একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী এমপিদের শপথ গ্রহণ ইস্যুতে ২০দলীয় জোটের টালমাটাল অবস্থা। এবার এ ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টেও ঝড় উঠতে যাচ্ছে। নির্বাচনের পর থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে দ্ব›দ্ব-কলহ চলছে। সে দ্ব›দ্ব এবার প্রকাশ্য বিদ্রোহে রূপ নিতে যাচ্ছে। ঐক্যফ্রন্ট থেকে তিনটি দল বেরিয়ে যেতে পারে। এ ছাড়া বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ড. কামাল হোসেনকে নিয়ে যে ক্ষোভ ও সন্দেহ বিরাজ করছে তাতে ড. কামাল নিজেই বিএনপি ছেড়ে একা চলার ঘোষণা দিতে পারেন।
এ ইস্যুতে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী আজ সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন। সেখান থেকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা আসতে পারে। জোট ছাড়ার ঘোষণা হলে এর সঙ্গে একাত্ম হয়ে জেএসডি নেতারাও সে পথে হাঁটতে পারেন। নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না শপথ ইস্যুতে ফ্রন্টের ওপর তার ক্ষোভ ও অসন্তোষের বিষয়টি স্পষ্ট করে বলেছেন। সব মিলিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টও সন্দেহ আর অবিশ্বাসের ঝড়ো হাওয়ার মুখোমুখি। যে কোন সময় এ ঝড়ে ঐক্যফ্রন্টের নড়বড়ে বন্ধনকে ছিন্নভিন্ন করে দেবে। এমনও হতে পারে ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতারা বিএনপি ছাড়াই পথচলার ঘোষণা দিতে পারেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ভেতরে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিরোধ দেখা দেয়। সে মতবিরোধ এখনও আছে এবং এ কারণে সরকারবিরোধী রাজনৈতিক কর্মসূচি দেয়া যাচ্ছে না। এতে বিএনপির তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং সে ক্ষোভ দিনে দিনে চরম আকার ধারণ করছে। ঐক্যফ্রন্ট ছেড়ে নিজেদের ২০দলীয় জোট নিয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সনের মুক্তির দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি দেয়ার দাবি উঠেছে। এ বিষয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা প্রচন্ড চাপে রয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গতবছর ১৩ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ২০ দলকে প্রায় অকার্যকর করে ঐক্যফ্রন্টকেই অগ্রাধিকার দেয় বিএনপি। কিন্তু নির্বাচন এবং পরবর্তী সময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। যে লক্ষ্য, উদ্দেশ্য নিয়ে ফ্রন্ট গঠন করা হয়েছিল তা বাস্তবায়নে সুনির্দিষ্ট কোনো কর্মপন্থা বা কর্মসূচি নেই। এমন পরিস্থিতিতে ফ্রন্টের শরিকরা যে যার মতো করে বেরিয়ে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন বলে একাধিক সূত্র জানা যায়।
সূত্র জানায়, এমপিদের শপথকে ঘিরে ফ্রন্টের শরিকদের মধ্যে চলছে অস্থিরতা। এমন পরিস্থিতিতে করণীয় চূড়ান্তে আজ (বৃহস্পতিবার) জরুরি বর্ধিত সভার আহবান করেছে ফ্রন্টের অন্যতম শরিক বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ। দলের বর্ধিত সভার পর বঙ্গবীর জরুরি সংবাদ সম্মেলনও করবেন। সেখানে বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে দলের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত তুলে ধরবেন তিনি। অনেকেই ধারণা করছেন তিনি ফ্রন্ট ছাড়ার ঘোষণা দিতে পারেন।
এলডিপি ২০ দলীয় জোটে থাকবে : কর্নেল অলি
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম বলেছেন, এলডিপি ২০ দলীয় জোটে আছে এবং থাকবে। অথচ কেউ কেউ এলডিপি সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। এলডিপি ২০ দলীয় জোট ছাড়ছে তথ্যটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন। গতকাল বুধবার এলডিপির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও পার্টির প্রেসিডেন্ট ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম এ বিষয়ে কাউকে কোনো বক্তব্য দেননি। এলডিপি ২০ দল ছাড়ছে এমন সংবাদ যারা পরিবেশন করছেন তারা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ভিত্তিহীন সংবাদ পরিবেশন করছেন।
এ ধরনের মিথ্যা তথ্য পরিবেশন থেকে ড. কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীরবিক্রম সকল গণমাধ্যমকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন