বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

গ্যাস সঙ্কট কাটাবার চেষ্টা করে যাচ্ছি -প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমারা সরকার গঠনের পরে গ্যাসের অনেকগুলো নতুন কূপ খনন করেছি। বাপেক্সকে শক্তিশালী করেছি। গ্যাস অনুসন্ধানও চলছে। কিন্তু তারপরও সঙ্কট আছে, এই সঙ্কট দূর করতে আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। রান্নার কাজে ব্যবহারের জন্য এলপিজি গ্যাস, সিলিন্ডারে ট্যাক্স তুলে দেওয়া হয়েছে। এখাতে বিনিয়োগকারীরা যাতে এগিয়ে আসে আমরা তারও ব্যবস্থা নিচ্ছি। সঙ্কট কাটাবার চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি।
গতকাল বিকেলে জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে চট্টগ্রামের সংসদ সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ সব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শীতকালে গ্যাসের ব্যবহারটাও একটু বেড়ে যায়। সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ব্লক চিহ্নিত করেছি। টেন্ডার দেওয়া হয়েছে। আমরা কিন্তু বসে নাই। অতীতে যারা ক্ষমতায় ছিলো, তারা কিন্তু এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয় নি। গ্যাসের সমস্যা সমাধানে যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়ার পরও কিছু সমস্যা আছে। আশা করি, এলএমজি টার্মিনাল হয়ে গেলে এই সমস্যা অনেকটাই দূর হবে।
তিনি বলেন, সাধারণত শীতকালে গ্যাস অনেকটা জমে যায়, ফ্লোটাও কমে যায়। সে জন্য শীতকালে গ্যাসের সমস্যাটা দেখা যায়। গ্যাস একটা প্রাকৃতিক সম্পদ এর সীমাবদ্ধতা আছে। আমরা কিন্তু সরকারে আসার পর গ্যাসের উৎপাদন অনেক বৃদ্ধি করেছি। তারপরও যেহেতু দেশে উন্নয়ন হচ্ছে তাই গ্যাসের চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর বিকল্প হিসেবে আমরা এলএমজি আমদানি করার ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতোমধ্যে এলএমজির টার্মিনাল নির্মাণ করা হচ্ছে। এটা নির্মাণ করার পর বাইরে থেকে যদি আমরা গ্যাস আনতে পারি, হয়তো বা আমরা এই সমস্যার সমাধান করতে পারবো।
পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে ষড়যন্ত্রকারীদের বিচারের ভার জনগণের হাতে
পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন কি না মুন্সিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি সাগুফতা ইয়াসমিনের এক সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, কেউ যদি ব্যক্তি স্বার্থের জন্য দেশের সর্বনাশ করতে চায়, আর দেশের মানুষের স্বার্থ না দেখে, তাদের প্রতি করুণা করা ছাড়া আর কিছুই নাই। আমাকে অনেক সময় অনেক থ্রেটও করা হয়েছিলো। বিশেষ এক ব্যক্তি তার ব্যাপারে। একটা এমডির পদ না থাকলে পদ্মা সেতুর টাকা বন্ধ করা হবে-এটা কিন্তু সরাসরি বলাও হয়েছে। এ ধরণের বহু কথাই আমাকে শুনতে হয়েছে। সেগুলো আমি কিছু বলতে চাই না। মানুষের মাঝে যদি দেশপ্রেম না থাকে, জনগণের প্রতি তাদের যদি কোন দায়িত্ববোধ না থাকে সম্পূর্ণ ব্যক্তি স্বার্থেই অন্ধ থাকে তার বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে তা জনগণই বিচার করবে। আমি বিচারের ভার জনগণের হাতে ছেড়ে দিলাম।
ময়মনসিংহ-৮ আসনের ফখরুল ইমামের এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সততাই শক্তি, সততাই সাহস। আমার জীবনে রাজনীতির একটাই লক্ষ্য যে মানুষের জন্য বঙ্গবন্ধু সারা জীবন সংগ্রাম করেছে। এই মানুষের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের জন্য পদক্ষেপ নেব। ছোট বেলা থেকে আমরা যা দেখেছি সন্তান হিসেবে তা আমাদের পালণীয়। আমি মনে করি, জনগণের জন্য কিছু করার সুযোগ। নিজে কি পেলাম সেটা কখন দেখি না। আমরা কখনও এটা চিন্তা করি না, ছেলে-মেয়েদের জন্য কি রেখে গেলাম। জনগণের চিন্তা করি বলেই জনগণই আমার শক্তি। এদেশের মানুষের শক্তিতেই আমার শক্তি। তাদের উপর আমার আস্থা আছে।
ঢাকা-৬ আসনের এমপি কাজী ফিরোজ রশিদের সম্পূরক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, পদ্মা সেতুতে টাকা বাড়তে পারে আবার টাকা বেচেঁও যেতে পারে।
ভোলা-২ আসনের এমপি আলী আজমের লিখিত এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বর্তমান সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার সফলতায় ২০১৫ সালে মোট ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮১ জন বাংলাদেশী কর্মী গমন করেছে। বিগত জোট সরকারের অপনীতির কারণে বাংলাদেশের শ্রম বাজার সংকুচিত হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টায় মালয়েশিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের সাথে দ্বিপাক্ষিক চুক্তিসহ বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ফলে প্রতিবছর বাংলাদেশ থেকে কর্মী প্রেরণের সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিগত জোট সরকারের আমলে বিশ্বের মাত্র ৯৭টি দেশে কর্মী প্রেরণ করা হত। বতর্মান সরকারের আমলে নতুন আরো ৬৩টি দেশে কর্মী প্রেরণসহ বর্তমানে এই সংখ্যা ১৬০টি দেশে উন্নীত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ২০১৩ সালে মোট ৪ লাখ ৯হাজার ২৫৩জন, ২০১৪ সালে মোট ৪ লাখ ২৫ হাজার ৬৮৪জন এবং ২০১৫ সালে মোট ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৮১ জন বাংলাদেশী কর্মী গমন করেছে। বিদেশে অদক্ষ শ্রমিকের তুলনায় দক্ষ শ্রমিকের চাহিদা বেশী। এক্ষেত্রে বিদেশগামী শ্রমিকদের দক্ষতার উপর গুরুত্ব দিয়ে বর্তমানে দেশে ৬৫টি টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার ও ৬টি মেরিন টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে দক্ষ শ্রমিক তৈরি করা হচ্ছে। পাশাপাশি উপজেলা পর্যায়ে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন শ্রম বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে বিদেশস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে বিদ্যমান শ্রম উইং’এর সংখ্যা ১৬ থেকে ২৮’এ উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়াও আমাদের সফল কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে সউদী আরব এবং মালয়েশিয়ায় অবৈধ ১০ লাখ ৬৭ হাজার ৮০৩ জন অভিবাসী বাংলাদেশী শ্রমিকের বৈধতা প্রদানের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে সউদী আরব অধিক সংখ্যক নারী কর্মীর পাশাপাশি তাদের সমসংখ্যক নিকট আত্মীয় পুরুষ কর্মী নিতে সম্মত হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন