বিশেষ সংবাদদাতা, খুলনা : খুলনা সিটি করপোরেশনে (কেসিসি) প্রায় ৮ কোটি টাকা ২০ লাখ ব্যয়ে অ্যাসফল্ট প্লান স্থাপন প্রকল্পের টেন্ডারটি আওয়ামী লীগ সমর্থিত ঠিকাদার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দফারফা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার শিডিউল জমা দেবার শেষদিনে এঘটনা ঘটে।
প্রথম দু’দফা দরপত্রে অংশগ্রহনকারী ঠিকাদারদের যথাযত যোগ্যতা ছিল না। পরে কতিপয় কর্মকর্তার যোগসাজসে আওয়ামী লীগের নেতার প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেবার চেষ্টায় দরপত্রের শর্ত শিথিল করা হয়। সাধারণ ঠিকাদার ও কেসিসি’র সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. সাইফুল ইসলাম ও সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বুলু বিশ্বাসের নেতৃত্বে তার অনুসারীরা সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত নগরভবনে সশস্ত্র পাহারা দেয়। ফলে গত দু’বারের মতোই কেসিসি’র অ্যাসফল্ট প্লানে প্রায় ৮কোটি ২০ লাখ টাকার প্রকল্পের দরপত্রের শিডিউল জমা দিতে পারেননি সাধারণ ঠিকাদাররা। এরআগে দু’বার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। দু’বারই সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করে একটি অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে কাজটি দেবার সিদ্ধান্ত নেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। পরে এ বিষয়ে পত্রিকায় খবর প্রকাশিত হলে ওই দরপত্র বাতিল করে কেসিসি। ঠিকাদারী কাজটি স্বচ্চভাবে সম্পাদনের জন্য কয়েকজন কাউন্সিলর ও কর্মকর্তাদের অনুরোধ ছিল।
প্রকল্প পরিচালকের দপ্তর সূত্র জানায়, প্রথমবার দরপত্র আহ্বানের বিপরীতে ৬টি ও দ্বিতীয়বারে ৪টি শিডিউল জমা পড়েছিল। তৃতীয়বারের মতো গত ৬ জানুয়ারি প্রকল্পের পুনরায় দরপত্র আহ্বান করা হয়। দরপত্রের অনুকুলে পাঁচটি শিডিউল বিক্রি হয়েছিল। গতকাল দরপত্র জমার শেষ দিনে সরকার কবির আহমেদ, মেসার্স বেলাল এন্ড ব্রাদার্স এবং এম শহিদুল ইসলাম সেনাকল্যাণ সংস্থার নামে এই তিনটা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের শিডিউল জমা পড়ে। ফলে সবধরণের অনুরোধ উপেক্ষা করে সেই অযোগ্য প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিতে তৎপর রয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকতারা।
প্রকল্প পরিচালক ও কেসিসি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আজিজ বলেন, ‘৮ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ের (নতুন দরপত্রে) অ্যাসফল্ট স্থাপন ও সিমিলার কাজের অভিজ্ঞতা হ্রাস করা হয়েছে। নতুন শর্তে যদিও কোন ঠিকাদারের যন্ত্রপাতি সরবরাহের অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে তাদের কাজ দিতে বিবেচনা করা হবে। দাখিলের শেষ দিনে গতকাল তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শিডিউল জমা দিয়েছে। অস্ত্রের মহড়া ও সিন্ডিকেট বা শিডিউল জমা দিতে বাঁধার কোন অভিযোগ আমার কাছে আসেনি।’
একই বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, আসবাবপত্রের কাঠ অনেকেই সরবরাহ করতে পারেন। কিন্তু ভাল খাট-আলমারি তৈরি করতে পারেন একজন যোগ্য মিস্ত্রি। অ্যাসপ্লান্টের বিষয়টিও একই। যন্ত্রপাতি সবাই সরবরাহ করতে পারেন কিন্তু স্থাপনের অভিজ্ঞতা থাকে শুধু যোগ্যদের। এই শর্ত শিথিলের মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে কয়েকজন পদস্থ ব্যক্তি সুবিধা নিয়েছেন। কিন্তু ক্ষতি হবে কেসিসি’র।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন