স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক সেনা প্রধান মাহবুবুর রহমান বলেছেন, মহাভারতের কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধে যতো রক্তপাত হয়েছিল তার চেয়ে বেশি রক্তপাত ঘটেছে চলমান ইউপি নির্বাচনে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। তাদেরকে আমি শহীদ আখ্যা দিতে চাই। এ নির্বাচন শহীদের নির্বাচন। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, কেন ও কার জন্য ইউপি নির্বাচন?
গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনের ভাসানী মিলনায়তনে এক আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন। বিএনপি জিয়ার আদর্শ থেকে অনেক দূরে সরে গেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে ‘প্রাক্তন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ফাউন্ডেশন’ নামের একটি সংগঠন এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
প্রসঙ্গত: কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধ একটি পৌরাণিক যুদ্ধ মহাভারতে যার বর্ণনা আছে। একই পরিবার উদ্ভূত পান্ডব ও কৌরব শিবিরের মধ্যে। এই যুদ্ধের বাণী হলো, ধর্মের জয় ও অধর্মের বিনাশ। পান্ডবরা ন্যায়, কর্তব্য ও ধর্মের পক্ষ। অন্যদিকে কৌরবরা অন্যায়, জোর-জবরধস্তি ও অধর্মের পক্ষ। কথিত আছে, খ্রিস্টপূর্ব ৫০০-৬০০ অব্দে বর্তমান ভারতের হরিয়ানায় এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, স্থায়ী হয়েছিল মাত্র ১৮ দিন। তবে এ যুদ্ধে ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
আলোচনা সভায় মাহবুবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ সেটা স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক। সেটাতে আমাদের কোনো আক্ষেপ নেই। কিন্তু যখন দুর্বৃত্তদ্বারা সৃষ্ট কোনো দুর্যোগ বা সঙ্কট হয়, সেটা আমাদের সমাজ ও জাতীয় জীবনে অনেক বড় ক্ষতি করে দেয়। সেটা আমাদের জন্য অনেক বেদনাদায়ক হয়। অনেক সময় আমরা তা কাটিয়ে উঠতে পারি না। এই দুর্বৃত্ত সৃষ্ট দুর্যোগ এখনো দেশে চলছে। টুঁটি চেপে আজ গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। বাক স্বাধীনতা আজ রুদ্ধ। দেশে আইনের শাসন নেই।
জিয়াউর রহমানের রাজনৈতিক ও কর্মময় জীবনের উপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শাসনকালের মেয়াদ অল্প হলেও সর্বক্ষেত্রে তিনি বিপ্লব ঘটিয়েছেন। কৃষি, শিল্প, অর্থনীতিসহ সকল ক্ষেত্রে তিনি আমুল পরিবর্তন এনেছেন।
তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমানের চিন্তা, চেতনা ও আদর্শকে আজ আমরা অনেকেই ভুলতে বসেছি। তার চেতনা-আদর্শ থেকে আমরা দূরে সরে যাচ্ছি। এ অবস্থার পরিবর্তন হতে হবে। জিয়ার আদর্শকে ধারণ করেই আমাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
প্রাক্তন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল ফাউন্ডেশন’র প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক আলী আকবর চুন্নুর সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবির বেপারীসহ আয়োজক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা শেষে জিয়াউর রহমানের রূহের মাগফিরাত কামনায় অনুষ্ঠিত মোনাজাত পরিচালনা করেন জাতীয়তাবাদী ওলামা দল ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক ক্বারী রফিকুল ইসলাম।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন