শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০৮ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

অপেক্ষায় ডিম সংগ্রহকারীরা

প্রস্তুত হালদা

আসলাম পারভেজ, হাটহাজারী থেকে | প্রকাশের সময় : ৭ এপ্রিল, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মা মাছ যে কোন সময় ডিম ছাড়তে পারে। ডিম সংগ্রহকারীরা নৌকা ও জাল নিয়ে ডিম সংগ্রহের জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে।
কামাল সওদাগর জানান, হালদা নদীতে মা মাছের আনা গোনা বাড়ায় তারা নদীতে নৌকা ও জাল নিয়ে অপেক্ষা করছে কখন বজ্র বৃষ্টি হবে আর মা মাছ ডিম ছাড়বে তার জন্য। এখন যে কোনো মুহ‚র্তে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে বলে আশা করছেন ডিম সংগ্রহকারীরা ।
বর্তমানে শত শত ডিম সংগ্রহকারী নৌকা জাল নিয়ে হালদা নদীর গড়দুয়ারা, মাদরাসা, দক্ষিণ মাদরাসা, আমতুয়া, রামদাশ হাট, মাছুয়া ঘোনা, মেখল, মাদরাসা, দক্ষিণ মাদরাসা এবং রাউজানের অংকুরি ঘোনা, পশ্চিম বিনাজুরী, কাগতিয়া, গোলজার পাড়া, কাশেম নগর, আজিমের ঘাট, মগদাই, খলিফার ঘোনা, পশ্চিম আবুরখীল, মইশকরম, সার্কদা, মোকামী পাড়া, কচুখাইন, এলাকায় ডিম সংগ্রহের জন্য প্রতীক্ষার প্রহর গুনছে।
হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে ডিম সংগ্রহকারীরা নদীর তীরে পূর্ব থেকে মাটির কুয়া খনন করে রেখেছেন। ডিম সংগ্রহ করার পর মাটির কুয়ায় ডিম থেকে রেনু ফোটানোর জন্য সব রকম প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে ।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আজহারুল আলম জানান, এখন যে কোনো সময় হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়তে পারে। প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে প্রতি বছরের চৈত্র মাস থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত সময়ে মা মাছ ডিম ছাড়ে। হালদা নদীর তীরবর্তী হাটহাজারী, রাউজান এলাকার মৎস্যজীবী, জেলে, ডিম সংগ্রহকারীরা হালদা নদী থেকে মা মাছের ডিম সংগ্রহ করে। নদী থেকে সংগ্রহ করা ডিম নদীর তীরে মাটির কুয়ায় রেখে ও সরকার কর্তৃক নির্মিত হ্যাচারিতে ডিম থেকে রেনু উৎপাদন করা হয়। হালদা নদীর মা মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেনু দেশের বিভিন্ন এলাকায় মৎস্যজীবী, মৎস্য খামারীরা ক্রয় করে নিয়ে যায়। তিনি জানান, হালদা নদীতে সবচেয়ে রুই, মৃগেল, কালিবাউশ মাছ ডিম ছাড়ে বেশি।
হালদা নদীর মা মাছের ডিম থেকে উৎপাদিত রেনু মাছ চাষ করে মৎস্যজীবী ও মৎস্য খামারীরা লাভবান হয় বেশি। হালদা নদীর নাজির হাট থেকে মদুনঘাট পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার দৈঘ্য নদীতে চৈত্র থেকে শ্রাবণ মাস পর্যন্ত মা মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে যান্ত্রিক নৌযান চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে হালদা নদীর নাজির হাট থেকে মদুনঘাট পর্যন্ত ফটিকছড়ি, হাটহাজারী, নগরীর মোহরা এলাকায় শতাধিক স্পটে ড্রেজার দিয়ে ও যান্ত্রিক নৌকায় করে বালু উত্তোলন করছে এলাকার প্রভাবশালি ব্যক্তিরা। এতে মা মাছের প্রজনন হুমকির মুখে পড়েছে। হালদা নদীর নাজির হাট থেকে মদুনঘাট পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য নদীতে সারা বছর মা মাছ শিকার নিষিদ্ধ করা হলেও হালদা নদীর বিভিন্ন এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চুরি করে বড়শি ও জাল দিয়ে মাছ শিকার চলে। বর্তমানে হালদা নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার জন্য আনাগোনা করছে। বৃষ্টি ও বজ্রপাতের অপেক্ষায় মা মাছ হালদা নদীতে হাটহাজারী, রাউজানের কয়েক শতাধিক ডিম সংগ্রহকারী ও জেলে বজ্র বৃষ্টির অপেক্ষায় প্রহর গুণছিল।
নদীতে মা মাছ ডিম ছাড়ার ভরা মৌসুমে নৌযান ও ড্রেজার এবং জাল দিয়ে মাছ শিকারকারীদের কঠোর হস্তে দমন করতে হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মাদ রুহুল আমিন বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে আসছেন। তিনি রাতদিন পরিশ্রম করে হালদা নদী থেকে জাল জব্দ করে কয়েক হাজার মিটার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন