রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

আজ পবিত্র শবে মেরাজ

মো. আব্দুর রহিম | প্রকাশের সময় : ৩ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

আজ রাত এক অলৌকিক অসামান্য মহাপুণ্যময় রজনী। এ রজনী মহাপবিত্র মহিমান্বিত লাইলাতুল মেরাজের। এ রাতে আমাদের প্রিয়নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত জিবরাঈল আলাহিস্ সালামের সাথে পবিত্র কাবা হতে পবিত্র বায়তুল মুকাদ্দাস হয়ে সপ্তাকাশের উপর সিদরাতুল মুনতাহা হয়ে সত্তর হাজার নূরের পর্দা পেরিয়ে আরশে আজিমে মহান আল্লাহ তায়ালার দিদার লাভ করেন এবং পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে দুনিয়াতে প্রত্যাবর্তন করেন। তিনি অবলোকন করেন সৃষ্টি জগতের সকল কিছুর অপার রহস্য। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জীবনের সবচেয়ে আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা ‘মেরাজ’।
মেরাজ ইসলামের ইতিহাসে এমনকি পুরো নবুওয়াতের ইতিহাসেও এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। কারণ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ও রাসূল হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্যকোনো নবী এই পরম সৌভাগ্য লাভের সুযোগ পাননি। এ মেরাজ রজনীতেই মানবজাতির শ্রেষ্ঠ ইবাদত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয়। এ রাত ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদায় মুসলিম জাহানের সাথে এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরাও এ রাতে কোরআনখানি, নফল সালাত, জিকির-আসকার, ওয়াজ মাহফিল, দোয়া-দরুদ পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতের মাধ্যমে পবিত্র শবে মেরাজ পালন করবেন।
মেরাজ শব্দটি আরবি, অর্থ ঊর্ধ্বারোহণ। এ মেরাজ অর্থ দাঁড়ায়- সপ্তম আসমান, সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন এবং ধনুক কিংবা তার চেয়ে কম দূরত্বে আল্লাহ তাআলার দর্শন লাভ। এ ছিল আল্লাহ তা‘আলার মহান কুদরত, অলৌকিক নিদর্শন, নবুওয়াতের সত্যতার পক্ষে এক বিরাট আলামত। জ্ঞানীদের জন্য উপদেশ, মোমিনদের জন্য প্রমাণ, হেদায়েত, নেয়ামত, রহমত, মহান আল্লাহর একান্ত সান্নিধ্যে হাজির হওয়া, ঊর্ধ্বালোক সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান অর্জন, অদৃশ্য ভাগ্য সম্পর্কে বিশেষ জ্ঞান লাভ, ইহকাল ও পরকাল সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন, স্বচক্ষে জান্নাত-জাহান্নাম অবলোকন, নভোমন্ডল পরিভ্রমণ এবং সর্বোপরি এটিকে একটি অনন্য মুজিযা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।
এ রাত খুবই ফজিলতের রাত। অতএব, এ রাতে যতদূর সম্ভব জেগে নফল নামাজ, জিকির-আযকার, কুরআন তিলওয়াত ও দরুদ শরীফ ইত্যাদি পাঠ করা এবং নফল নিয়তে দিবাভাগে রোজা রাখা ভালো, এগুলো ব্যতীত এই রাত্রে অন্যকোনো প্রকার শরীয়তবিরোধী রসম-রেওয়াজে লিপ্ত হওয়া যাবে না এবং এ রাতকে ইবাদতের জন্য নির্দিষ্ট করা।
এ উপলক্ষে আজ বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন ও খানকায় বিশেষ অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশন ছাড়াও আরো সংগঠন আজ আলোচনা সভার আয়োজন করেছে।
বিশ্ব সুন্নী আন্দোলনের উদ্যোগে আজ ঢাকা ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে বেলা ১১টা থেকে মেরাজ শরীফ সমাবেশ ও সালাতু সালাম মাহফিল এবং শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। বিশ্ব সুন্নী আন্দোলন ও বিশ্ব ইনসানিয়াত বিপ্লবের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা ইমাম হায়াতের সভাপতিত্বে এতে প্রধান মেহমান হিসেবে থাকবেন তফসিরুল কোরআন ও বহু গ্রন্থের প্রণেতা আল্লামা সৈয়দ সাইফুর রহমান নিজামী শাহ। এতে বিশেষ মেহমান হিসেবে অংশ গ্রহণ করবেন ডক্টর আল্লামা আতাউর রহমান মিয়াজী (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক আল্লামা ড. আব্দুল কাদির (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক আল্লামা ড. নুরুন্নবী (এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, ঢাকা) প্রমুখ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (6)
Mamun Patwary ৩ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৪৮ এএম says : 0
এই রাতে মহান আল্লাহ আমাদেরকে নামাজ উপহার দেন,,, তাঁর রাসূলের মাধ্যমে,,,, তাই এই রাতের গুরুত্ব ও মর্যাদা অনেক বেশি
Total Reply(0)
Bappy Hossen ৩ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৪৯ এএম says : 0
মুসলমানের জন্য অনেক বড় উপহার।উওম একটি রাত।
Total Reply(0)
Khan Ekthiar ৩ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৪৯ এএম says : 0
মিরাজ ইসলামের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এজন্য শবে মেরাজ এক গুরুত্ববহ রাত। এ রাত স্মরণিয়, বরণিয়, উদযাপনীয়। এ রাতে মিরাজের আলোচনা নিঃসন্দেহে মুসলমানদের ঈমান তাজা করবে। আর বিরুদ্ধবাদিরা তখনো মিরাজকে অস্বীকার করেছে, এখনো তাদের দোসররা এর স্মরণের বিরোধিতা করে যাচ্ছে। কেয়ামত পর্যন্ত এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোই মুমিন ও মুনাফেকের মধ্যে পার্থক্য করে দেবে। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সবাইকে হেদায়েত দিন।
Total Reply(0)
মনজুর হোসেন খান ৩ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৫৪ এএম says : 0
আখেরী নবী মুহাম্মদ (স.) কে আল্লাহ তা’আলা অন্যান্য নবীদের তুলনায় অনেকগুলো বিষয়ে অতিরিক্ত মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্য দান করেছেন। তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মি’রাজ।
Total Reply(0)
Omar Farouque ৩ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৫৪ এএম says : 0
মুসলিম উম্মাহ যখন এ মেরাজের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে এবং মেরাজের শ্রেষ্ঠ উপহার নামাজ বাস্তবায়ন করবে; নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর ভয় এবং মহব্বত বাস্তবায়ন করবে তখনই মানুষের ইহকাল ও পরকাল হবে সার্থক। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে মেরাজের শিক্ষার মাধ্যমে নিজেদের উন্নত নৈতিক চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তোলার তাওফিক দান করুন। পরকালের সফলতা দান করুন। আমিন।
Total Reply(0)
Muhammad Jalal Ahmed ৩ এপ্রিল, ২০১৯, ২:৫৫ এএম says : 0
শুধু হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর জীবনেই নয় গোটা পৃথিবীর ইতিহাসে মিরাজের ঘটনা একটি বিস্ময়কর ঘটনা। মিরাজের মাধ্যমে হজরত মুহাম্মদ (সা.)কে এই পার্থিব জীবনে মানবেতিহাসের সর্বোচ্চ সম্মান দেয়া হয়েছে। যে সম্মান এর আগে ও পরে অন্য কাউকেই দেয়া হয়নি। কিয়ামতের ময়দানে শাফায়াতের সুযোগদানের মাধ্যমে তাকে আবার সর্বোচ্চ সম্মানে সম্মানিত করা হবে। কোনো নবী-রাসূল বা নিকটতর ফেরেশতাই যে উচ্চতায় পৌঁছতে পারেননি, মিরাজে হজরত মুহাম্মদ (সা.) সেই অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে ছিলেন। আল্লাহতায়ালার দিদার লাভ করেছিলেন।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন