স্টাফ রিপোর্টার : সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খায়রুল হককে গণতন্ত্র হত্যায় লুকিয়ে থাকা ‘মীরজাফর’ ও বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিককে বিচারাঙ্গনের ‘খলনায়ক’ বলে আখ্যা দিয়েছে বিএনপি। দলের তরফ থেকে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে যুগ্ম-মহাসচিব রিজভী আহম্মেদ এ অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, এদের দিয়ে বিচার বিভাগকে দখলের অপচেষ্টা করা হয়েছিল। সেই অপচেষ্টার বিষয়ে যখন কেউ সত্য কথা বলে তখনই সরকারের গা জ্বালা করে বলেও অভিযোগ রিজভীর। নয়াপল্টনস্থ দলীয় কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়।
রিজভী বলেন, বর্তমান মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা ন্যায়সঙ্গত, আইনসঙ্গত, সংবিধানসঙ্গত বক্তব্য দেয়ার কারণেই অবৈধ ক্ষমতাসীনরা দিশেহারা হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বানোয়াট ও মিথ্যা, দেশদ্রোহী মামলা দায়ের করেছে। তারা জাতীয়তাবাদী শক্তির প্রধান প্রতীক খালেদা জিয়াকে গ্রেফতার ও মামলার ভয় দেখিয়ে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূল করে সারাদেশটা দখল করতে চায়। কিন্তু তাদের দিবাস্বপ্ন ও স্বেচ্ছাচারী পাথরপ্রতীম দুঃশাসন যে যেকোন মুহূর্তে জনরোষে ধুলোয় লুটিয়ে পড়বে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আইডিই নির্বাচনে ভোটাররা যাতে বিএনপি সমর্থিত কবির- সাইফুজ্জামান প্যানেলের পক্ষে ভোট দিতে না পারে সেজন্য আওয়ামী সমর্থিত প্যানেলের সন্ত্রাসীরা ও স্থানীয় যুবলীগ-ছাত্র লীগ বাহিনী সকালে কাকরাইলের আইডিই ভবনে হামলা চালিয়ে আমাদের প্রার্থী ও ভোটারদের কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়েছে। এটা কেবল ঢাকায় নয়, সিলেট, গাজীপুর, লক্ষীপুরসহ বিভিন্ন কেন্দ্র থেকে একইভাবে তারা আমাদের সমর্থিতদের ন্যাক্করজনকভাবে বের করে দিয়েছে। এর প্রতিবাদে আমাদের প্রার্থীরা ভোট বর্জন করেছে এবং তারা পুনর্নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। আমরা শাসকগোষ্ঠির এহেন ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
ঢাকা আইডিই ভবন কেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হওয়ার সময় নির্ধারিত থাকলেও দেড় ঘন্টা বিলম্বে সাড়ে ৯টায় ভোট গ্রহণ শুরু হওয়াকে ‘রহস্যজনক’ বলে অভিহিত করেন রিজভী।
সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা হয়েছে সাড়ে ৯টায়। এটা রহস্যজনক। শুরু আধা ঘণ্টার মধ্যে আওয়ামী লীগের সমর্থিত সন্ত্রাসীরা কবির-সাইফুজ্জামান প্যানেলের সকলকে বের করে দেয়।
আইডিই নির্বাচনে এবার ক্ষমতাসীন সমর্থিত একেএম হামিদ ও শামসুর রহমান প্যানেল এবং তাদের বিদ্রোহী প্রার্থী রব ভুঁইয়া ও মাইনুর রহমান প্যানেল এবং বিএনপি সমর্থিত মো. কবির হোসেন ও ইবনে ফজল সাইফুজ্জামান (সন্টু) প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
আইডিই নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র দখলের অভিযোগ তুলে রিজভী বলেন, বিরোধী দলকে আটকিয়ে রাখা ছাড়া সরকার নিজেদেরকে নিরাপদ মনে করে না এবং স্বস্তি পায় না। একারণে নির্বাচন, ভোট সব কিছুকেই তারা বিপজ্জনক মনে করছে। সুতরাং দখল করা আর সব কিছু কেড়ে নেয়া হচ্ছে এখন তাদের রাজনৈতিক নীতি ও দর্শন।
যেভাবে পুলিশ ও র্যাবকে নিজেদের দলীয় লোক দিয়ে পরিচালিত লোক দিয়ে করা হচ্ছে, জনপ্রশাসনকে যেভাবে আওয়ামীকরণ করা হয়েছে, যেভাবে গণতন্ত্র হত্যার লুকিয়ে থাকা মীরজাফর সাবেক প্রধান বিচারপতি খায়রুল হক ও বিচারাঙ্গনের খলনায়ক বিচারপতি শামসুদ্দিন মানিককে দিয়ে বিচার বিভাগকে দথলের চেষ্টা করা হয়েছিলো। তাদের অপচেষ্টার বিষয়ে যখনই কেউ সত্য কথা বলেন, তখনই তাদের গা জ্বালা করেন। যেমন বর্তমান মাননীয় প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ন্যায়সঙ্গত, আইনসঙ্গত, সংবিধান সঙ্গত বক্তব্য দেয়ার কারণেই অবৈধ ক্ষমতাসীনরা দিশেহারা হয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে বানোয়াট ও মিথ্যা দেশদ্রোহী মামলা দায়ের করেছে।
একই সঙ্গে দলের ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি আত্মসমর্পণের পর জেলে পাঠানোর নিন্দা জানিয়েছে অবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছেন রিজভী।
আইডিই নির্বাচনে বিএনপির সমর্থিত প্যানেলের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মো. কবির হোসেন বলেন, সারাদেশে আমাদের ৬৮টি কেন্দ্র রয়েছে। ঢাকাসহ বিভিন্ন কেন্দ্রে ক্ষমতাসীনরা আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে এরকম ঘটনা ঘটিয়ে আমাদের ভোটারদের বের করে দিয়েছে। আমরা ভোট ছিনতাইয়ের প্রতিবাদে ভোট বর্জন করেছি। একই সঙ্গে যতগুলো কেন্দ্রে ভোট ছিনতাই হয়েছে সেখানে পুনর্নির্বাচনের দাবি করছি।
সংবাদ সম্মেলনে দলের শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদ খায়রুল কবির খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, আসাদুল করীম শাহিন, রফিক শিকদার, মৎসজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আইডিই’র কবির-সাইফুজ্জামান প্যানেলের প্রার্থী প্রকৌশলী ইমাম উদ্দিন, মীর হোসেন পাটোয়ারি, মিজানুর রহমান, গোলাম কিবরিয়াম, মোস্তফা মোল্লা, লুৎফর রহমান খান প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন