মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

যৌন শিক্ষার নামে স্কুল পর্যায়ে ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি বিরোধী বেহায়াপনা বন্ধ করুন -মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী

বিশেষ সংবাদদাতা কক্সবাজার | প্রকাশের সময় : ৯ এপ্রিল, ২০১৯, ৫:৪১ পিএম

হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী আজ (৯ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে বলেছেন, দেশের সাড়ে তিনশ’ স্কুলে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের এক সাথে বসিয়ে যৌনশিক্ষা দিয়ে লজ্জাবোধ, নৈতিকতা, পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে দেয়ার গভীর ষড়যন্ত্র। আর এই ষড়যন্ত্র রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। তারা এভাবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে লজ্জাহীন করে ভোগবাদী বানাতে চায়।

তিনি বলেন, গত ২৬ মার্চ বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানা যায়, দেশের ৩৫০টি স্কুলে ‘জেমস’ নামের দুই বছর মেয়াদী এই বিশেষ কোর্সটি চালু আছে গত পাঁচ বছর ধরে। ২০১৪ সালে জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিষয়ক তহবিল- ইউএনএফপিএ-এর অর্থায়নে এটা চলছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে চালুকরা এই প্রোগ্রামে অচিরেই আরও দুইশো স্কুলকে যুক্ত করা হবে। ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে চালুকরা এই কোর্সটির ধরন সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘পশ্চিমা দেশের বিদ্যালয়ে পড়ানো সেক্স এডুকেশনের আদলে’ এ শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে।

মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, এর মাধ্যমে একটি ইসলামবিদ্বেষী গোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিম বাংলাদেশটিকে সাংস্কৃতিক আগ্রাসনের মাধ্যমে মুসলিম জাতি সত্ত্বার পরিচয় মুছে ফেলতে চায়। পাশ্চাত্যের উলঙ্গ সংস্কৃতি আমদানী করে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা চালু করে দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মুল্যবোধ ধ্বংস করে দিচ্ছে তারা। সাম্রাজ্যবাদী পাশ্চাত্যের কিছু এদেশিয় গোলাম সর্বদা এ কাজে আমাদের তরুণ-তরুণীদেরকে ব্যবহার করছে। কোমলমতি ছেলে-মেয়ে ও যুব সমাজের নৈতিক চরিত্র ধ্বংস করে দেয়া তাদের টার্গেট। এতে তারা সফল হলে সমাজে মুসলমানিত্ব আর বাকী থাকবেনা।

মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী বলেন, অবিলম্বে স্কুল পর্যায় থেকে আমাদের ধর্ম, সমাজ ও সংস্কৃতি বিরোধী যৌন শিক্ষার নামে বেহায়াপনা বন্ধ করতে হবে। স্কুলে যদি যৌনবিষয়ক এই শিক্ষা চালু থাকে ছাত্র-ছাত্রীদেরকে সে দিকে আগ্রহী করে তুলবে এবং অবাধ যৌন মিলনে তাদের মনে ইন্ধন যোগাবে। আর এতে করে আমাদের পরিবার ও সমাজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে। বাংলাদেশের সামাজিক পরিবেশেরর সাথে স্কুল শিক্ষার্থীদের যৌনবিষয়ক সচেতনতা শিক্ষার কোন প্রয়োজন নেই। বরং এই শিক্ষা আল্প বয়সেই এদের জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। অবাধ যৌনাচারের ফলে প্রাণঘাতি নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হবে।
তিনি বলেন, এমনিতেই আজ সমাজ থেকে লজ্জা শরম বিদায় নিয়েছে। টিভি সিরিয়ালগগুলোর নাটক সিনেমায় নায়িকারা এমন শর্ট পোষাক পড়ে যাতে তাদের গোপন অঙ্গগুলো পুরুষ দেখতে পায়। অর্ধালগ্ন সুন্দরী মেয়ে -ছেলের ঢলাঢলি, শরীরের অঙ্গ ভঙ্গীর দৃশ্যগুলো মুসলিম পরিবারের সদস্যরা দেখছে। এমনকি মা-বাবা, ভাই-বোন একসাথে বসে এগুলো উপভোগ করছে। একারণে ছেলে মেয়েরা লজ্জা হারিয়ে ফেলছে। এ নোংরা দৃশ্যগুলো দেখার পর তরুণ বয়সের ছেলে মেয়েরা কোনোভাবেই সুস্থ্য থাকতে পারে না।
এরকম একটি নাজুক সময়ে দেশের সাড়ে তিনশ’ স্কুলে কিশোর ছাত্র-ছাত্রীদেরকে এক কক্ষে এক সাথে বসিয়ে যৌনশিক্ষা দানের খবর খুবই উদ্বেগের বিষয়।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সচেতন করার জন্য ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাগুলোি যথেষ্ট।

মাওলানা ইসলামাবাদী সরকারের উদ্দেশ্যে বলেন, ধর্ম, সমাজ ও নৈতিকতা বিরোধী এই শিক্ষা দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে বন্ধ করুন। অন্যথায় আলেমসমাজ ধর্মপ্রাণ জনসাধারণকে সাথে নিয়ে পরিবার ও সমাজ রক্ষায় এবং ভবিষ্যৎ প্রজম্মের চরিত্র ও সামাজিক মুল্যবোধ রক্ষায় দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
৩৫০টি স্কুলে গত পাঁচ বছর ধরে চলা ‘বিশেষ যৌন শিক্ষা’ সম্পর্কিত বিবিসি বাংলার প্রতিবেদনটি (টেক্সট ও ভিডিও) দেখার পর এমন অনুভূতি হতে পারে সচেতন সবার মাঝে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন