শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

অপ্রতুল ত্রাণ অবর্ণনীয় দুর্ভোগ - রোয়ানুতে বিধ্বস্ত চট্টগ্রামের বাঁশখালী

প্রকাশের সময় : ২৫ মে, ২০১৬, ১২:০০ এএম

রফিকুল ইসলাম সেলিম : ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে বিধ্বস্ত চট্টগ্রামের উপকূলীয় উপজেলা বাঁশখালীর ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষের দুভোর্গের শেষ নেই। এখনও আশ্রয়কেন্দ্রে থেকে গেছে ১০ হাজার মানুষ। ঘূর্ণিঝড়ের তিন দিনের মাথায় সরকারি সাহায্য হিসেবে তাদের ভাগ্যে জুটেছে চাল। তবে এ চাল ফুটিয়ে ভাত খাওয়ার কোন সুযোগ নেই আশ্রয়কেন্দ্র গুলোতে। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার দেয়া খিচুড়ি আর শুকনো খাবারে দিন পার করছে এসব দুর্গত মানুষেরা। আশ্রয়কেন্দ্রের দুর্ভোগ থেকে যারা বাড়িঘরে ফিরে গেছেন তারা পড়েছেন মহাবিপাকে। শূন্য ভিটায় ধ্বংসস্তুপের উপর বাড়িঘরের নাম-নিশানাও নেই। সেখানে কোনমতে ফের বেঁচে থাকার লড়াইয়ে হাজারও দুর্গত মানুষ।
ঘন্টায় সর্বোচ্চ ১২৭ কিলোমিটার গতির ভয়ঙ্কর ঝড়ের সাথে দশ ফুটের বেশি উঁচু জলোচ্ছ্বাসের তোড়ে ভেসে গেছে বসতবাড়ি, ফসলের ক্ষেত, পুকুরের মাছ। জীবন বাঁচাতে এক কাপড়ে এসব এলাকার বাসিন্দারা আশ্রয় নিয়েছিলেন পার্শ্ববর্তী ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে ও স্কুল মাদরাসায়। ঝড়ের তা-ব থেমে যাওয়ার পর লোকালয়ে ফিরে তারা দেখেন এক বিরাণ ভূমি। পড়ে আছে শূন্যভিটা, নেই ঘরবাড়ি, গোয়ালের গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি, খামারের মাছ।
জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে বাড়িঘরসহ সহায় সম্বল। ঝড় থামার পর জোয়ারের পানিও সরে গেছে। সে সাথে গেছে সাজানো সংসার। যাদের গোলায় ছিল ধান, ক্ষেতে ফসলের সমারোহ, গোয়াল ভরা গরু আর পুকুর ভরা মাছ; তাদের এখন কিছুই নেই। ঘরবাড়ির সাথে গেছে হাঁড়িপাতিল। রান্না ঘরের চুলাও অবশিষ্ট নেই। অসহায় এসব মানুষের দুর্ভোগের কোন শেষ নেই। ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলের বাসিন্দারা বলছেন, ঝড় থেমে যাওয়ার তিনদিন পরেও তারা পর্যাপ্ত সাহায্য পাননি। দুর্গত কিছু পরিবারকে চাল দেওয়া হয়েছে। দেওয়া হয়েছে শুকনো খাবার। চাল রান্না করে খাওয়া মতো অবস্থাও অনেকের নেই।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে অবর্ণনীয় দুভোগের মুখোমুখি দুর্গতরা। তিনদিন পর সরকারী সাহায্য হিসাবে তাদের দেওয়া হয় চাল ও শুকনো খাবার। বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার দেওয়া ত্রাণসামগ্রীতে তারা কোন মতে বেঁচে আছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শামসুজ্জামান ইনকিলাবকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকটি ইউনিয়নের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে এখনও ১০ সহস্রাধিক দুর্গত মানুষ রয়েছে। সরকারিভাবে তাদের মধ্যে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, স্থানীয়ভাবে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার উদ্যোগে তাদের শুকনো খাবারের পাশাপাশি রান্না করা খাবারও দেয়া হচ্ছে। এসব দুর্গত লোকজন তাদের বাড়িঘর মেরামত না হওয়া পর্যন্ত আশ্রয়কেন্দ্রে থাকতে পারবেন। তবে আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা লোকজন বলছেন, তাদের যাওয়ার কোন জায়গা নেই। বাড়িঘর, বসতভিটা সবকিছুই বিলীন হয়ে গেছে। বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রতিদিনই নিয়মিত জোয়ারে এসব এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। আশ্রয়কেন্দ্রের পরিবেশ বসবাসের পুরো অনুপযোগী অভিযোগ করে দুর্গতরা জানানা, সরকারিভাবে যে সাহায্য দেয়া হচ্ছে তা একেবারেই অপ্রতুল।
রোয়ানু দুর্গতরা বলছেন, ১৯৯১সালে প্রলয়ঙ্করি ঘূর্ণিঝড়ের পর এটাই বাঁশখালীবাসির জন্য সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে এ উপজেলার ৩০ হাজারের মতো মানুষ মারা যায়। ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয় পুরো উপকূলীয় জনপদ। এবারের ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে উপকূলীয় বেড়িবাঁধ না থাকায় বাঁশখালীর বিশাল এলাকা বিরান ভূমিতে পরিণত হয়। তাই দুর্গতরা এবার ত্রাণের চেয়ে বেড়িবাঁধকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন। তারা বলছেন, আমরা ভিক্ষা চাই না, বেড়িবাঁধের মাধ্যমে স্থায়ী সমাধান চাই।
শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত বয়ে যাওয়া প্রবল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে চট্টগ্রামের যে কয়েকটি উপজেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে উপকূলীয় উপজেলা বাঁশখালী। উপজেলার সাগর তীরবর্তি খানখানাবাদ, ছনুয়া ও গন্ডামারার হাজার হাজার পরিবার সহায় সম্বলহীন হয়ে পড়েছে। এছাড়া সরল, সাধনপুর, পুকুরিয়াসহ উপকূলীয় সবকটি ইউনিয়নের কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। এই তান্ডবের ফলে বাঁশখালীর খানখানাবাদ, ছনুয়া, গন্ডামারা এলাকার ৯ জন প্রাণ হারিয়েছে। তাদের মধ্যে রোয়ানুর প্রথম আঘাতেই পানিতে ভেসে গিয়ে মারা যায় ৭ জন। অসংখ্য গরু, ছাগল, হাঁস মুরগী মারা পড়েছে। প্রায় ১০ সহস্্রাধিক বাড়ি ঘর সম্পূর্ণ বিলীন হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। পানি সরে যাওয়ায় দুর্গত লোকজন বাড়ি ফিরে গেছে। তবে তাদের বাড়িঘর কিছুই নেই। রোয়ানুর তান্ডবে চির চেনা সেই গ্রাম এখন আর নেই। যেদিকে চোখ যায় শুধু ধ্বংসের চিহ্ন। ঘর বাড়ি, গাছপালার সাথে রাস্তাঘাট, বেড়িবাঁধ সবকিছু মুছে গেছে। এখন স্বাভাবিক জোয়ারেও প্লাবিত হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। আশ্রয়কেন্দ্র থেকে যারা বাড়ি ফিরে গেছেন তারা পড়েছেন খাবার পানির সংকটে।
ঘূর্ণিঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খানখানাবাদ ইউনিয়ন। খানখানাবাদের প্রেমাশিয়া গ্রাম একেবারে সাগর উপকূলে। বাসিন্দাদের কেউ মাছ ধরার আবার কেউ দিনমজুর পেশায় যুক্ত। ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সিদ্দিক আবু বলেন, দক্ষিণ প্রেমাশিয়ার ৩ নম্বর, উত্তর প্রেমাশিয়ার ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের পশ্চিম রায়ছটা, শেখ মোহাম্মদ পাড়া ও ফকির পাড়া এলাকায় ক্ষতি হয়েছে সবচেয়ে বেশি। এসব এলাকায় অধিকাংশ বাড়িঘর পানিতে ভেঙে গেছে জানিয়ে ইউনিয়ন চেয়ারম্যান বলেন, খানখানাবাদ ইউনিয়নে মোট ছয় হাজার ৭৯৫টি ঘর। এর মধ্যে দুই হাজার ভেঙে পানিতে বিলীন হয়ে গেছে। শেখ মোহাম্মদ পাড়ার বাসিন্দা সুমন দাশ জানান, তাদের বাড়ির ১৮টি ঘরের মধ্যে ছয়টি ঘর পানিতে বিলীন হয়ে গেছে, বাকি সব ঘরে পানি ঢুকেছে।
মৌলভী পাড়ার বাসিন্দা নুরুন্নবী, আব্দুর সবুর বলেন, বেড়িবাঁধের সঙ্গে লাগোয়া এলাকাটির তিনটি পাকা বাড়ি ছাড়া সব ঘর নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। তারা জানান, বেড়িবাঁধটি দীর্ঘদিন ভঙ্গুর অবস্থায় ছিল। বিভিন্ন সময়ে মাটি আর বালি দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে ঠিক করা হলেও স্থায়ী সংস্কার হয়নি। ঘূর্ণিঝড়ে বাঁধ ভেঙে পানি ঢুকে পুরো এলাকা তলিয়ে গেলেও আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নেওয়া কেউ সোমবারের আগে ত্রাণ পায়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা জানিয়েছেন, সোমবার ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া যাওয়ার পর তাদের চিড়া, মুড়ি গুড়সহ কিছু শুকনা খাবার দেওয়া হয়েছে।
দুর্গতরা বলছেন, এখনও পর্যন্ত সরকারি সাহায্য যা পেয়েছেন তা উল্লেখ করার মতো নয়। এই মুহূর্তে লোকজনের দরকার মাথা গোজার ঠাঁই ও জরুরী খাবার। কিন্তু সরকারীভাবে কিছু চাল দেওয়া হয়েছে মাত্র। এ প্রসঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান গতকাল বিকেলে ইনকিলাবকে বলেন, দুর্গতদের মধ্যে কিছু চাল বিতরণ করা হয়েছে। যারা আশ্রয় কেন্দ্রে আছে তাদের মাঝে শুকনো খাবারও বিতরণ করা হয়। তিনি বলেন, উপজেলা প্রশাসন দুর্গত ও ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রনয়ণ করছে। যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছে তাদের চাল ও ঘর নির্মাণের জন্য টিন বরাদ্দ দেওয়া হবে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর তান্ডবে লন্ডভন্ড বাঁশখালীকে আগামী দিনে প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। সোমবার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া ক্ষতিগ্রস্ত খানখানাবাদ ইউনিয়ন পরির্দশনে গেলে দুর্গতরা তাকে ঘিরে বেড়িবাঁধের দাবিতে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
জনতার ক্ষোভের মুখে তিনি বেড়িবাঁধ নির্মাণের আশ্বাস দেন। আর আগে তিনি ঘূর্ণিদুর্গত খানখানাবাদ ইউনিয়ন ও বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন। এ সময় ত্রাণমন্ত্রী বলেন, ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর কারণে বাঁশখালীতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নিজের চোখে না দেখলে বিষয়টি অনুধাবন করতে পারতাম না। আগামী দিনে যাতে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি না হয় সে লক্ষ্যে বাঁশখালীতে একটি স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ করবে সরকার।
রোয়ানু আঘাত হানার পর থেকেই সাগরপাড়ের বেড়িবাঁধ স্থায়ীভাবে নির্মাণের দাবিতে সোচ্চার হয় স্থানীয়রা। বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় সাধারণ জনগণকে বাঁচাতে উপকূলীয় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য বারবার জোর দাবি করে আসলেও স্থায়ী বাঁধ নির্মাণে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। ১৯৯১ সালের সেই প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের পর থেকে উপকূলবাসী স্থায়ী বেড়িবাঁধের দাবি করে আসছেন। বারবার দুর্যোগ আসে, আর সোচ্চার দাবি ওঠে স্থায়ী বেড়িবাঁধের। উপকূলীয় বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য বরাদ্দও আসে। কিন্তু অপর্যাপ্ত বরাদ্দ দিয়ে মাটির বাঁধ নির্মাণ করা হয়। সাগরের তান্ডবে অল্প সময়ের মধ্যেই মাটির সে সব বাঁধ বিলীন হয়ে যায়। আর ঘরবাড়ি ও সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়ে উপকূলবাসী। গেল অর্থবছরে উপকূলীয় স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ২১০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে সে বরাদ্দ বাড়িয়ে ২৫০ কোটি টাকা করা হয়। এই প্রসঙ্গে এমপি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে বর্ষা এসে যাওয়ায় এখন কাজ শুরু করা সম্ভব হবে না। বর্ষা শেষে পুরোদমে কাজ শুরু হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, নোয়ানুর প্রভাবে ছনুয়া, গন্ডামারা, খানখানাবাদ, শেখেরখীল, সরল, কাথরিয়া, বাহারছড়া, সাধনপুর, পুকুরিয়া, পুঁইছড়ি সব মিলিয়ে সাগর এবং উপকূলীয় এলাকায় প্রায় ৪৪.৪৩ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যার আনুমানিক ক্ষতি ১৩ কোটি টাকারও বেশি। এদিকে রোয়ানুর ফলে সব চেয়ে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন খানখানাবাদ। বিগত দিনেও খানখানাবাদ এলাকার ঐতিহ্যবাহী খানখানাবাদ বাজার, প্রেমাশিয়া বাজারসহ কদমরসুল এলাকার বেশ কিছু বাড়ীঘর সাগর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। বর্তমানে ওই সব এলাকায় ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর ফলে মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে।
ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে আনোয়ারা উপকুলের গ্রামের পর গ্রাম লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। বিধ্বস্ত হয়েছে ১০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এই এলাকায় সাগরতীরে ৭৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ থাকলেও মাত্র এক কিলোমিটার ছাড়া পুরোটাই নড়বড়ে হয়ে পড়েছে। সিইউএফএল থেকে বারো আউলিয়া সাগর প্রান্ত পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার, বারো আউলিয়া থেকে বরুমচড়া শঙ্খের মুখ পর্যন্ত৩৩ কিলোমিটার, বরুমচড়া থেকে কৈনপুরা মহতরপাড়া পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। স্থায়ী সংস্কারের অভাবে এসব বাঁধের বিভিন্ন অংশে দেখা দিয়েছে বিপজ্জনক ফাটল। ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর তান্ডবের পর এক রকম বিধ্বস্ত হয়েছে রায়পুরের ৬ কিলোমিটার, জুইদন্ডির দুই কিলোমিটার ও বরুমচড়া-বারখাইনের দেড় কিলোমিটার বেড়িবাঁধ। এখন প্রতিদিনই জোয়ারের পানিতে এসব এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক হিসাবে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর আঘাতে চট্টগ্রাম মহানগর ও উপকূলীয় এলাকার ১০৪ টি ইউনিয়নের ৪ লাখ ৮৩ হাজার ৮৬ জন মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৮১ হাজার ৪১১ জন। আর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৪ লাখ ১ হাজার ৬৭৫ জন। মোট ১ লাখ ৩০ হাজার ৯৭টি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৪৩৭টি পরিবার সম্পূর্ণ ও ৮৩ হাজার ৬৬০টি পরিবার আংশিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ১৫৪ একর ফসল সম্পূর্ণ এবং ২ হাজার ৫৪১ একর ফসল আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ২০ হাজার ৮৯২টি ঘর সম্পূর্ণভাবে ও ২৫ হাজার ৭৬৬টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন