মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

খুলনায় যুবলীগ সম্মেলন ঘিরে নানা গুঞ্জন

আবু হেনা মুক্তি | প্রকাশের সময় : ১২ মে, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

খুলনার রাজনীতির অঙ্গনে মহানগর যুবলীগ সম্মেলন ঘিরে চলছে নানা গুঞ্জন। গত দেড় যুগেও খুলনা মহানগর যুবলীগের সম্মেলন না হওয়ায় দলের ভেতর ক্ষোভ বিক্ষোভ গ্রুপিং লবিং ও হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। কবে নাগাদ এ সম্মেলন হবে তা নিয়েও অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে ঈদের পরে সম্মেলন হবে এমন গুঞ্জন চলছে সর্বত্র। ২০০৩ সালে অ্যাড. আনিসুর রহমান পপলুকে সভাপতি, আলি আকবর টিপুকে সাধারন সম্পাদক করে সর্বশেষ সম্মেলন হয়েছিলো।
এদিকে সেই সময়ে বিভাগীয় যুব সমাবেশ সামনে রেখে খালিশপুরের একটি তুচ্ছ ঘটনা কেন্দ্র করে অন্তঃকোন্দল সভাপতি পপলু এবং টিপুর মধ্যে ভাইরাসের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পপলু ও টিপুর মধ্যে সংঘর্ষ, মহড়া, হামলা, পাল্টা হামলা হলে সেই কমিটি ৬ মাসের মধ্যে ভেঙ্গে দেয় কেন্দ্রিয় কমিটি। দুই নেতার মধ্যে সমন্বয়হীনতা, দলিয় কোন্দল, উপদলিয় কোন্দলের কারনে এর পরে যুবলীগ কমিটিবিহীন ছিলো প্রায় ৬ বছর।
এর মধ্যেই ওয়ান ইলেভেন, শেখ হাসিনা গ্রেফতার, জাতীয় নির্বাচনের কারণে একটি লম্বা সময় পার হয়ে যায়। ২০০৯ সালে আওয়ামীলীগ সরকার গঠন করে। জানা গেছে, পপলুকে আহবায়ক, মনিরুজ্জামান সাগরকে যুগ্ম আহবায়ক করে ৫১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি করা হয় ২০০৯ সালের ১১ জানুয়ারি। সংগঠনের তৎকালিন কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহাঙ্গির কবির নানক, সাধারণ সম্পাদক মির্জা আজম এ কমিটির অনুমোদন দেন। সেই আহবায়ক কমিটিই চলছে ১০ বছর ধরে।
সংগঠনের সম্ভাব্য সম্মেলনের কথা প্রসঙ্গে বর্তমান আহবায়ক অ্যাড. আনুসুর রহমান পপলু আলাপকালে বেশ কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন, সম্মেলন করার মালিক আমি নই, কেন্দ্র বা স্থানীয় মূল নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিলে আমরা তা বাস্তবায়ন করে দেব একজন কর্মী হিসাবে। তবে দলের স্বার্থে ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, ঈদের পরেই মহানগর যুবলীগের সম্মেলন হচ্ছে। খুলনায় অবস্থিত শেখ পরিবারের নির্দেশনায় পরিচ্ছন্ন একটি কমিটি হবে এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
খুলনার রাজনীতিতে সংগঠন হিসাবে যুবলীগ একটা ফ্যাক্টর। মূল দল আওয়ামীলীগের প্রতিটি কর্মসূচিতেই যুবলীগ ভ্যানগার্ডের মতো ঝাঁপিয়ে পড়ে। বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র শেখ সোহেল নিয়মিত যুবলীগকে টেক কেয়ার করার কারণে দেশের অন্য আর দশটি জেলার তুলনায় এখানে যুবলীগের চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, দখলের বদনাম নেই বললেই চলে। দলের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকলেও কোন্দল বা হানাহানির ঘটনা আপাতত নেই। যুবলীগ করে এসেছেন এমন অনেকেই এখন মূল দল আওয়ামীলীগ মহানগর শাখা কিংবা থানা শাখার নেতা। একই অবস্থা ওয়ার্ড কমিটিগুলিতেও। সূত্রমতে, শহিদুল বন্দ, আনিসুজ্জামান, সাবেক সাধারন সম্পাদক টিপু , হাফেজ শামিম, হাফিজুর রহমান হাফিজ, আমির হোসেনরা আজ যুবলীগের মধ্য দিয়েই আওয়ামীলীগের নেতা হিসাবে কাজ করছেন। তরুন নেতা হিসাবে মূল দলেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। জানা গেছে, ৫১ সদস্যের এক দশকের চলমান আহ্বায়ক কমিটির কেউ কেউ মারা গেছেন, কর্মক্ষেত্র চেঞ্জ করে কেউ ঢাকাবাসি হয়েছেন, কেউ মূল দলেও চলে গেছেন। অন্যদিকে, সভাপতি প্রার্থী হিসাবে এখন সবচেয়ে আলোচিত সাবেক ছাত্রনেতা শফিকুর রহমান পলাশ। বর্তমান কমিটির সদস্য পলাশ একজন সফল সংগঠক, কর্মীবান্ধব নেতা হিসাবে সারা শহরেই নেতাকর্মীদের কাছে সমাদৃত। খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের অনুসারি পলাশ এক সময়ে ছাত্রলীগ খুলনা মহানগর শাখার সভাপতি ছিলেন।
খুলনা আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক অভিভাবক হিসাবে পরিচিত শেখ পরিবারের কাছেও পলাশ আস্থাশীল। খুলনা মহানগর ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি শেখ সুজনকে রানিংমেট করে পলাশ সভাপতি, সুজন সাধারন সম্পাদক এমন ক্যাম্পেইন চলছে দীর্ঘদিন ধরে। ছাত্রলীগের বর্তমান সভাপতি শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন অত্যন্ত ক্লিন ইমেজের ভদ্র নেতা। তিনি মহানগর জেলা ও শেখ পরিবারের আস্থাভাজন। শহরময় রয়েছে তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা। এর বাইরে, মুন্সি নাহিদ হোসেন, হাফিজুর রহমান হাফিজ, এস এম আকিল উদ্দিন, মোহাম্মাদ শাকিল, খালিশপুরের আহবায়ক, মোহাম্মাদ সাইদ, দৌলতপুরের মাসুদ বন্দ, খানজাহান আলি থানার অধ্যক্ষ মেহেদি হাসান, মহানগর যুবলীগের সদস্য রানা পারভেজ সোহেল, যুবলীগের মহানগর সদস্য রোজি ইসলাম নদি, মিজানুর রহমানরা ভালো পদ পদবি পাবেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে কেউ কেউ সাধারন সম্পাদক প্রার্থী হবেন এমন গুঞ্জন রয়েছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন