রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

এবার নরসিংদীতে ডিবি হেফাজতে যুবকের মৃত্যু

প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার নরসিংদী থেকে : ডিবি পরিচয়ে সাদা পোষাকে বাড়ি থেকে ধরে নেয়ার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই লাশ হয়ে দ্বীন ইসলাম (২৫) নামে এক যুবক। মা সাবিয়া বেগম বলেছে, মোটা অংকের টাকা না দেয়ায় ডিবি পুলিশ তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। গতকাল নরসিংদী সদরের ভেলানগর গ্রামে এই বিচার বহির্ভূত হত্যাকা-টি সংঘটিত হয়েছে।
সাবিয়া বেগম জানিয়েছেন, সে ব্রাহ্মন্দী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে টিফিন সরবরাহ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। প্রতিদিন সেই টিফিন স্কুলে পৌঁছে দেয় তার ছেলে দ্বীন ইসলাম। গতকাল (বৃহস্পতিবার) ভোর ৫ টায় সাদা পোষাকধারী একদল সশস্ত্র লোক বাড়ি গিয়ে নিজেদেরকে ডিবি পুলিশ বলে পরিচয় দেয়। তারা সাবিয়া বেগমকে জানায় দ্বীন ইসলামের সাথে তাদের কিছু কথা আছে। তাকে ডেকে দেয়ার জন্য। ডিবি পুলিশের কথা মত মায়ের ডাকে দরজা খোলার সাথে সাথে ডিবি পুলিশ তাকে দরজায় গিয়ে ধরে হাতকড়া পরিয়ে নিয়ে যায়। এসময় দ্বীন ইসলামের মা সাবিয়া বেগম পুলিশকে জিজ্ঞাস করে কি কারণে তাকে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যুত্তরে ডিবি পুলিশ জানায় ৫ লাখ টাকা নিয়ে এসো। সব জানতে পারবে। বাড়াবাড়ি করলে তোকে গুলি করে হত্যা করব। এতে ভয়ে সাবিয়া চুপ মেরে গেলে পুলিশ তাকে নিয়ে চলে যায়। সকাল ১০ টায় মা সাবিয়া ডিবি অফিসে গিয়ে পুত্র দ্বীন ইসলামের সন্ধান করে। ডিবি পুলিশ জানায় সে এখানে নেই। এ অবস্থায় মা সাবিয়া চলে যায় ভেলানগর বাজার কমিটির সভাপতি কামাল মিয়ার নিকট। সেখানে মা সাবিয়া কামালকে ঘটনা জানান সে জানায় তোমার ছেলে বেঁচে থাকলে খোঁজে পাওয়া যাবে। এর কিছুক্ষণ পর সাবিয়ার নিকট লোক মারফত খবর পৌঁছে যে দ্বীন ইসলামকে ডিবি পুলিশ মেরে ফেলেছে। এই খবর পেয়ে মা সাবিয়া দৌঁড়ে জেলা হাসপাতালে গিয়ে পুত্রের লাশ দেখতে পায়। দ্বীন ইসলামের হাটুর নিচে আঘাতের চিহ্ন ছিল। এই ঘটনা চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে শত শত লোক হাসপাতালে ভীড় জমায়। এসময় হাসপাতালে লাশ পরিদর্শনে যান নরসিংদী পুলিশ সুপার আমেনা বেগম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) হাসিবুল আলমসহ জেলা ও থানা পর্যায়ে পুলিশ কর্মকর্তারা। সাংবাদিকদের ব্রিফিং কালে পুলিশ সুপার আমেনা বেগম বলেন, নিহত দ্বীন ইসলাম একজন বড় ধরনের অপরাধী। তার বিরুদ্ধে হত্যা, ডাকাতি ও ছিনতাইসহ কয়েকটি মামলা রয়েছে। সাম্প্রতিক কয়েকটি অপরাধের ঘটনায় তার জড়িত থাকার গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে বৃহস্পতিবার ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে পালিয়ে যাবার চেষ্টাকালে স্থানীয় লোকজন তাকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের নিকট সোপর্দ করে। পরে পুলিশ তাকে চিকিৎসার জন্য জেলা হাসপাতালে প্রেরণ করে। সেখানে সে মারা যায়। এব্যাপারে জেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মিজানুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানা, দ্বীন ইসলামের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্তের পর বলা যাবে। তবে প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী তার পায়ে ফ্রেকচার এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন