মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন : ১২ হাজার রোহিঙ্গার পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু

উখিয়া (কক্সবাজার) উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম

কক্সবাজারের উখিয়ার গত ৫-মার্চে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সংঘটিত অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত প্রায় ২ হাজার শেডের প্রায় ১২ হাজার রোহিঙ্গাকে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডের দ্বিতীয় দিনে ক্যাম্প ও স্থানীয় প্রশাসনসহ রোহিঙ্গা মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে কর্মরত সংস্থাগুলোর সমন্বিত তৎপরতায় ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের দেওয়া হচ্ছে খাদ্যসহ অন্যান্য নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী। পুড়ে যাওয়া প্রায় দুই হাজার শেডের জায়গায় অবস্থান নেওয়া পরিবারগুলোকে মাথা গোঁজাবার ঠাঁই করে দিতে তাঁবু ও ত্রিপল সরবরাহ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, গত রোববার দুপুরের খাওয়া শেষে বিশ্রাম নিচ্ছিল উখিয়ার বালুখালীর ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ, বি, ডি ব্লকের রোহিঙ্গারা। বিকাল ৩টার দিকে ডি-১৫ ব্লকের একটি ঘর থেকে হঠাৎ আগুনের সূত্রপাত হলে প্রাণ বাঁচাতে ঘর ছেড়ে সরে পড়ে ওই ক্যাম্পসহ তিনটি ক্যাম্পের কমপক্ষে দেড় লাখ বাসিন্দা।

শরণার্থী ক্যাম্পের ছোট্ট ঝুপড়িতে রোহিঙ্গা যুবক আব্দুল্লাহর (৩২) সঙ্গে কথা প্রসঙ্গে তিনি জানান, আমাদের চোখের সামনে নিমিষেই পুড়ে ছাই হতে দেখে যে যেদিকে পারে নিজের প্রান বাঁচাতে দিকবিদিকে ছুটে যাই। মিয়ানমারের সিটওয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করা এক যুবক জানান, 'স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় বর্মিজ শিক্ষক হিসেবে কাজ করার সুবাদে তাঁর বেতনের টাকায় কেনা শখের ল্যাপটপও আগুনে পুড়ে গেছে'।

তরুণ রোহিঙ্গা অধিকারকর্মী হিউম্যান রাইটস ডিফেন্ডারের সদস্য মোহাম্মদ মুসা (২৫) বলেন, ‘এই মুহূর্তে বাংলাদেশ সরকার ও কর্মরত সংস্থাগুলো খাবার ও আশ্রয়ের ব্যবস্থা করলেও পোশাকসহ গৃহস্থালি সামগ্রীর (ননফুড আইটেম) সংকট দেখা দিয়েছে।’

এদিকে সাধারণ রোহিঙ্গারা বলছেন, সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসার সদস্য ও সমর্থকেরা তাদের প্রতিপক্ষ আরএসও ও ইসলামি মাহাজসহ কয়েকটি গ্রুপের সঙ্গে বিরোধের জেরে এই পরিকল্পিত অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। কিন্তু ব্যাপারটা তদন্ত সাপেক্ষ।

রোববারের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা তদন্তে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের নেতৃত্বে ৭ সদস্যের এ তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে বলে জানিয়েছেন ১১ নম্বর ক্যাম্প ইনচার্জ সরওয়ার কামাল।

ক্যাম্প ইনচার্জ সরওয়ার কামাল বলেন, ‘তদন্ত কমিটি অগ্নিকাণ্ড নাকি নাশকতা, তা খতিয়ে দেখছে। সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসন শুরু করা হয়েছে, তাদের মানবিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।’

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি ভিডিও দেখিয়ে ১১ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক রোহিঙ্গা মাঝি বলেন, ‘আরসা প্রতিশোধ নিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হামলা করবে বলে বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিচ্ছিল। ইন্টারনেটে আরসা নেতারা অডিও বার্তা প্রচার করেছেন।’

প্রসঙ্গত, অগ্নিকাণ্ডের দিন সন্দেহভাজন হিসেবে মোহাম্মদ তাহের (১৮) নামের এক রোহিঙ্গাকে এপিবিএন আটক করেছে।

গতকাল রাত ১ টার দিকে অগ্নিকান্ডের ঘটনা নিয়ে কথা বলায় ২০/২৫ জনের মুখোশ পরা আরসার বিদ্রোহী সদস্যরা ওবায়দুল্লাহ রফিক নামক একজন রোহিঙ্গা নেতা (মাঝি) কে গুলি কতে হত্যা করে নির্বিঘ্নে স্থান ত্যাগ করে চলে যান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন