স্টাফ রিপোর্টার : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, পরোয়ানা ছাড়া গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা যাবে না। এ ব্যপারে আদালত যে নির্দেশনা দিয়েছে তা মানতে হবে। এ সংক্রান্ত ৫৪ ও ১৬৭ ধারা সংশোধনের নির্দেশনা দিয়ে উচ্চ আদালত যে রায় দিয়েছেন তা মেনেই কাজ করবে পুলিশ। কেউ এ আইন অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গতকাল দুপুরে সচিবালয়ে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ৫৪ ধারার অপব্যবহারের অভিযোগ উঠলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য) বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান রয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী কোনো পুলিশ সদস্য যদি কাউকে বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার করে, কিংবা ১৬৭ ধারায় রিমান্ডে নেয়, তবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে, পুলিশ কীভাবে ও কাকে গ্রেফতার করতে পারবে। এখনো কিন্তু সেটা হচ্ছে। যে সংস্থা গ্রেফতার করতে যাচ্ছে, পোশাকে সেটা উল্লেখ থাকে।
সাংবাদিক শফিক রেহমানকে গ্রেফতারের সময় বিষয়টি মানা হয়নি বলে অভিযোগ আছে। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ভেতরে কিন্তু পরিচয় দিয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ছাড়া দলপতি কিন্তু পোশাক পরেই গেছেন।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, হাইকোর্টের রায় আপিল বিভাগ বহাল রেখেছেন। কাজেই উচ্চ আদালতের রায় আমাদের জন্য মানা বাধ্যতামূলক। আদালত যে রায় দিয়েছেন তা আমি শুনেছি। এখনো রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি হাতে পাইনি। রায়ের কপি পেলে কী কী নির্দেশনা আছে তা দেখে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় সীমান্ত হত্যার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সীমান্ত হত্যাকা- আগের তুলনায় অনেক কমেছে, আরো কমবে।
গতকাল সকালে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ও ১৬৭ ধারা অনুযায়ী বিনা পরোয়ানায় গ্রেফতার ও রিমান্ড বিষয়ে হাইকোর্টের দেওয়া নির্দেশনা বহাল রাখেন আপিল বিভাগ।
১৯৯৮ সালে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী এলাকা থেকে ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির ছাত্র শামীম রেজা রুবেলকে ৫৪ ধারায় গ্রেফতার করে। পরে পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় রুবেল মারা যান। এ ঘটনায় কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন রিট করে। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৩ সালের ৭ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারায় গ্রেফতার ও রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের প্রচলিত বিধান ছয় মাসের মধ্যে সংশোধন করতে সরকারকে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ওই ধারা সংশোধনের আগে কয়েক দফা নির্দেশনা মেনে চলার জন্য সরকারকে বলা হয়।
এর পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৪ সালে আপিল করে তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকার। তখন আপিল বিভাগ লিভ পিটিশন মঞ্জুর করলেও হাইকোর্টের নির্দেশনা স্থগিত করেন নি। ২০১০ সালের ১১ আগস্ট মামলাটি শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় আসে। তখন আদালত হাইকোর্টের নির্দেশনা বাস্তবায়নে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, সরকারকে তা জানাতে বলা হয়েছিল।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন