ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে বাংলাদেশ। বন্যা হলে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২১ হাজার ২২৮ দশমিক ৪৫৪ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১১ হাজার ২শ’ কিলোমিটার বাঁধ ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়বে। গত ৪০ বছরে সারাদেশে বন্যায় মারা গেছে ৫ লাখ ২০ হাজার মানুষ। প্রতি চার থেকে পাঁচ বছর পর ভয়াবহ বন্যায় দেশের ৬০ শতাংশ এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ১৯৯৮ ও ২০০৪ সালের প্রলয়ঙ্করী বন্যায় দেশের জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশে নেমে এসেছিল। এবার আগাম বন্যা হলে সারাদেশে ৩৪ লাখ মানুষ আক্রান্ত হতে পারে। বন্যা সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলেছে, ফণি সরে গেলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে দেশের নদীগুলোতে পানি বাড়তে পারে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, বাংলাদেশ একটি দুর্যোগপ্রবণ দেশ। বন্যাসহ বিভিন্ন ধরনের দুর্যোগে আক্রান্ত হয় এ দেশ। বন্যায় বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি প্লাবিত হয়। বন্যা প্রতিরোধ ও ঝুঁকি হ্রাসে সরকার বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এদিকে হাটহাজারীর উত্তর মাদার্শা ইউনিয়ন এলাকায় নব নির্মিত হালদা বেড়ি বাঁধ পরির্দশন করেছেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামিম।
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ সংশ্লিষ্ট কারণে প্রথম দফা ২-৩ মে ভারতের মেঘালয় অববাহিকায় এবং ২য় দফা ৬-৭ মে ভারতের মেঘালয়সহ বাংলাদেশের মেঘনা অববাহিকা, মধ্যাঞ্চল ও উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। ভারত থেকে ভারী বৃষ্টিপাতের পানি নেমে বাংলাদেশের, তিস্তা, বক্ষ্রপুত্র, মনু, ধলাই ও সিলেটের সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর পানি আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বন্যা দেখা দিতে পারে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানায়, বাংলাদেশ এবং ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থারত ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’ বর্তমানে উত্তর ও উত্তর পশ্চিম দিকে সরে গেছে।
ভারতের সীমান্তবর্তী জেলার সাথে তিস্তা. মনু, ধলাই ও কুশিয়ারা নদের সংযোগ রয়েছে। এ সীমান্তে ভারতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ফি বছরই আকস্মিক বন্যা হয়। ঘুর্ণিঝড় ফণির আঘাতের প্রভাবে ভারতে যদি ভারীবৃষ্টি পাত হয় তবে ব্যাপক ক্ষতি এবং বন্যার আশংকা রয়েছে বাংলাদেশে। এদিকে ঘুর্ণিঝড় ফণির আঘাতের স্বাভাবিকের চেয়ে উঁচু জোয়ারের কারণে দেশের ১১ জেলায় বাঁধ ভেঙ্গে প্রায় অর্ধশতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। খুলনা, পটুয়াখালী, বরগুনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, কক্সবাজার, নেত্রকোণা, শরিয়তপুরসহ বিভিন্ন জেলায় বেশ কিছু পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে গেছে।
গতকাল শনিবার পটুয়াখালীতে বাঁধ ভেঙে ও পানি উপচে তিনটি উপজেলার অন্তত ২৫ গ্রাম প্লাবিত হয়ে তলিয়ে যায় বাড়ি ঘর, ফসলি জমি। বাগেরহাটের শরণখোলার তিনটি গ্রামও প্লাবিত হয়েছে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবীর বিন আনোয়ার ইনকিলাবকে বলেন, যে সব জেলায় বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ সেগুলোর কাজ শুরু হয়েছে। আগামী বছরে নতুন নতুন বেড়িবাঁধ নির্মাণ করার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে প্রকল্প তৈরির নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র প্রভাবে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে আকস্মিক বন্যার আশঙ্কা থাকতে পারে-সে জন্য আগাম প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. মাহফুজুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, সারাদেশে ৭০টি জোনের মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৮ হাজার ৪২৯ কিলোমিটার। উপক‚লীয় বাঁধ ৪ হাজার ৭৫০ কিলোমিটার, ডুবন্ত বাঁধ ২ হাজার ৪৩৬ কিলোমিটার এবং সেচ খালের ডাইক ৩ হাজার ৬১২ কিলোমিটার। গত দুই দিনে যেগুলো বাঁধ ভেঙ্গে গেছে সেগুলোর সঠিক হিসাব এখন বলা যাবে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানি উন্নয়ন বোর্ডের এক কর্মকর্তা বলেন, সারাদেশে কতো কিলোমিটার বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ তাও কোনো কর্মকর্তা বলবে না। তবে সারাদেশে কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১১ হাজার ২শ’ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ। এর মধ্যে সাড়ে তিন হাজার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হয়েছে। আরো কিছু এলাকায় কাজ চলছে।
জানা গেছে, দেশে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২১ হাজার ২২৮ দশমিক ৪৫৪ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধের মধ্যে ১১ হাজার ২শ’ কিলোমিটার বাঁধ বন্যা হলে ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে পড়বে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৭০টি জোনের মধ্যে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৮ হাজার ৪২৯ কিলোমিটার, উপক‚লীয় বাঁধ ৪ হাজার ৭৫০ কিলোমিটার, ডুবন্ত বাঁধ দুই হাজার ৪৩৬ কিলোমিটার এবং সেচ খালের ডাইক ৩ হাজার ৬১২ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে।
ঢাকায় পাউবো বিভাগ-২ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৫১ দশমিক ৭৬০ কিলোমিটার। নারায়ণগঞ্জ পাউবো বিভাগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ১২০ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার সেচ খালের ডাইক ৪১ দশমিক ৫০০ কিলোমিটার। মানিকগঞ্জ পাউবো বিভাগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৩৮ দশমিক ৬০০ কিলোমিটার। ময়মনসিংহ পাউবো বিভাগ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ১৮১ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৮৭ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার। নেত্রকোণায় ৩৫ দশমিক ১৫০ কিলোমিটার, ডুবন্ত বাঁধ ১৩১ দশমিক ১০০ কিলোমিটার। টাঙ্গাইল জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ২৩৬ দশমিক ১৫০ কিলোমিটারের। কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৪৮ দশমিক ৯০৫ কিলোমিটার। কুমিল্লা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ১৪১ দশমিক ৩০০ কিলোমিটার। চাঁদপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ১০০ কিলোমিটার। ফেনী জেলায় ১২২ দশমিক ৭৮০ কিলোমিটার, নোয়াখালী জেলায় উপক‚লীয় বাঁধ ৪২৪ দশমিক ৩৩৮ কিলোমিটার, লক্ষীপুর জেলায় উপক‚লীয় বাঁধ ১৪৪ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম-১ জোনে ২১৭ দশমিক ৭৫০ কিলোমিটার। চট্টগ্রাম-২ জোনে ৬ দশমিক ৬৯৮ কিলোমিটার। রাঙ্গামাটি জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ও সেচ খাল ৮৬ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার। সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৬৯ দশমিক বাঁধের মধ্যে ডুবন্ত বাঁধ ১৪৬ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার। সুনামগঞ্জ জেলায় বেড়িবাঁধ ৩৭ কিলোমিটার। এর মধ্যে ডুবন্ত বাঁধ ১৫৬২ দশমিক ৪২৬ কিলোমিটার। মৌলভীবাজার জোনে বেড়িবাঁধ ৫৩৯ দশমিক ৯০১ কিলোমিটার। হবিগঞ্জ জোনে বেড়িবাঁধ ১৪ কিলোমিটার এবং ডুবন্ত বাঁধ রয়েছে ৩০ কিলেমিটার। ফরিদপুর জোনে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ২৭ দশমিক ১০০ কিলেমিটার। গোপালগঞ্জ জেলায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ১৪৫ দশমিক ১৪২ কিলোমিটার। ডুবন্ত বাঁধ রয়েছে ১৭১ দশমিক ৭৭৮ কিলোমিটার। কুষ্টিয়া পাউবো বিভাগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ২৪ কিলোমিটার সেচ খালের ডাইক ৫৩১ দশমিক ৮০০ কিলোমিটার। চুয়াডাঙ্গা পওর বিভাগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ সেচ খালের ডাইক ১৮৫ দশমিক ৭৫০ কিলোমিটার। যশোর পাউবো বিভাগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৫৭ কিলোমিটার। খুলনা পাউবো বিভাগ-১ বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৩৩৬ দশমিক ২৫০ কিলোমিটার। খুলনা-২ পাউবো বিভাগে ডুবন্ত বাঁধ ৫০৯ দশমিক ৩৮০ কিলোমিটার। রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ২৬৯ দশমিক ৯৪০ কিলোমিটার। নাটোর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ১৪ কিলোমিটার। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৯৪ দশমিক ৩২৮ কিলোমিটার। সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৭৮ দশমিক ৫৪০ কিলোমিটার। রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৭৭ দশমিক ৫০০ কিলোমিটার।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রায় ১২ কিলোমিটার। গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ২৩৮ দশমিক ৫৫০ কিলোমিটার। ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রায় ৪২ কিলোমিটার। ঠাকুরগাঁও পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ২১ কিলোমিটার। দিনাজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৪৫ দশমিক ৬২৫ কিলোমিটার। বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ২৭২ দশমিক ৮৯০ কিলোমিটার। ভোলা ১১ কিলোমিটার, পিরোজপুর ২৯৬ দশমিক ১২৩ কিলোমিটার, ঝালকাটিতে ৩৩৬ দশমিক ৮০৯ কিলোমিটার, পটুয়াখালীতে ২ দশমিক ৪৫৭ কিলোমিটার এবং বরগুনায় ২৫ দশমিক ৩০৫ কিলোমিটার বেড়ি বাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে অনেক বন্যা হলে অনেক এজেলার বাঁধ ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে পড়বে এবং হাজার হাজার একর জমি নদীতে বিলিন হয়ে যাবে।
ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র প্রভাবে বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে পানি। নদ নদীগুলোর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই-তিন ফুট বেড়েছে। প্লাবিত হয়েছে বিভিন্ন জনপদ। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁধ ভেঙে যাবার আশঙ্কায় বালুর বস্তা দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে পড়েছে। এতে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা বিদ্যুতবিহীন হয়ে পড়েছে। আমাদের সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্যে এ খবর :
বরিশাল ব্যুরো জানায়, ঘূর্ণিঝড় ফণি’র প্রভাবে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ ও কলাপাড়া এবং বাগেরহাটের শরনখোলার কয়েকটি স্থানে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে জনবসতি ও ফসলি জমির জন্য সঙ্কট তৈরি করছে। রাত ১০টায় পুনরায় জোয়ারে পরিস্থিতির অরো অবনতির আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী। তবে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নেয়া সম্ভব হলেও লাখ লাখ গবাদিপশু নিয়ে চরম অনিশ্চয়তায় উপক‚লবাসী। দুর্যোগের সময় এক কোটিরও বেশি গৃহপালিত পশু পাখির জন্য কোন নিরাপদ আশ্রয়স্থল এখনো গড়ে ওঠেনি।
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র প্রভাবে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে পানি। অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নিয়ে পার্শ¦বর্তী নিরাপদ স্থানে যেতে শুরু করেছে। গতকাল সকাল থেকে বলেশ্বর নদীর পানি বৃদ্ধি ও স্রোতের চাপে উপজেলার বগী, সাতঘর এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। ঝড়ের প্রভাবে গাছ পড়ে সদর উপজেলার রনজিতপুর গ্রামে শাহনুর বেগম (৫০) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
ঝালকাঠি জেলা সংবাদদাতা জানান, ঝালকাঠিতে ঘূর্ণিঝড় ‘ফণি’র প্রভাবে পানির পাচে বিষখালী নদী তীরের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। দুপুরের পর কাঁঠালিয়া সদর ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে পানি ঢুকে পড়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দারা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এসব এলাকার লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এছাড়াও জেলার নদ নদীগুলোর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে দুই-তিন ফুট বেড়েছে। জেলা শহরের বিভিন্নও স্থানে পানি ঢুকে পড়েছে
সাতক্ষীরা থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, কিছু এলাকায় বেড়িবাঁধ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল জানান, রাতেই ঘূর্ণিঝড় ফণী উপক‚লে আঘাত হানতে পারে। এসময় ৪-৫ ফুট জলোচ্ছাস হতে পারে।
বরগুনা জেলা সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় ফণির প্রভাবে গাছ উপড়ে পড়ে বরগুনা সদর উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। গতকাল দুপুর ১টার দিকে সদর উপজেলার বদনিখালী এলাকার ১৩৩ কেবি ইনকামিং সোর্স লাইনের ওপর গাছটি উপড়ে পড়ে।
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, ঘূর্ণিঝড় ফনির প্রভাবে আস্বাভিক জোয়ারের পানির চাপে বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে পটুয়াখালীর কলাপাড়ার বারোটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফলে এসব গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সরিয়ে নেয়া হয়েছে গবাদি পশুসহ আসবাবপত্র। কুয়াকাটা সংলগ্ন খাজুরা পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে যাবার আশঙ্কায় বালুর বস্তা দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
আটোয়ারী (পঞ্চগড়) উপজেলা সংবাদদাতা জানান, পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ঘুর্নিঝড় ফণি’র আংশিক প্রভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে। বহু ঘরবাড়ি, গাছপালা, বৈদ্যুতিক খুঁটিসহ উঠতি ফসল এবং গৃহপালিত পশুসহ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক ক্ষতিসাধন হয়েছে। এ ঘটনায় গত বুধবার রাত হতে বিদ্যুৎবিহীন পুরো উপজেলা রয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন