পূর্ব পাকিস্তানে চলছিল একটানা অসহযোগ আন্দোলন। এদিন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দীন আহমদ এক বিবৃতিতে জনগণের প্রতি যে কোনো ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করে দীর্ঘস্থায়ী সংগ্রাম চালিয়ে নেয়ার আহŸান জানান। এদিন বিকেলে ঢাকায় আসেন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান। তার সাথে ছিলেন কয়েকজন জেনারেল।
তিনি ঢাকায় আসার পূর্ব পর্যন্ত তার আগমনের খবর জানানো হয়নি। অর্থাৎ কার্যত এ সফরের কথা গোপন রাখা হয়েছিল। তবে তিনি যে সঙ্কট নিরসনের লক্ষ্যে শেখ মুজিবের সাথে আলোচনা করতে ঢাকায় আসছেন সে বিষয়ে আগে থেকেই প্রচারণা চালানো হচ্ছিল। এদিন সৈন্যদের গুলিবর্ষণের প্রতিবাদে সর্বত্র উড়ছিল কালো পতাকা। তোপখানা রোডে স্বাধীনতা আন্দোলনের সপক্ষে অনুষ্ঠিত হয় নারী সমাবেশ। এতে সভাপতিত্ব করেন বেগম সুফিয়া কামাল। নাট্য শিল্পীরা অসহযোগ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে রাজপথে মিছিল করেন। পরে অনুষ্ঠিত সভায় শিল্পীরাও বাংলার স্বাধীনতার জন্য যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন তারা।
আন্দোলনের প্রতি নিজেদের সমর্থন প্রকাশ করে পূর্ব পাকিস্তান চিকিৎসা সমিতি। মিছিল করে ছাত্র ইউনিয়ন, নৌ ও ডক শ্রমিক ইউনিয়ন এবং পাটকল শ্রমিক-কর্মচারীরা। বেতার ও টেলিভিশনের শিল্পীরা সন্ধ্যায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন। এভাবে জাতীয় জীবনের সর্বস্তরে ছড়িয়ে যাচ্ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের শিকড়।
বিদ্যমান পরিস্থিতিতে নিরাপত্তা জনিত কারণে ২৬৫ জন বিদেশী নাগরিক ঢাকা ত্যাগ করেন। তাদের মধ্যে জাতিসংঘের ৪৫ জন স্টাফও ছিলেন। এদিকে প্রতিরক্ষা বিভাগের বেসামরিক চাকরিরতদের প্রতি সামরিক ফরমান জারির প্রতিবাদে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বিকালে বায়তুল মোকাররম এলাকায় এক সভার আয়োজন করে।
উল্লেখ্য, ১৫ মার্চের মধ্যে এসব চাকরিরতদের কেউই কাজে যোগ দেননি বলে জানা যায়। বরং তারা এ আদেশের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেন ও নাখালপাড়ায় সমাবেশ করে আন্দোলনের প্রতি তাদের সমর্থন জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন