স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া বলেছেন, নিরাপত্তা স্বার্থে ঈদের পূর্বেই রাজধানীর সকল মার্কেটে ও শপিং মলে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করতে হবে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট দোকান মালিকদের অনুরোধ করা গেল। তিনি বলেন, মাহে রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন মার্কেট ও শপিং মল নিরাপত্তাসহ সার্বিক নিরাপত্তার জন্য বিশেষ মনিটরিং সেল কাজ করবে। পোশাকদারী পুলিশের পাশাপাশি সাদাপোশাকেও পুলিশ দায়িত্ব পালন করবে। বিশেষ করে স্বর্ণের দোকানে দ্রুত সিসি ক্যামেরা বসানো জরুরী হয়ে পড়ছে।
গতকাল ডিএমপি সদরদপ্তরে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কর্তৃক আসন্ন পবিত্র মাহে রমজান ও পবিত্র ঈদ-উল-ফিতর উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর আইন-শৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা সংক্রান্তের এক সভায় পুলিশ কমিশনার এসব কথা বলেন।
পুলিশ কমিশনার বলেন, মলমপার্টি ও অজ্ঞানপার্টির সদস্যরা যেন কোন প্রকার অপতৎপরতা চালাতে না পারে সেজন্য ডিএমপির পক্ষ থেকে বিশেষ পুলিশি ব্যবস্থা থাকবে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও ছিনতাই রোধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করে তিনি বলেন, অপরিচিত কোন ব্যক্তি মোবাইলে হুমকি বা চাঁদা দাবি করলে সাথে সাথে পুলিশকে জানাতে হবে। মোবাইলে হুমকি ও চাঁদাবাজি প্রতিরোধে ডিএমপির সাইবার ক্রাইম ইউনিট তৎপর রয়েছে।
তিনি বলেন, গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতারা যেন নিশ্চিন্তে কেনাকাটা করতে পারে সেজন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এর পক্ষ থেকে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকধারী পুলিশ বিভিন্ন শপিং মলে মোতায়েন করা হবে এবং থাকবে স্পেশাল পুলিশি পেট্রোল ব্যবস্থা।
তিনি যানবাহন ও ট্রাফিক ব্যবস্থা সম্পর্কে বলেন- বাস, লঞ্চ ও রেলওয়ে টার্মিনালে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষে পুলিশের পাশাপাশি কমিউনিটি ট্রাফিক পুলিশি ব্যবস্থা জোরদার করা হবে। টিকেট কালোবাজারি প্রতিরোধ করতে বিভিন্ন টার্মিনালের পুলিশ ফাঁড়িগুলোতে অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হবে। যত্রতত্র স্থানে গাড়ি থামিয়ে যাত্রী উঠা-নামা করা যাবে না। ফুটপাতে, রাস্তার পাশে জনসাধারণের চলাচলে বিঘœ হয় এমনভাবে গাড়ি পার্কিং করা যাবে না।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে যেকোন দুর্ঘটনা এড়াতে টার্মিনাল থেকে বাস ছাড়ার পূর্বে চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স চেক করা হবে। হেলপার দিয়ে যেন গাড়ি চালাতে না পারে সেজন্য প্রত্যেক টার্মিনালে ডিএমপির পুলিশ কর্তৃক ড্রাইভিং লাইসেন্স চেকিং ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে নৌ-পুলিশ ও ডিএমপির উদ্যোগে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে যৌথ নৌ-টহল ব্যবস্থা থাকবে, পাশাপাশি সার্বিক মনিটরিং করার জন্য একটি পুলিশ কন্ট্রোলরুম থাকবে।
আছাদুজ্জামান মিয়া আরো বলেন, আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেখে লঞ্চ ছাড়তে হবে এবং নৌকা দিয়ে যেন কোন যাত্রী লঞ্চে না উঠতে পারে সে বিষয়েও ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিশেষ নজর রাখতে পুলিশকে নিদের্শনা দেয়া হয়েছে। রমজানে ও ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঢাকা মহানগরীর ফুটপাত থেকে অবৈধ দোকানপাট উচ্ছেদ করা হবে। অতিরিক্ত যাত্রী যেন বহন না করতে পারে এবং ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন যেন না চলাচল করতে পারে সেক্ষেত্রেও থাকবে ডিএমপির বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আসন্ন পবিত্র রমজান মাস ও ঈদ-উল ফিতর উপলক্ষে ক্রয়-বিক্রয়, ব্যবসা-বাণিজ্য, অর্থের লেনদেন ও স্থানান্তর বৃদ্ধি পাবে। কোন ব্যক্তি, সংস্থা, ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান অর্থ স্থানান্তরের জন্য পুলিশের সহায়তা প্রয়োজন মনে করলে সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করবে। থানা অপারগ হলে পুলিশ এস্কর্ট প্রত্যাশী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে লিখিত আবেদনের মাধ্যমে আব্দুল গণি রোডস্থ পুলিশ কন্ট্রোলরুমে গাড়ি পাঠালে মানি এস্কর্টে পুলিশি সহায়তা পাওয়া যাবে। যে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পুলিশি এস্কর্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সম্মানিত নগরবাসীকে অনুরোধ জানান।
ডিএমপি কমিশনার ইফতার, তারাবি ও সেহেরির সময় নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা রাখার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান। তিনি গার্মেন্টস মালিকদেরকে অনুরোধ করে বলেন সময়মতো গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতন ও ভাতাদি পরিশোধ করার জন্য, যেন উক্ত বিষয় নিয়ে মাহে রমজান ও ঈদ-উল-ফিতরে কোন প্রকার নাশকতার সৃষ্টি না হয়। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ব্যাপারে তিনি বলেন-ডিএমপির পক্ষ থেকে ডিবি-পুলিশ কর্তৃক বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা করা হয়েছে, যেন কোনভাবেই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি না করতে পারে।
সভায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন