পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, অপরিকল্পিত আবাসনের কারণে আমাদের জীবন ঝুঁকি দিন দিন বাড়ছে। পুরান ঢাকার চকবাজারবাসী আগে থেকে এ বিষয়ে সচেতন হলে এতো বড় ক্ষতি থেকে হয়তো বাঁচা যেতো। ভবিষ্যত নিরাপদ বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন হতে হবে। গত শুক্রবার রাতে সিলেট নগরীর হাউজিং এস্টেট এসোসিয়েশনের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, সম্প্রতিকালে অনেকগুলো আবাসিক এলাকায় ফ্যাক্টরি, কলকারখানা গড়ে উঠে যাদের কাগজপত্র ঠিকমত পাওয়া যায় না। তাছাড়া আমাদের দেশের মানুষের একটা অভ্যাস হচ্ছে, আমরা নিজেকে নিয়ে খুব ব্যস্ত থাকি। অন্যের কথা কখনো চিন্তা করি না। সরকারি রাস্তা ইচ্ছেমত দখল করে যাই।
ঢাকা চকবাজারেরর ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চকবাজারে যে ঘটনা ঘটলো সেখানে একটি ফায়ার ব্রিগেডও ঢোকার কোন রাস্তা ছিল না। এতো সরু রাস্তা। এখানকার অধিবাসীরা আগে থেকে চিন্তা করে যদি ফায়ার ব্রিগেড পৌঁছার মতো রাস্তা করে রাখতেন তাহলে হয়তো এরকম বড় ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়া যেতো।
তিনি বলেন, আমাদের আশেপাশে যতগুলো নালা ও পুকুর ছিল সেগুলো মোটামুটি আমরা দখল ও ভরাট করে নিয়েছি। তার ফলে এ ধরণের দুর্ঘটনা ঘটলে পানির সঙ্কটে ক্ষয়ক্ষতি আরো বাড়িয়ে দিবে বলে মনে হয়। এ জন্য যেগুলো পুকুর এখনও আছে সেগুলোকে রক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে দুঃসময়ে আমাদেরই কাজে লাগে। এসময় সকল নাগরিকের সচেতন হওয়া ও সবার যৌথ উদ্যোগে দেশকে এগিয়ে নেওয়া এবং বিপদমুক্ত রাখার আহবান জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সিলেটবাসীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, রাস্তা দখল ও সরকারি জমি দখল করে অনেকে মানুষের বিপদ ডেকে আনেন। আমরা চাই, সকলে সচেতন হবেন এবং রাস্তা ও জমি দখলের অন্যায় ও ক্ষতিকর কাজ থেকে বিরত থাকবেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নয়নে অত্যন্ত আন্তরিক। এজন্য পাঁচজন মন্ত্রী ও একজন উপদেষ্ঠা সিলেটবাসীকে দিয়েছেন। আমরা সম্মিলিতভাবে যেকোন বড় পরিকল্পনা নিয়ে তাঁর (প্রধানমন্ত্রী) কাছে গেলে তিনি আমাদের সহযোগিতা করবেন।
প্রবাসীদের বাসাবাড়ি দখল হয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এসব সমস্যা সমাধান হওয়া প্রয়োজন। প্রবাসী কল্যাণ সেল গঠন করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো প্রবাসীদের সেবা দিচ্ছে। প্রবাসীদের বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অর্থনীতিতে সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করছি। এজন্য টাস্কফোর্সও গঠন করা হয়েছে।
২০৩০ সালে এসডিজি এবং ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় সরকারের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর মাধ্যমে আমরা চাই দেশে সকল নাগরিক সমান সুবিধা ভোগ করবে। মানুষের মধ্যে বৈষম্য থাকবে না। সেই লক্ষ্য পূরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিক নির্দেশনায় তিনি নিজের মন্ত্রণালয়ে নীতি ‘ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট’ প্রণয়ন করছেন। দেশে বিদেশে সম্পৃক্ততা বাড়ানোর মাধ্যমে এসব নিজেদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন সরকারের লক্ষ্য বলে তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমান।
বক্তব্য রাখেন হাউজিং এস্টেট এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এমএ করিম চৌধুরী, প্রফেসর ডা. এমএ হাফিজ, মতিউস সামাদ চৌধুরী।
এদিকে শনিবার সকালে সিলেট সদর উপজেলার ইসলামপুরে হযরত শাহজালাল (র.) উচ্চ বিদ্যালয়ে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন মন্ত্রী।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন কমিউনিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন