স্টাফ রিপোর্টার : ধর্ষণের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদ-প্রাপ্ত ভোলার চরফ্যাশনের আবদুল জলিলের বিচার ভুল আইনে হওয়ায় তাঁকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে জলিলের দ-াদেশ বাতিল করে মুক্তি দিতে বলেছেন আদালত। যাবজ্জীবন সাজার বিরুদ্ধে জলিলের জেল আপিল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি এ এফ এম আবদুর রহমানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ গত বছরের ১৫ ডিসেম্বর এ রায় দিয়েছিলেন। গতকাল বুধবার ওই রায় প্রকাশিত হয়েছে। আদালত রায়ে বলেছেন, আবদুল জলিলকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দেবে রাষ্ট্রপক্ষ, এটাই যুক্তিযুক্ত। ২০০১ সালে ১৩ নভেম্বর থেকে আজ অবধি আবদুল জলিলকে ১৪ বছর ধরে কারাগারে আটকে রেখে তার জীবনের যে ক্ষতি করা হয়েছে, তা পূরণ হবে কীভাবে? আসামি অপরাধী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত আসামিপক্ষ আইনের দৃষ্টিতে সমান অধিকার পাওয়ার অধিকারী। এই মামলায় নাবালক শিশু জলিলকে সেই অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই কিছুটা হলেও অর্থনৈতিকভাবে আসামি জলিলকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে তার জীবনের দুঃখ ঘোচাতে রাষ্ট্রপক্ষ বাধ্য।
রায়ের বিবরণীতে জানা যায়, ১৫ বছরের একটি শিশুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের ঘটনায় ২০০১ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ভোলার চরফ্যাশন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় আবদুল জলিলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদ- দেন ভোলার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ ট্রাইব্যুনাল। রায়ের বিরুদ্ধে দন্ডপ্রাপ্ত জলিল আবেদন করেন। হাইকোর্ট ওই আবেদন নিষ্পত্তি করতে গিয়ে দেখেন, ঘটনার সময় জলিলের বয়স ছিল ১৫ বছর। অভিযোগপত্রেও তা উল্লেখ করা হয়েছিল। ফলে একজন নাবালক হিসেবে তার বিচার পুনরায় শিশু আদালতে করার জন্য ভোলার জেলা দায়রা জজকে নির্দেশ দেন উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে ওই সাজা বাতিল করে দেন । এরপর ২০১০ সালে ৮ মার্চ ভোলার অতিরিক্ত দায়রা জজ শিশু জলিলকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের একই ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে আবারও যাবজ্জীবন কারাদ- দেন। এই দ-ের বিরুদ্ধে জেল আপিল করেন জলিল। জেল আপিল নিষ্পত্তি করে হাইকোর্টের একক বেঞ্চ যাবজ্জীবনের সাজা বাতিল করে কারামুক্তির নির্দেশ দেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন