শনিবার, ১৮ মে ২০২৪, ০৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৯ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

এবার খুলনায় দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ বেজার

বিনিয়োগ রপ্তানি আয় বৃদ্ধি কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্য

প্রকাশের সময় : ১৯ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : খুলনায় দু’টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ-বেজা। এরই মধ্যে বেজার প্রাথমিক বাছাই কমিটিতে অনুমোদন পেয়েছে স্থান দু’টি। প্রস্তাবিত জমি বেজার অনুকূলে হস্তান্তরের জন্য শিগগিরই চিঠি দেয়া হবে খুলনা জেলা প্রশাসককে।
খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার তেতুলতলা মৌজা এবং তেরখাদা উপজেলার কোলা মৌজার যথাক্রমে ৫৯৩ ও ৫০৯ একর জমিতে তৈরি হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল। বেশ কিছুদিন আগে বেজার কাছে এই প্রস্তাব পাঠায় খুলনা জেলা প্রশাসন। যা বেজার প্রাথমিক বাছাই কমিটিতে অনুমোদন পেয়েছে। প্রস্তাবিত জমি ভৌগোলিকভাবে অর্থনৈতিক অঞ্চলের জন্য ইতিবাচক বলে মনে হওয়ায় বেজার অনুকূলে হস্তান্তরের জন্য চিঠি দেয়া হবে জেলা প্রশাসনকে। প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত অনুমোদনের পর শুরু হবে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার কাজ। এদিকে অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা হলে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগে গড়ে উঠবে শিল্প কারখানা। ফলে মানুষের কর্মসংস্থান বাড়বে বলে মনে করছেন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা। অর্থনৈতিক অঞ্চল দু’টির রাস্তা, বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহের কাজ করবে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা।
সূত্র মতে, বিনিয়োগ ও রপ্তানি আয় বৃদ্ধি এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে অর্থনৈতিক অঞ্চল একটি দেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। অভ্যন্তরীণ ও বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে সরকারি, বেসরকারি, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারি (পিপিপি) ও বিদেশী- এই চার ধরনের অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন নিয়ে কাজ করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করা লক্ষ্য। ইতোমধ্যে ৫৯টি অঞ্চলের প্রাথমিক অনুমোদনও মিলেছে। আর অনুমোদিত অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সম্প্রতি ১০টির উন্নয়ন কর্মকা-ের উদ্বোধন করা হয়েছে।
এ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে যাবে বলেও মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। বছরে অতিরিক্ত আরও ৪ হাজার কোটি ডলার রফতানি আয়ের সুযোগ তৈরি হবে। এর মাধ্যমে একদিকে যেমন দেশের অর্থনীতি গতি পাবে, তেমনি বেকার সমস্যা থেকেও মুক্ত হবে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বেজা পরিচালনা পরিষদের চেয়ারম্যান হওয়ায় এবং অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে তার আন্তরিকতা থাকায় নির্ধারিত সময়ের আগেই লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন তারা। যদিও অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠার প্রধান অন্তরায় হিসাবে বিশেষজ্ঞরা দুর্বল অবকাঠামো এবং জমি অধিগ্রহণকে উল্লেখ করেছেন। তাদের মতে, বাংলাদেশে অর্থনৈতিক জোন প্রতিষ্ঠায় প্রধান সমস্যা হয়ে দাঁড়াবে জ্বালানি সংকট। তবে তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে। একই সঙ্গে সরকারের দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকতে হবে। বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটির নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী ইনকিলাবকে বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে সরকারের লক্ষ্য ১০০টি অর্থনৈতিক জোন তৈরি করা। ইতোমধ্যে ৫৯টির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাকিগুলোর বিষয়ে কাজ চলছে। বিনিয়োগ আকর্ষণে সব ধরনের প্রচেষ্টাও চলছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। বেজা নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, অর্থনৈতিক এলাকাগুলো প্রতিষ্ঠিত হলে একদিকে যেমন দেশের অর্থনীতি গতি পাবে, তেমনি বেকার সমস্যা থেকেও মুক্ত হবে দেশ। এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, দেশব্যাপী অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগে সত্যিই অনুপ্রাণিত বোধ করছি। এর মাধ্যমেই বাংলাদেশের চেহারা পাল্টে দেয়া সম্ভব হবে। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত চলতি অর্থবছরের বাজেট বক্তৃতায় বলেছিলেন, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল থেকে রপ্তানি আয় হবে চার হাজার কোটি ডলার। আর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে এক কোটি মানুষের।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন