ছালাহউদ্দিন, আরব আমিরাত থেকে ঃ আরব আমিরাতে বাংলাদেশের বন্ধ শ্রমবাজার প্রায় চার বছরেও খোলার অগ্রগতি না হওয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা শ্রমিক নিয়োগে এখন ঝুঁকে পড়েছেন ভারত ও পাকিস্তানের দিকে। ইতোমধ্যে পর্যাপ্ত শ্রমিক এনেছেনও তারা। তবে উদ্যোক্তাদের দুর্বলতার সুযোগটি কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশের শ্রমবাজারটি এখন লুফে নিচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান।
এদিকে, বাংলাদেশি মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শতকরা ৭০/৮০ জনই এখন কাজ করছে ঐসব দেশের শ্রমিক। দেশটির বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ঘুরে দেখা গেছে, এমন চিত্র। জানা গেছে, আরব আমিরাতে অবস্থানরত ভারত ও পাকিস্তানের রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো এবং কিছু আদম ব্যবসায়ী তাদের দেশের পর্যাপ্ত শ্রমিক সরবরাহে প্রতিযোগিতায় নেমেছে। প্রতিদিন কোন না কোন বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানে এসে খোঁজ-খবর নিয়ে শ্রমিক চাহিদা অনুপাতে লোক সরবরাহের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে ওইসব দেশের শ্রমিক বাংলাদেশি শ্রমিকদের তুলনায় তেমন দক্ষ নয় বলে অনেকেই আনতে চাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে রিক্রুটিং এজেন্সি ও আদম ব্যবসায়ীরা কৌশল অবলম্বনে ভিজিট ভিসায় লোক এনে বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠানগুলোতে হাজির করিয়ে কাজের দক্ষতা প্রমাণে নিয়োগ ভিসা লাগিয়ে দিচ্ছে। অপরদিকে, নিয়োগ ভিসা বন্ধ ও শ্রমিকদের অন্যত্র মালিক পরিবর্তনের (ট্রান্সফার) সুযোগটিও না থাকায় নিরুপায় বাংলাদেশিরাও বাধ্য হয়েই তাদের প্রতিষ্ঠানে ওইসব দেশের শ্রমিক নিয়োগ দিচ্ছেনÑ যা দেশটিতে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে অশনি সঙ্কেত হিসেবে দেখছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
এদিকে, দীর্ঘ প্রায় ৪ বছরেও আমিরাতে বন্ধ ভিসা উন্মুক্ত না হওয়ায় নিজেদের দুর্ভাগ্য হিসেবে উল্লেখ করে ভুক্তভোগী প্রবাসীরা বলেন, অন্যথায় বন্ধ ভিসা খোলার ব্যাপারে এতদিন লাগার কথা নয়। তারপরও তাদের দাবি দু’দেশের কূটনৈতিক তৎপরতা আবারো জোরদার করে খুব শিগগিরই ভিসা খোলার ব্যবস্থা করা হোক। নচেৎ ভারত ও পাকিস্তানের নাগরিকরা সুযোগ যেভাবে লুফে নিচ্ছে তাতে অচিরেই ওই দু’টি দেশের দখলে চলে যাবে বাংলাদেশের বৃহত্তম এ শ্রমবাজার। চলমান প্রেক্ষাপটে এমনটিই আশঙ্কা করছেন প্রবাসীরা।
উল্লেখ্য, কতিপয় বাংলাদেশির অপরাধ-কর্মকা-ে ২০১২ সালের আগস্টে বাংলাদেশি শ্রমিকদের নতুন নিয়োগ ভিসা বন্ধ করে দেয় আরব আমিরাত সরকার।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন