শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

মনিরামপুরে ইউপি চেয়ারম্যানের দখলকৃত জমির ভেড়িবাঁধ ভেঙে দিল প্রশাসন

প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা, যশোর : ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্বস্ত করতে ধরিয়ে দেয়ার পুরস্কার ঘোষণা ও মামলার পর গতকাল যশোরের মনিরামপুর উপজেলার ঝাপা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও আঃলীগ নেতা সামছুল হক মন্টুর জোরজবরদস্তি দখল করা ২শ’বিঘা জমি স্কেভেটর দিয়ে ভেড়ি বাঁধ কেটে ফসলী জমি সমান করার কাজ শুরু করেছে প্রশাসন। এতে অবশেষে ক্ষতিগ্রস্ত চাষীরা তাদের আবাদী জমি ফেরত পেলেন। জেলা প্রশাসনের দেয়া কথা বাস্তবায়ন হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকসহ এলাকাবাসীর মাঝে চলছে আনন্দ উল্লাস।
যশোরের মণিরামপুর উপজেলার ঝাঁপা ইউনিয়ন পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান ও আঃলীগ নেতা মন্টু, তার ছোট ভাই টুটুল ও সাইফুলের নেতৃত্বে নন্টু, কামরুল ওরফে গামা কামরুল, মাহবুর মেম্বর, রবিউল, মমিন, শরিফুল ওরফে পিচ্চি শরিফ, শাহাদাত, আব্দুল হামিদ, রাজগঞ্জের আনিছুর রহমান, আশরাফুল ইসলাম, মনোহরপুর গ্রামের রুহুল ও খালিয়া গ্রামের আবু কাসেম, সমীর কুমার, খবির আহম্মেদ ও আব্দুল মতিনসহ ২০/২৫ জন বোমা, পিস্তল, রামদাসহ দেশি অস্ত্র নিয়ে গত ১৩ মে চন্ডিপুর, মনোহরপুর ও রামনাথপুর গ্রামের সংখ্যালঘু হিন্দু পরিবারসহ নিরীহ সাধারণ কৃষকের ২শ’ বিঘা আবাদি জমি জোর-দখল করে মাছের ঘের নির্মাণ করে। এ ঘটনায় গোটা এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। জমির মালিকরা বাঁধা দিতে গেলে চেয়ারম্যানের ক্যাডার বাহিনী অস্ত্র প্রদর্শন ও বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ বিষয়ে গত ১৭ মে ক্ষতিগ্রস্তরা জেলা প্রশাসনের দ্বারস্থ হলে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে সরেজমিনে তদন্তে সত্যতা মেলে এবং চেয়ারম্যানের অন্যতম ক্যাডার মাহবুর মেম্বরকে আটক করে। এই ঘটনায় ১৮ মে চেয়ারম্যান মন্টুকে প্রধান আসামি করে ১৩ জনের নাম উল্লেখসহ আরও অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামি করে রামনাথপুর গ্রামের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নেতা অরুণ হাজরা থানায় মামলা করেন। গত ২০ মে বিকালে উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু-বৌদ্ধ ঐক্য পরিষদ আসামিদের আটকের দাবিতে মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসানের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদানসহ মানববন্ধন করে।
গত ২১ মে যশোর জেলা প্রশাসক ড. হুমায়ুন কবীর ও পুলিশ সুপার আনিসুর রহমানসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে আলাপ করেন। জেলা প্রশাসক এ সময় ঘোষণা দেন যে, ২৪ মে থেকে ওই ভেঁড়ী ভেঙ্গে চাষীদের জমি বুঝে দেয়া হবে। আর পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ওই মামলার প্রধান আসামি বহু অপকর্মের হোতা শামছুল হক মন্টুকে ধরিয়ে দিতে ২৫ হাজার টাকার পুরষ্কার ঘোষণা করেন। মঙ্গলবার সকাল থেকে জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে স্কেভেটর দিয়ে ভেড়ি ভেঙ্গে আবাদী জমি সমান বা আগের মতো করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক রাজ্জাক ও রফিকুল ইসলাম জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের কঠোর অবস্থানের জন্য তারা ক্ষতি থেকে মুক্তি পাচ্ছেন। এদিকে, ভুমি দখলকারীদের গ্রেফতারের জন্য ওই এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে, ঘটনার সাথে জড়িতরা আটক না হওয়া পর্যন্ত পুলিশি অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান জানান।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন