আল মাহমুদ ও সফিউদ্দীন সরদার : আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশ ইন্টেলেকচুয়াল মুভমেন্ট (বিআইএম) এর উদ্যোগে “আল মাহমুদ ও সফিউদ্দীন সরদার : আমাদের আত্মপরিচয়ের প্রতীক” শীর্ষক আলোচনা সভাটি ৩১মার্চ রবিবার, সন্ধায় পল্টনস্থ ইনসাফ কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাসিক মদীনা সম্পাদক জনাব আহমদ বদরুদ্দিন খান। বিশেষ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক আলোকিত বাংলাদেশ এর সহসম্পাদক, বিশিষ্ট লেখক, গবেষক, তরুণ আলেম জনাব আলী হাসান তৈয়ব। ইনসাফ ২৪ ডটকম এর সম্পাদক সাইয়েদ মাহফুজ খন্দকার। সিলেট রিপোর্ট ২৪ডটকম এর সম্পাদক, বিশিষ্ট সংগঠক মাওলানা রুহুল আমীন নগরী।
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইন্টেলেকচুয়াল মুভমেন্ট এর সম্মানিত সভাপতি, জনাব মাওলানা ওবায়দুর রহমান খান নদভী। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন বিআইএম এর সম্পাদক সৈয়দ শামছুল হুদা।
প্রধান মেহমান তার বক্তব্যে বলেন, যারা আমাদের ঐতিহ্যের শেকড়, তারা ধীরে ধীরে আমাদের থেকে অনেকেই চলে যাচ্ছে, সর্বশেষ চলে যাওয়ার সেই মিছিলে যোগ দিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান কবি, আমাদের যারা আত্মপরিচয়ের প্রতীকতুল্য, কবি আল মাহমুদ ও শেকড় সন্ধানী লেখক জনাব সফিউদ্দীন সরদার। বিশেষ করে জনাব সফিউদ্দীন সরদারকে যেভাবে তাঁর মরহুম পিতা, বাংলা সাহিত্যের অন্যতম মহিরুহ, মাওলানা মহিউদ্দীন খান রহ. নওগাঁর এর সাহিত্য সভা থেকে জাতীয় পর্যায়ে তুলে নিয়ে আসেন তা একটি বিরল ঘটনা। মাসিক মদীনা এবং মুসলিম জাহানের মাধ্যমে জাতি জানতে পারে একজন শক্তিমান লেখকের কথা। বাংলার আলেম সমাজ যখন ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করেন, তখন কেবলই রাসুল সা. এর জীবনী, খুলাফায়ে রাশেদীন থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ বাগদাদের ইতিহাস পর্যন্ত আসেন। কিন্তু বিশাল ভারতে ৭শ’ বছরের মুসলিম শাসন সম্পর্কে ইতিহাসের তেমন কিছুই আলোচনায় আনতে পারেননি। কিন্তু একজন সফিউদ্দীন সরদার ভারতীয় মুসলিম শাসকদের ইতিহাস খুব চমৎকারভাবে তার লিখনীর মাধ্যমে জাতির সামনে উপস্থাপন করতে পেরেছেন।
আল মাহমুদ এবং সফিউদ্দীন সরদার সম্পর্কে অনেক কথা অনেকের মধ্যে সঞ্চিত আছে। এগুলোকে যথাশীঘ্র সম্ভব স্মারক হিসেবে সংরক্ষণের জন্য তিনি জোর তাগাদা দেন।
আলোচনায় জনাব আলী হাসান তৈয়ব বলেন, আত্মপরিচয়ের প্রতীকগুলোকে দাবিয়ে রাখা যায় না। কিন্তু কেউ কেউ দাবিয়ে রাখতে চেষ্টা করেছে। আল মাহমুদ এবং সফিউদ্দীন সরদার তেমনই দুজন ব্যক্তি, যাদেরকে দাবিয়ে রাখতে অনেক চেষ্টা করা হয়েছে, কিন্তু তাদের সাহিত্য প্রতিভা, লিখনী শক্তিকে কেউ দাবিয়ে রাখতে পারেনি। সফিউদ্দীন সরদারের সাথে স্মৃতির কথা স্মরণ করতে গিয়ে আলী হাসান বলেন, একবার তাঁর নওগাঁস্থ বাসায় একটি প্রতিনিধি দল সাক্ষাতের জন্য যায়, তখন তাকে প্রশ্ন করা হয়, হুমায়ন আহমদ’রা কত স্বীকৃতি পেলো, পুরস্কার পেলো, আপনি এত লিখলেন, কিন্তু কোন স্বীকৃতি বা পুরস্কার পেলেন না, এতে কি কোন কষ্ট অনুভব হয় না? তখন উত্তরে যা বলেছিলেন, তাতে প্রাণটা ভরে গিয়েছিল। তিনি বলেছিলেন, আমি যা কিছু করেছি, সবকিছু আল্লাহর জন্য করেছি, সুতরাং কুরআন যেমন মুসলমানদের স্থায়ী সম্পদ, তেমনি আমার এসব রচনা স্থায়ী হিসেবেই থেকে যাবে। এটাই বড় অর্জন।মানুষ এসব পড়তে নিরুৎসাহিত করলেও ইতিহাসের প্রয়োজনে এসব লিখনী একদিন পড়বে, স্মরণ করবে।
সভায় উপস্থিত ছিলেন ইনসাফ২৪ডটকম এর সম্মানিত উপদেষ্টা সম্পাদক মুসা বিন ইজহার, প্রথমআলোর ধর্ম পাতার নিয়মিত লেখক শাইখ মুহাম্মদ উসমান গনী, আরবী ভাষা ও সাহিত্য কেন্দ্রের সম্মানিত পরিচালক, মাওলানা মহিউদ্দীন ফারুকী, সাওতুল হেরা পত্রিকার সম্পাদক মাওলানা শুয়াইব আহমদ, ডেইলী সান এর নিয়মিত কলামিষ্ট, খতীব ও লেখক মাওলানা যুবায়ের আহমদ, দৈনিক ইনকিলাব এর ফিচার সহকারী আব্দুল্লাহ বিন আলাউদ্দীন, রংধনু শিল্পী গোষ্ঠীর পরিচালক মাওলানা মাইনুদ্দিন ওয়াদুদ প্রমুখ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন