব বলে ট্রাম্পের প্রশংসা করেছেন।
রিপাবলিকান পার্টির সম্ভাব্য মনোনয়নপ্রার্থী ট্রাম্প পশ্চিমা ন্যাটো জোটের যেভাবে সমালোচনা করেছেন তাতে এক সময় লৌহপ্রাচীরের অন্তরালে আবদ্ধ লিথুয়ানিয়া ও কয়েকটি পূর্ব ইউরোপীয় দেশেও উদ্বেগ বাড়ছে।
এক সময় মস্কোর থাবার মধ্যে থাকা ক্ষুদ্র বাল্টিক দেশগুলোর এক গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চয়তা হিসেবে ন্যাটো জোটকে বিবেচনা করা হয়। লিথুয়ানিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিনাস লিনকেভিসিয়াস গত মাসে বলেন, ট্রাম্প ‘ন্যাটো জোট সেকেলে’ বলে যে মন্তব্য করেছেন তাতে এই পশ্চিমা জোট সম্পর্কে রুশ দৃষ্টিভঙ্গিরই প্রতিফলন ঘটেছে।
ভিলনিয়াসে ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স অ্যান্ড পলিটিক্যাল সায়েন্সের এসোসিয়েট প্রফেসর কেসটুটিস গিরনিয়াস বলেন, ট্রাম্প কোন রাখঢাক না করেই পুটিনকে একজন শক্তিশালী নেতা বলে অভিহিত করেছেন এবং ন্যাটোকে সেকেলে জোট ও খুবই ব্যয়বহুল বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাজধানী ভিলনিয়াসের দেয়ালচিত্রের এই চিত্রকর্মে লিথুয়ানিয়ান জনগনের ভয়ভীতি ও উদ্বেগই ফুটে উঠেছে। লিথুয়ানিয়ার অনেকে মনে করে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প ভøাদিমির পুটিনের প্রতি ঝুঁকে পড়তে পারেন এবং তিনি লিথুয়ানিয়ার নিরাপত্তা উদ্বেগের প্রতি উদাসীন হয়ে পড়তে পারেন যা এই ক্ষুদ্্র বাল্টিক প্রজাতন্ত্রের জনগনের কাছে ভয়ের কারণ। সূত্র : নিউজ রিপাবলিক
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন