কাপ্তাই উপজেলা সংবাদদাতা : কাপ্তাইয়ে বিজিবির ধাওয়ায় পাচারকারীদের একটি গাড়ি গাছের সাথে ধাক্কা লেগে উল্টে গিয়ে চালক-হেলপার নিহত হয়েছেন। সিন্ডিকেট দলের লোকজন এলাকাবাসীকে উত্তেজিত করে বিজিবির ক্যাম্প পোষ্ট ও আসবাবপত্র ভাঙচুর করে এবং পরে অগ্নিসংযোগ করে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি করা হয়। ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে। সুত্রে জানা যায়, কাপ্তাই চন্দ্রঘোনা থানার অন্তর্গত ১৯ বিজিবির আওতাধীন ডংছড়ি ক্যাম্পে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে কাঠ বহনকারী ১টি চাঁদের গাড়ি (মেহেরপুর খ-২) আসলে ক্যাম্পোর দায়িত্বরত টহলদল গাড়িটিকে থামানোর সিগন্যাল দেয়। কিন্ত চালক গাড়ি না থামিয়ে বিজিবির ক্রসলাইনের বাঁশ ভেঙে গাড়ি দ্রুত চালিয়ে নিয়ে যায়। এতে বিজিবির টহলদল ধারণা করে গাড়িতে কোনো দামী চোরাইকাঠ বা অস্ত্র বহন করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে তারাও গাড়িটির পিছু নেয়। এ অবস্থায় গাড়িটি বেপরোয়াভাবে চলতে গিয়ে ক্যাম্প থেকে কিছু দূরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সাথে লেগে খাদে পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলে হেলপার সদ্দাম হোসেন (৩৫) মারা যায়। আর চালক জাবেদ আলী গুরুতরভাবে আহত হলে রাতে চট্টগ্রাম নেওয়ার পর মারা যায় বলে জানা যায়।
এ সময় পাচারকারী দলের কিছু জনগোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ হয়ে নিহত হেলপারের লাশ বিজিবি ক্যাম্পের নিচে এনে বিজিবিকে দায়ী করে এলাকাবাসীকে উত্তেজিত করে তোলে। এতে এলাকাবাসী এবং পাচারকারীরা উত্তেজিত হয়ে বিজিবি ডংছড়ি চেক পোস্টে হামলা করে প্রথমে ভাঙচুর ও পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় আত্মরক্ষার্থে বিজিবির ক্যাম্প কমান্ডার নায়েক সুবেদার এবাদৎ হোসেন ৫ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়েন। পাচারকারী চাঁদের গাড়িটিকে সেগুন ও বিবিধ কাঠসহ আটক করে স্থানীয় বন বিভাগের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে বলে বিজিবি সূত্রে জানা যায়। গতকাল (শুক্রবার) কাপ্তাই ১৯ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল সোহেল উদ্দিন পাঠান বলেন, আমরা দেশের শান্তিশৃঙ্খলা ও পাচার রোধ করে আসছি। কোনো সংঘর্ষ বা দাঙ্গা করার জন্য নয়। কাঠ পাচারকারীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় নিজেদের গাড়ি উল্টে ঘটনাস্থলে মারা যায়। এতে বিজিবির কোনো ধরনের হাত নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি আরো বলেন এ ঘটনায় চন্দ্রঘোনা থানা ও রাঙ্গুনিয়া থানায় ১৭ জনের বিরুদ্ধে সরকারী সম্পদ ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ এবং পাচারের দায়ে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমান এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, কাপ্তাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দিলদার হোসেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারিকুল আলম কাপ্তাই থানার ওসি রঞ্জনকুমার সামান্ত ও চন্দ্রঘোনার থানার ওসি জহিরুল আনোয়ার উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন