একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসের ছুটির সাথে সাপ্তাহিক ছুটিতে পর্যটন নগরী কক্সবাজারে এখন পর্যটকদের ঢল নেমেছে। হোটেল মোটেল রেস্টহাউজ গেস্টহাউজ গুলো উপচে পর্যটকরা ঠাঁই নিচ্ছেন বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে। বিশাল এই পর্যটকদের নিরাপত্তায় সতর্ক রয়েছেন ট্যুরিস্টপুলিশ সহ আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বছরের শুরু থেকেই নামীদামী তারকা হোটেল গুলোর রুম বুকিং শেষ হয়ে গেছে অনেক আগেই। মাঝারী হোটেল গুলোসহ সাধারণ হোটেল গুলোতেও এখন কোন রুম খালি নেই। ব্যাপক এই পর্যটক আগমনের সুযোগে কিছু কিছু হোটেল রেস্টুরেন্ট পর্যটকদের নিকট থেকে অতিরিক্ত ভাড়া ও টাকা কামাই করার অভিযোগও কিন্তু কম নয়।
বুধবার বিকেলে কক্সবাজার সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা গেছে বিভিন্ন শ্রেনী পেশা ও বয়সের হাজারো ভ্রমণ পিয়াসু মানুষকে বিচরণ করতে। কয়েকজন এর সাথে কথা বলে জানা গেছে মাতৃভাষা দিবসের ছুটির সাথে সাপ্তাহিক ছুটির দিন গুলো তারা পর্যটন নগরী খ্যাত কক্সবাজারে কাটাতে চান। বিশেষ করে আল্লাহ প্রদত্ত কক্সবাজারের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে তারা কক্সবাজারে ভ্রমণে আসেন।
তাদের মতে বারবার আসলেও কক্সবাজারের সৌন্দর্য যেন ফুরাবার
নয়। বিষেশ করে সৈকতের নির্মল আবহাওয়া, টেকনাফ পর্যন্ত ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভ সড়কের দু'পাশের সাগর পাহাড়ের দৃষ্টি নন্দন দৃশ্য উতালা করে তুলে ভ্রমণ পিয়াসুদের মন। এছাড়াও স্থিতিশীল আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কারণে কক্সবাজার ভ্রমনে তারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন।
ফেডারেশন অফ ট্যুরিজম সার্ভিসেস ওনার অ্যাসোসিয়েশন এর মহাসচিব ডায়মন্ড প্লেসের স্বত্বাধিকারী আবুল কাশেম সিকদার জানান, কক্সবাজারে চার শতাধিক হোটেল মোটেল রেস্টহাউজ গেস্টহাউজে স্বাভাবিক ভাবে আশি হাজার মানুষের থাকার জায়গা রয়েছে। মাতৃভাষা দিবস সহ আগামী কয়েক দিনের ছুটিতে এসব হোটেল মোটেল দেড় লক্ষাধিক মানুষের জন্য বুকড হয়ে গেছে। তিনি আরো জানান, আরো পর্যটক আসছেন এবং তাদেরকে বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে অথবা যানবাহনে রাত্রিযাপন করতে হতে পারে।
পাঁচ তারকা হোটেল সীগালের সিইও ইমরুল হাসান সিদ্দিকী রুমী এ প্রসঙ্গে বলেন, পর্যটন শহর কক্সবাজার সত্যিই দেশী বিদেশী পর্যটকদের জন্য একটি আকর্ষণীয় স্থান। একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসের ছুটিতে ব্যপক পর্যটক আসছেন কক্সবাজারে। তবে ঢাকা-কক্সবাজার যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো ভালো হলে পর্যটকরা কম সময়ে এবং আরো স্বাচ্ছন্দ্যে কক্সাবাজার ভ্রমণ করে যেতে পারতেন।
পাঁচ তারকা হোটেল সায়মান রিসোর্টের ফ্রন্ট অফিস ম্যানেজার সৈয়দ কামরুল হাসান এ ব্যাপারে বলেন, কক্সবাজারে পর্যটক আগমনের স্রোত অনেক বেড়েছে। এখন সিজন অফসিজন বলে কথা নেই, সারা বছরই পর্যটকেরা কক্সবাজার ভ্রমণ করেন। বিশেষ করে হোটেল সায়মান রিসোর্ট পর্যটকদের কাছে খুব আকর্ষণীয় বলেই মনে হয়।
একইভাবে পর্যটকের বিস্তৃতি ঘটেছে ডুলাহাজা সাফারি পার্ক, হিমছড়ি ইনানী, মহেশখালী ও টেকনাফের প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে। টেকনাফ সেন্টমার্টিন পর্যটকবাহী জাহজঘাটে খবর নিয়ে জানাগেছে, কোন জাহাজে সীট খালী নেই। জাহাজের অভাবে পর্যটকরা যেতে পারছেন না সেন্টমার্টিন।
কক্সবাজারে ব্যাপক পর্যটক আগমন প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, কক্সবাজারের সৌন্দর্যের আকর্ষনে ব্যাপকহারে পর্যটকরা কক্সবাজার আসছেন। কক্সবাজারের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি বরাবরই ভাল এবং শান্তিপূর্ণ। আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বিশেষ করে টুরিস্ট পুলিশ টুরিস্ট স্পট গুলোতে সতর্ক নিরাপত্তায় রয়েছে। তাই পর্যটকরা সাচ্ছন্দ্যে কক্সবাজার ভ্রমণ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন