রফিক মুহাম্মদ : আজ ৩০ মে। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম বীর সেনানী, বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা আধুনিক বাংলাদেশের স্থপতি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদাতবার্ষিকী। ১৯৮১ সালের ৩০ মে রাতে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে একদল বিপথগামী উচ্ছৃঙ্খল সৈনিকের হাতে তিনি নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করেন। তখন তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৫ বছর।
জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের ইতিহাসে এক ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ক। তার সততা, নিষ্ঠা, গভীর দেশপ্রেম, কর্মমুখরতা, নেতৃত্বের দৃঢ়তা প্রভৃতি গুণাবলি এ দেশের গণমানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছিল। তার ঘটনাবহুল কর্মময় জীবন বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে চিরস্থায়ী আসন অলঙ্কৃত করে আছে। নানা কারণে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ ও গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়ে স্থান করে নিয়েছেন। তিনি ছিলেন একজন পেশাদার সৈনিক। তা সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের কাছে তার যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল অন্য কোনো রাষ্ট্রনায়কের ভাগ্যে তা জোটেনি। মাত্র ছয় বছর রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। এ অল্প সময়েই তার ওপর সাধারণ মানুষের অগাধ আস্থার তৈরি হয়েছিল। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তার ওপর মানুষের এই আস্থার কোনো কমতি ছিল না। রাষ্ট্র পরিচালনায় তিনি ছিলেন অত্যন্ত সফল একজন রাষ্ট্রনায়ক। তিনি তার সততা ও প্রজ্ঞা দিয়ে এদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে স্বনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করেছিলেন। বাংলাদেশকে একটি আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে জিয়াউর রহমান যখন অক্লান্ত পরিশ্রম করছিলেন, বিশ্বে দ্রুত অগ্রসরমান দেশ হিসেবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছিল, ঠিক তখনই দেশী-বিদেশী চক্রান্তের অংশ হিসেবে ঘাতকদের তপ্ত বুলেটে প্রাণ হারান বাংলাদেশের ইতিহাসের ক্ষণজন্মা এই রাষ্ট্রনায়ক। তিনি যে কত জনপ্রিয় ছিলেন তা বোঝা গিয়েছিল ঢাকায় মানিক মিয়া এভিনিউয়ে অনুষ্ঠিত তার স্মরণকালের বৃহত্তম নামাজে জানাজায়। সেদিন পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছিল ‘একটি লাশের পাশে সমগ্র বাংলাদেশ’। জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপিকে এ দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ভালোবাসে তার কারণেই।
বহুমাত্রিক প্রতিভার অধিকারী জিয়াউর রহমান ১৯৩৬ সালের ১৯ জানুয়ারি বগুড়ার গাবতলী থানার বাগবাড়িতে মাতুলালয়ে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা মনসুর রহমান কলকাতায় একজন কেমিস্ট হিসেবে সরকারি চাকরিতে নিয়োজিত ছিলেন। শৈশব ও কৈশোরের একটি সময় গ্রামে কাটিয়ে তিনি বাবার সাথে কলকাতায় এবং দেশ বিভাগের পর করাচিতে চলে যান। শিক্ষাজীবন শেষে ১৯৫৩ সালে পাকিস্তান মিলিটারি অ্যাকাডেমি কাকুলে অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ভর্তি হন। ১৯৫৫ সালে তিনি কমিশন্ড লাভ করেন। সামরিক জীবনে কঠোর শৃঙ্খলার মধ্যেও তিনি একের পর এক কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে অসীম সাহসিকতার সাথে একটি কোম্পানির অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। তার কোম্পানি যুদ্ধে সর্বোচ্চ খেতাব লাভ করে। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের জন্য তিনি নিজেও একটি পিস্তল উপহার পান। সৈনিক জীবনে তিনি যেমন সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের নৈপুণ্য দেখিয়েছেন, ঠিক তেমনি জাতীয় সঙ্কটকালেও শক্ত হাতে হাল ধরেছেন। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানি বাহিনী যখন এদেশের নিরস্ত্র জনতার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে, রাজনৈতিক নেতারা যে যেদিকে পারেন আত্মগোপন কিংবা পালিয়ে যাওয়ার কাজে ব্যস্ত ছিলেন, জিয়াউর রহমান তখন চট্টগ্রাম কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। বিশ্ব সম্প্রদায়কে বাংলাদেশের মানুষের এ ন্যায়সঙ্গত সংগ্রামে সমর্থনের আবেদন জানান। ৯ মাসের মুক্তি সংগ্রামে তিনি একটি সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে সমরনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। বীরত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বীর-উত্তম খেতাব লাভ করেন।
১৯৭৫ সালে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর এক বিশেষ প্রেক্ষাপটে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ৩ নভেম্বর ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে সামরিক অভ্যুত্থানে খন্দকার মোশতাক আহমদ ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সেনাবাহিনীর তৎকালীন উপপ্রধান মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী করা হয়। জাতির ভাগ্যাকাশে তখন এক অনিশ্চয়তা বিরাজ করছিল। সেনাবাহিনীতে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। অবস্থা এতটাই শোচনীয় ছিল যে, প্রকৃতপক্ষে সে সময় দেশে কোনো সরকার ছিল না। কোথা থেকে কী হচ্ছে তা জানতে পারছিলেন না কেউ। চারদিকে এক অনিশ্চয়তা-বিশৃঙ্খলার মাঝে আধিপত্যবাদের শ্যেনদৃষ্টিতে উৎকণ্ঠিত ছিল গোটা জাতি। ইতিহাসের সেই ভয়াবহ ক্রান্তিকালে সিপাহি-জনতার মিলিত প্রয়াসে জিয়াউর রহমান বন্দিদশা থেকে মুক্ত হন এবং নেতৃত্বের হাল ধরেন। এর পর থেকে জিয়াউর রহমানকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। সততা, দৃঢ়তা ও অসাধারণ মেধার গুণে তিনি শুধুই এগিয়ে গেছেন। ব্যক্তিগত সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা, দৃঢ় নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা, নির্লোভ-নির্মোহ আত্মপ্রত্যয়, গভীর দেশপ্রেম প্রভৃতি গুণাবলি দিয়ে তিনি জাতির মধ্যে নতুন করে জাগরণের সৃষ্টি করেন। প্রতিদিন সারা দেশ চষে বেড়াতেন তিনি। তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব ছিল তিনি বাংলাদেশের মানুষের উপযোগী একটি স্বতন্ত্র জাতীয়তাবাদী আদর্শের বাস্তবায়ন ঘটান। দেশে সমন্বয়ের রাজনীতি চালু করে সবাইকে এক কাতারে নিয়ে আসেন। প্রথমে তিনি জাগদল গঠন করেন। এরপর তার প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল বিএনপিতে একদিকে যেমন বামপন্থীরা স্থান পান, তেমনি ডানপন্থীরাও জায়গা করে নেন। একটি উদার ও মধ্যপন্থী দল হিসেবে বিএনপিকে গড়ে তোলেন তিনি, যা বাংলাদেশের সমাজ বাস্তবতায় সবচেয়ে প্রয়োজন ছিল। তার অমর কীর্তি বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী সংবিধানে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম’ সংযোজন করা। এ ছাড়া তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন, বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা ফিরিয়ে দেন। নিজে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা হলেও তিনি এ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রাখেন। জিয়াউর রহমান বিভক্তির রাজনীতি দূর করে ঐক্যের রাজনীতির ডাক দেন। তিনি উন্নয়ন এবং উৎপাদনের রাজনীতি শুরু করেন। রাজনীতিবিদদের তিনি জনগণের দোরগোড়ায় যেতে বাধ্য করেন। বিশাল কর্মকা-ের সূচনা করে জনগণের মধ্যে তিনি সাড়া জাগান। মাত্র ছয় বছরের জন্য রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পান শহীদ জিয়া। কিন্তু এ ছয় বছরেই তিনি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন এবং তলাবিহীন ঝুড়ির অপবাদ থেকে এ জাতিকে মুক্ত করেন। স্বজনপ্রীতি, সর্বগ্রাসী দুর্নীতি, রাষ্ট্রীয় সম্পদ লুটসহ নানা অপকর্মে জাতির যখন ত্রাহি অবস্থা, ঠিক তখনই জিয়াউর রহমান শক্ত হাতে দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন। তিনি সমগ্র জাতির মধ্যে এক নব জাগরণের সূচনা করেন। বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর প্রেরণা জোগান তিনি। তাকে নিয়ে অনেকেই আজকাল ইঙ্গিতে কটু কথা বলার চেষ্টা করেন। কিন্তু জীবদ্দশায় তাদের কেউ কোনো অভিযোগ তার বিরুদ্ধে দাঁড় করাতে পারেননি। এমনকি তার ব্যক্তিত্ব ও নির্লোভ চরিত্রের কাছে আজকের অনেকের চারিত্রিক দৃঢ়তা মøান হয়ে যেত। সাদামাটা জীবন যাপনের এমন দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ কেন সমসাময়িক রাজনীতিবিদদের ইতিহাসে বিরল। তার চরিত্রে কোনো কপটতা ছিল না। সময় ও রাষ্ট্রের প্রয়োজনে তিনি নেতৃত্বে এসেছেন। কাউকে উৎখাত কিংবা উচ্ছেদ করে তিনি আসেননি। এখানেই জিয়াউর রহমান ও অন্যদের মধ্যে স্পষ্ট পার্থক্য বিদ্যমান। জিয়াউর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন সত্যিকার স্বাধীনতা নিয়ে বাঁচতে হলে বাংলাদেশের একটি শক্তিশালী সামরিক বাহিনী প্রয়োজন। তিনি বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে নতুনভাবে ঢেলে সাজিয়েছিলেন। একটি বহুমাত্রিক সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে তা বাস্তবায়নের আগেই ঘাতকের বুলেটে প্রাণ হারান।
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী এবারে একটু ভিন্ন পরিবেশে পালিত হচ্ছে। শহীদ জিয়ার প্রতিষ্ঠিত দল বিএনপির বহু নেতাকর্মীই বর্তমানে কারাগারে। দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া ও লন্ডনে চিকিৎসাধীন বড় ছেলে তারেক রহমান মামলা মোকদ্দমার মুখোমুখি। সারাদেশের প্রায় সর্বস্তরের নেতাই বিভিন্ন মামলার আসামি। অতীতে কখনোই বিএনপিকে এতটা ঝড়-ঝাঁপটা মোকাবেলা করতে হয়নি। এত কিছু সত্ত্বেও জিয়াউর রহমান আজও তার অমর কীর্তিতে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে স্থান করে আছেন। তার আদর্শ এখনো কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে অম্লান হয়ে আছে।
জিয়ার শাহাদাত বার্ষিকী কর্মসূচি
ঢাকার ৬০টি স্পটে খাবার বিতরণ করা হবে
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তমের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে নানান কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বিএনপি। কেন্দ্রের সাথে মিল রেখে সারা দেশে কর্মসূচি পালন করবে দলটির নেতাকর্মীরা। এর আগে যৌথ সভা করে কর্মসূচি চূড়ান্ত করে বিএনপি এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন।
আজ সকাল ৬ টায় নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল ১০টায় শেরে বাংলা নগরে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করবেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের উদ্যোগে মাজারে পবিত্র কোরআনখানী ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর উদ্যোগে মাজার প্রাঙ্গণে স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন। সকাল ৯টা হতে বিকেল ৪টা পর্যন্ত নয়াপল্টনে বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ড্যাবের উদ্যোগে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান ও ঔষধ বিতরণ করা হবে। দিবসটি উপলক্ষে সারা দেশে শহীদ জিয়ার স্মরণে পোষ্টার সাটানো হয়েছে গ্রাম থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থাপনায়। পত্রিকায় বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে ঢাকা মহানগর বিএনপি’র উদ্যোগে আজ থেকে ১ জুন পর্যন্ত টানা তিনদিন মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে দুস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করবেন বেগম খালেদা জিয়া। এছাড়া ১৫দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিএনপির বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠন শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনাসভা, চিত্র প্রদর্শনী, মিলাদ মাহফিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করছে।
যেসব স্পটে খাবার বিতরণ :
রাজধানীর মোহাম্মদপুর টাউনহল হল থেকে খাবার বিতরণ শুরু হবে। এরপর আদাবর থানা, সুগন্ধা কমিউনিটি সেন্টার (মেডিনোভার সামনে), আজিমপুর বটতলা, জাতীয় প্রেস ক্লাব (ছাত্রদল), আল-হাবিব কমিউনিটি সেন্টারের সামনে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে (জাসাস ও মুক্তিযোদ্ধা দল), পল্টন কমিউনিটি সেন্টারের সামনে (স্বেচ্ছাসেবক দল), মতিঝিল কলোনী কমিউনিটি সেন্টার (আইডিয়াল স্কুলের বিপরীত পার্শ্বে), মাহবুব আলী মিলনায়তন (রেলওয়ে শ্রমিক দল), মির্জা আব্বাসের বাড়ির সামনে, শান্তিনগর বাজার (পল্টন বিএনপি), খিলগাও চৌরাস্তা (জোড় পুকুর খেলার মাঠ), দয়াগঞ্জ মোড় (তিন রাস্তার মোড় যাত্রাবাড়ি, আলম মার্কেট (জুরাইন), শ্যামপুর ঈদগা মাঠ (লাল মসজিদ), যাত্রাবাড়ি শহীদ ফারুক সড়ক, পোস্তগোলা (বটতলা) শ্যামপুর, ধোলাইপাড় বাস স্ট্যান্ড, ডেমরা থানা বিএনপি, বাংলামটর (হাতিরপুল) কলাবাগান থানা বিএনপি, কলাবাগান বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ১ম লেনের সামনে, সুত্রাপুর কমিউনিটি সেন্টার নতুন রাস্তা, নবাবপুর রোড-মদনপাল লেন মোড়, পোস্তামোড় (লালবাগ যুবদল), কোতয়ালী থানা যুবদলের কার্যালয়ের সামনে (নর্থ সাউর্থ রোড়), নয়াবাজার বিএনপি অফিস (বংশাল থানা), কাঠেরপুল গেন্ডারিয়া মোড় (ছাত্রদল দক্ষিণ), আজিমপুর ভিকারুন্নেছা নুন স্কুল সংলগ্ন, লালবাগ হাফেজ মুছা ব্রীজ, মৌলভীবাজার কমিউনিটি সেন্টার-চকবাজার, ঢাকা টেনারী মোড় (হাজারীবাগ), ঢাকাশ্বর বালু মাঠ, সাত মসজিদ রোড (ঈদগা রোডের পশ্চিম পাশে), গাউসিয়া চাঁদনী চকের গেট (নিউ মার্কেট), মালিবাগ ডিআইটি রোড (ফরচুন মার্কেট সংলগ্ন), আজিমপুর ছাপড়া মসজিদ, নয়াপল্টনে হোটেল ভিক্টোরীয়ার সামনে (তৃণমূল দল), খিলক্ষেত নিকুঞ্জ (রিজেন্সি হোটেলের পিছনে বটতলা), আমির কমপ্লেক্স (আজমপুর বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন), অনিক প্লাজার সামনে (পল্লবী), পল্লবী ১২নং বাসস্ট্যান্ড, ন্যাশনাল বাংলা স্কুল (মিরপুর ষ্টেডিয়াম সংলগ্ন), শাহআলী মাজার (মিরপুর), বুদ্ধিজীবী শহীদ মিনার গেইট, শেওড়াপাড়া বাসস্ট্যান্ড, রোকেয়া সরণী, মহাখালী ওয়ারলেস গেইট, টিএন্ডটি মাঠের সামনে (মানিক মিয়া এভিনিউ), মোল্লাপাড়া (মধ্যবাড্ডা), আল-আমিন সুপার মার্কেট (রামপুরা), বিশাল সেন্টার (মগবাজার), বালু নদীর পাড় (খিলক্ষেত থানা ৩০০ ফুট রাস্তা পূর্বাঞ্চল), কাওরান বাজার প্রগতি টাওয়ারের সামনে, সাত রাস্তার মোড়/নাবিস্কো মোড়, শাহ আলী মাজার গেইট সংলগ্ন (বাউল দল) ইত্যাদি ।
বাণী
শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের হত্যার নেপথ্যে দেশি-বিদেশি চক্রান্ত রয়েছে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার এক বাণীতে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের জনপ্রিয়তা দেশি-বিদেশি চক্রান্তকারী শক্তি কখনোই মেনে নিতে পারেনি। ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই অশুভ চক্র তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে থাকে। এই চক্রান্তকারীরা ১৯৮১ সালের ৩০ মে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে হত্যা করে। জিয়াউর রহমানের ৩৫তম শাহাদৎবার্ষিকী উপলক্ষে গণমাধ্যমে এই বাণী পাঠানো হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে একজন মহান দেশপ্রেমিককে দেশবাসী হারায়। তবে চক্রান্তকারীরা যতই চেষ্টা করুক কোন ক্ষণজন্মা রাষ্ট্রনায়ককে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিলেই তিনি বিস্মৃত হন না, বরং নিজ দেশের জনগণের হৃদয়ে চিরজাগরুক হয়ে অবস্থান করেন।
জিয়াউর রহমানের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন বিএনপি মহাসচিব। তিনি বলেন, জাতির চরম দুঃসময়গুলোতে জিয়াউর রহমান দেশ ও জনগণের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। মহান স্বাধীনতার বীরোচিত ঘোষণা, স্বাধীনতা যুদ্ধে অসামান্য ভূমিকা এবং রাষ্ট্র গঠনে তার অনন্য কৃতিত্বের কথা আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি।
মির্জা ফখরুল বলেন, একাত্তরে সারা জাতি যখন স্বাধীনতা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, যখন রাজনৈতিক নেতৃত্বের সিদ্ধান্তহীনতায় দেশের মানুষ দিশেহারা ঠিক সেই মুহূর্তে ২৬শে মার্চ মেজর জিয়ার কালূরঘাট বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা সারা জাতিকে স্বাধীনতা যুদ্ধের অভয়মন্ত্রে উজ্জীবিত করে, ফলশ্রুতিতে দেশের তরুণ, যুবকসহ নানা স্তরের মানুষ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ির আখ্যা থেকে খাদ্য রপ্তানীকারক দেশে পরিণত করেন জিয়াউর রহমান। ব্যক্তিজীবনেও দুর্নীতি, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি ও সুবিধাবাদের কাছে আত্মসমর্পণকে তিনি ঘৃণা করতেন। তার অন্তর্গত স্বচ্ছতা তাকে দিয়েছে এক অনন্য ঈর্ষণীয় উচ্চতা। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে জিয়ার প্রদর্শিত পথ ও আদর্শ বুকে ধারণ করে গণতন্ত্রমনা মানুষকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন