বুধবার ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ২৯ কার্তিক ১৪৩১, ১১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মেট্রোরেলে ঢাবি’র কোনো ক্ষতি হবে না : প্রকল্প পরিচালক

প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : মেট্রোরেলের কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো স্থাপনা বা শিক্ষার পরিবেশের কোনো ক্ষতি হবে না বলে দাবি করেছেন প্রকল্পটির পরিচালক মোফাজ্জেল হোসেন। প্রকল্পটির পরিচালক আরো বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সবার সঙ্গে আলোচনা করে সবার সুবিধার জন্যই মেট্রোরেলের পথ ঠিক করা হয়েছে। এ মেট্রোরেল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে না গেলে বরং আরও বেশি আন্দোলন হতো।
গতকাল বুধবার প্রবাসী কল্যাণ ভবনে অবস্থিত ঢাকা মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বা মেট্রোরেল প্রকল্পের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁরা এ দাবি করেন। এ নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাংশের বিরোধিতার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, প্রাথমিকভাবে শাহবাগ থেকে রোকেয়া হল, শহীদ মিনার, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও বুয়েট হয়ে সায়েদাবাদে নেওয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণেই ওই প্রস্তাব বাতিল করা হয়। পরে ২০১১ সালের ৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সভাপতিত্বে যে বৈঠক হয় সেখানেই নতুন রুট ঠিক করা হয়।
মোফাজ্জেল হোসেন আরও বলেন, দোয়েল চত্বরে স্টেশন হবে বলে যে কথা হচ্ছে সেটি ঠিক নয়। সেখানে কোনো স্টেশন হচ্ছে না। টিএসসির শেষে আণবিক শক্তি কমিশনের শুরু থেকে বাংলা একাডেমি পর্যন্ত এলাকায় স্টেশন হবে।
শাহবাগ থেকে মৎস্য ভবন এলাকা দিয়ে মেট্রোরেল গেলে সমস্যা কী- জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ২০১০-২০১১ সালে যখন মেট্রোরেলের পথ চূড়ান্ত করা হয় তখনো এই কথা উঠেছিল। এটি করতে হলে বারডেম হাসপাতাল ভাঙতে হবে। সবাই যদি তখন এর পক্ষে থাকতেন তাহলে সেটি সম্ভব ছিল। কিন্তু কেউই সেটি মেনে নেননি। ট্রেনের মোড় ঘোরার জন্য ২০০ মিটার রেডিয়াস দরকার। শাহবাগ দিয়ে মৎস্য ভবনের দিকে গেলে সেটি সম্ভব নয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর দিয়ে এই রুট গেলে ক্যাম্পাসের শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট হবে কী না জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠাগার, টিএসসি ও দোয়েল চত্বর এলাকায় এখন শব্দমাত্রা যথাক্রমে ৬৭ দশমিক ৫, ৭০ ও ৬৮ দশমিক ২ ডেসিবেল। মেট্রোরেল চালু হলে সৃষ্ট শব্দমাত্রা হবে ৬১ দশমিক ৯, ৬১ দশমিক এক এবং ৫৬ দশমিক ৫ ডেসিবেল, যা বিদ্যমান শব্দমাত্রার চেয়ে কম। এরপরেও মেট্রোরেলের কারণে যেন সমস্যা না হয় সে কারণে সংসদ ভবন ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শব্দ ও কম্পন প্রতিরোধ প্রযুক্তি থাকবে। এ ছাড়া মেট্রোরেল ট্রাকের দুইপাশে যথেষ্ট উচ্চতার শব্দ প্রতিরোধক দেয়াল থাকবে। ফলে কোনো সমস্যা হবে না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতর গিয়ে গেলে নান্দনিকতা নষ্ট হবে কী না জানতে চাইলে মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, আমরা এই প্রকল্পের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের অধিকাংশই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। নান্দনিকতার বিচারটা একেক জনের কাছে একেকরকম। তবে মেট্রোরেলের স্টেশন রাজু ভাস্কর্য থেকে বেশ দূরে। আর রাজু ভাস্কর্য একটি আধুনিক সময়ের স্থাপনা। এই স্থাপনাটির কোনো ক্ষতি হবে না। বরং ঢাকা গেট, তিন নেতার মাজার -এসব পুরোনো স্থাপনার ঝুঁকি ছিল। কিন্তু এগুলোও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। এ ছাড়া একেকটা পিলার থেকে আরেকটির দূরত্ব একশো ফিট। কাজেই মঙ্গল শোভাযাত্রা বা কোনো সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের কোনো সমস্যা হবে না।
প্রকল্প পরিচালক জানান, মেট্রোরেলের আটটি প্যাকেজের মধ্যে ছয়টি প্যাকেজের প্রাথমিক কাজ হয়ে গেছে। এগুলোর এখন দরপত্র হবে। এখন পেছনে ফেরার আর কোন অবকাশ নেই। আর ঢাকার যানজট নিয়ন্ত্রণে এর বিকল্প নেই।
প্রকল্প পরিচালক ছাড়াও অনুষ্ঠানে মেট্রোরেল নিয়ে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাব দেন মেট্রোরেলের পরামর্শক নুরুল ইসলাম ও কাইহারা সান। এ ছাড়া পরিচালক (অর্থ ও প্রশাসন) মোহাম্মদ নুরুল আমিন, মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) হারুন-অর-রশীদ ও ব্যবস্থাপক (আইন ও জনসংযোগ) মিজানুল ইসলাম এতে বক্তব্য দেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন