সিলেট অফিস : চিকিৎসায় অবহেলায় শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে দায়েরকৃত মামলায় সিলেটে দুই ডাক্তারসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারি করেছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিক আহমদ এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তারি পরোয়ানাভূক্ত হলেন- মা-মনি ক্লিনিকের চেয়ারম্যান শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. এমএ মতিন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আজির উদ্দিন আহমদ, নির্বাহী পরিচালক ডা. মোদাব্বির হোসেন, পরিচালক সৈয়দ মো. খসরু, মুজিবুল হক, ডা. শফিকুর রহমান ও ব্যবস্থাপক জামাল আহমদ।
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার নিজ বাউরভাগ পূর্ব গ্রামের মৃত হাজী সামছুল হকের ছেলে হবিব আহমদের দায়েরকৃত মামলায় গত ১২ মে মূখ্যমহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো এই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়- হবিব আহমদের তিনমাস বয়সী ভাগ্নে আফনান জ্বরে আক্রান্ত হলে ২০১৩ সালের ২৮ অক্টোবর নগরীর কুমারপাড়াস্থ মা-মনি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ জানান শিশুটির নিউমোনিয়া হয়েছে। কিন্তু ভর্তির পর থেকে কোন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শিশুটিকে দেখতে যাননি। ভর্তির পরদিন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান শিশুটির অবস্থা খারাপ। তখন শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ও ওই ক্লিনিকের চেয়ারম্যান এমএ মতিনকে একবার ডেকে আনার অনুরোধ করেন শিশুর অভিভাবকরা। তখন ক্লিনিক থেকে জানানো হয় ডা. এমএ মতিন এখন আসবেন না। রোগীর স্বজনরা ডা. মতিনের মোবাইল ফোন নাম্বার চাইলে তাও দেয়া হয়নি। ভুল ইনজেকশনে শিশুটির অবস্থা খারাপ হয়েছে অভিযোগ করে ডা. মতিনকে ডেকে আনার জন্য আবারো অনুরোধ করলে ডা. মতিন তাকে আনার জন্য গাড়ি পাঠাতে বলেন। তখন রোগীর স্বজনরা গাড়ি পাঠালে বেলা পৌণে ১টার দিকে ক্লিনিকে আসেন ডা. মতিন। কিন্তু এর আগেই শিশুটি মারা যায়। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলা ও প্রতারণার অভিযোগ এনে ২০১৩ সালের ১১ নভেম্বর আদালতে মামলা দায়ের করেন হবিব আহমদ।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিক আহমদ জানান, মামলা দায়েরের পর কোতোয়ালী থানার এসআই আশরাফুল ইসলাম ২০১৫ সালের ৫ মার্চ আদালতে একটি প্রতিবেদন দাখিল করেন। ওই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজী জানান বাদী পক্ষ। পরে আদালতের নির্দেশে ২০১৫ সালের ১০ নভেম্বর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের সহকারী কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান কেবলমাত্র ডা. এমএ মতিন ও জামাল আহমদকে অভিযুক্ত করে একটি অনুসন্ধান প্রতিবেদন দাখিল করেন। বাদি পক্ষ ওই প্রতিবেদনের উপরও নারাজি আবেদন জানান। তাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে গত ১২ মে মূখ্যমহানগর হাকিম সাইফুজ্জামান হিরো উভয়পক্ষের বক্তব্য শুনে বাদির দরখাস্তে উল্লেখিত ৭ আসামির বিরুদ্ধে দ-বিধির ৩০৪/৩০৪এ/৩৩৬ ও ৪০৩ ধারায় অপরাধ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন