রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

দুই শিক্ষকের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা স্কুলছাত্রী

লক্ষ্মীপুর ও পিরোজপুরে গণধর্ষণসহ শিকার আরো ৪ : আটক ৬

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৭ জুন, ২০১৯, ১২:০৬ এএম

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে দুই শিক্ষকের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েছে এক স্কুলছাত্রী। লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে হাত-পা বেঁধে এক নারীকে (৫০) গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। পিরোজপুরে রক্তাক্ত অবস্থায় মাছের ঘেরে স্কুলছাত্রীকে ফেলে গেল ধর্ষক। এছাড়া নঁওগা গোয়াল ঘরে ডেকে নিয়ে প্রতিবন্ধী স্কুলছাত্রীকে ও নেত্রকোনায় মাদরাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণ মামলায় পুলিশ ৬ জনকে আটক করেছে ।

সুনামগঞ্জ : সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে দুই শিক্ষকের ধর্ষণে অন্তঃসত্ত¡া হয়ে পড়েছে এক স্কুলছাত্রী। টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি শেষ করার চাপ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। পারিবারিক স‚ত্রে জানা যায়, জগন্নাথপুরের খাসিলা প‚র্বপাড়া গ্রামের ওই কিশোরী স্থানীয় আটপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। পাশাপাশি বাড়ি বাপ্পা ও কিশোরীর। সৈয়দ আইডিয়াল গার্লস হাইস্কুলের শিক্ষক মিশন সেন বাপ্পা ওই কিশোরীকে বাড়িতে প্রাইভেট পড়াতো। প্রাইভেট পড়ানোর সুবাধে বাপ্পা প্রায় সময় মেয়েটিকে কু-প্রস্তাব দিতো। এমনকি প্রেমেরও আবেদন জানায়। কিন্তু ওই কিশোরী কখনোই বাপ্পার প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি।

গত মার্চ মাসে ওই কিশোরী জেএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করতে স্কুলে যায়। স্কুল থেকে ফেরার পথে কলকলি বাজারের কাছে ব্রিজের ওপর ওঠামাত্র বাপ্পা কাউছার ড্রাইভারের সিএনজি অটোরিকশাতে জোরপূর্বক তুলে নেয়।
ছাতক উপজেলার চানপুরে তার বন্ধু আব্দুস সামাদ আজাদের বসতঘরের দোতলায় প্রথমে বাপ্পা এবং পরে আজাদ ওই কিশোরীকে জোরপ‚র্বক ধর্ষণ করে। প্রায় তিন ঘণ্টা তারা ওই ঘরে বন্দি রেখে ধর্ষণের পর মোবাইল ফোনে সেটির ভিডিও ধারণ করে। এরপর আবার সিএনজি অটোরিকশাযোগে বাপ্পা তাকে জগন্নাথপুরে নিয়ে আসে।পরে নিজের বাসায় গিয়ে ওই কিশোরী ধর্ষণের কথা তার পরিবারের কাছে জানায়। এঘটনায় থানায় মামলা করে কিশোরীর পরিবার।

জগন্নাথপুর থানার ওসি (তদন্ত) নব গোপাল জানিয়েছেন, প্রধান আসামি বাপ্পা ঘটনা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিম‚লক জবানবন্দি দিয়েছে। সিএনজি অটোরিকশাযোগে মেয়েটিকে নিয়ে সে ও আজাদ মিলে ধর্ষণ করে বলে জানায়। আব্দুস সামাদ আজাদ নামের আরেক স্কুলশিক্ষক পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ল²ীপুর : ল²ীপুরের রায়পুরে হাত-পা বেঁধে এক নারীকে (৫০) গণধর্ষণের ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে উপজেলার উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের চর আবাবিল গ্রাম থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। এর আগে বুধবার (১২ জুন) রাতে উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে।

থানা পুলিশ জানায়, গ্রেফতাররা হলেন- মো. মাসুদ (২৫) ও বাচ্চু (২৭)। মাসুদ উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের আলাউদ্দিন মাঝির ছেলে ও বাচ্চু ১ নম্বর ওয়ার্ডের সৈয়দ আহমেদ ব্যাপারীর ছেলে।

স্থানীয় স‚ত্র ও পুলিশ জানায়, উপজেলার উত্তর চর আবাবিল ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের এক রিকশাচালকের ঘরে বুধবার গভীর রাতে কয়েক যুবক ডুকে স্বামীর অনুপস্থিতিতে স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে জোরপ‚র্বক ধর্ষণ করে। পরে ওই নারী অচেতন হয়ে পড়েন। অবস্থা বেগতিক দেখে ধর্ষকরা নির্যাতিতকে রাতেই পাশের চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায় তুলে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়।

এ সময় বিষয়টি নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য তাকে ভয়ভীতি দেখানো হয়। ঘটনাটি জানাজানি হলে নির্যাতিত নারী রোববার সকালে থানায় এসে পুলিশকে জানায়। পরে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে চর আবাবিল গ্রাম থেকে দুই আসামিকে গ্রেফতার করে। রায়পুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তোতা মিয়া বলেন, দুই আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, ল²ীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের আবদুল্যাহপুর এলাকায় ১০ বছরের শিশুকে অটোরিক্সায় তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে অটোরিক্সা চালক দুলাল হোসেনকে আটক করছে পুলিশ। গতকাল দুপুরে আবদুল্যাহপুর এলাকা থেকে অটো রিক্সাচালক দুলালকে আটক করা হয়। আটককৃত দুলাল হোসেন সদর উপজেলার রাজিবপুর এলাকার সফিক মিয়ার ছেলে।

পিরোজপুর : পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলায় সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণ শেষে মাছের ঘেরে ফেলে গেছে ধর্ষক। গত শনিবার রাত ১০টার দিকে উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের পশ্চিম যুগিয়া গ্রামের তারাকান্ত রায়ের মাছের ঘেরে এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণে সহায়তার ঘটনায় গৌতম শিকারী (২০) নামে এক যুবককে গতকাল দুপুরে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত গৌতম শিকারী উপজেলার মালিখালী ইউনিয়নের পশ্চিম যুগিয়া গ্রামের গৌর শিকারীর ছেলে। নাজিরপুর থানা পুলিশের ওসি মো. জাকারিয়া বলেন, ধর্ষণে সহায়তাকারীকে গ্রেফতার করা সম্ভব হলেও ধর্ষক পলাতক রয়েছে। তাকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা হয়েছে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা জানান, শনিবার রাত ১০টার দিকে একই গ্রামের গৌর শিকারীর ছেলে গৌতম শিকারী ও রবিন শিকারীর ছেলে রমেন শিকারী মেয়ের মুখে গামছা বেঁধে কান্তরায়ের মাছের ঘেরে নিয়ে যায়। সেখানে রমেন শিকারী মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে মেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে রক্তাক্ত অবস্থায় রেখে পালিয়ে যায় তারা। মেয়েকে ঘরে না পেয়ে দাদা-দাদি স্থানীয়দের সহায়তায় খোঁজাখুঁজি করে রাত ১২টার দিকে ওই ঘের থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছে। এ ঘটনায় আমি থানায় মামলা করেছি। ধর্ষকের উপযুক্ত বিচার চাই আমি।

নওগাঁ : নওগাঁর বদলগাছীতে তৃতীয় শ্রেণির প্রতিবন্ধি স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমঝোতার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন ধর্ষিতার মা। থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দীনের সাথে কথা বললে তিনি জানান বিষয়টি তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নেত্রকোনা : নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলায় মাদরাসা পড়ুয়া এক ছাত্রী (১১) ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় করা মামলায় অভিযুক্ত প্রতিবেশী জানু মিয়াকে (৬০) গ্রেপ্তার করেছে আটপাড়া থানা পুলিশ।
নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মো. শাহ্জাহান মিয়া জানান, শনিবার দুপুরে জানু মিয়াকে উপজেলার কৈলং গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয়।

ধর্ষণের শিকার ছাত্রীর চাচি জানান, প্রতিবেশী জানু মিয়া নিজের ঘর খালি থাকার সুযোগে ওই ছাত্রীকে তার গরে ডেকে নেন। পরে তাকে আটকে মুখ চেপে ধরে ধর্ষণ করে। হঠাৎ চিৎকার করার সুযোগ পেলে শিশুছাত্রী চিৎকার শুরু করে। তা শুনতে পেয়ে তার প্রতিবন্ধী বাবা ছুটে যান। শিশুর বাবা জানুকে ধরে ফেললেও ধস্তাধস্তি করে তিনি পালিয়ে যান। পরে এ ঘটনায় শিশুকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি গত শনিবার দুপুরে মামলা করে শিশুর পরিবার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (7)
Alam Khan ১৭ জুন, ২০১৯, ১:৪৭ এএম says : 0
এই দুই শিক্ষকের ফাসি দেয়াহোক
Total Reply(0)
Md Mehedi Hasan Sohel ১৭ জুন, ২০১৯, ১:৪৮ এএম says : 0
সরকারের একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া উচিৎ। কিভাবে যৌন লালস থেকে বের করা যায়।
Total Reply(0)
Mohammad Idris Alam ১৭ জুন, ২০১৯, ১:৪৮ এএম says : 0
কিছু দিন আগে হারকিউলিস নামে ধর্ষণকারীদের হত্যা করেছিল। র‌্যাব পুলিশ কে বলবো মাদক কারবারীদের বন্দুক যুদ্ধে পরে মারুন আগে ধর্ষণকারীদের মেরে ফেলুন। প্রতি হত্যায় পাচঁ হাজার টাকা দিবো।
Total Reply(0)
Mohammad Babo Babo Babul ১৭ জুন, ২০১৯, ১:৪৯ এএম says : 0
মেয়েটা কি এতই ভাল যে দুই জন শিক্ষক লাগবে। মেয়েটারও বিচার হওয়া উচিত।
Total Reply(0)
Abdul Kayuaim ১৭ জুন, ২০১৯, ১:৫০ এএম says : 0
একটি সন্তান দুটি বাবা একটি মা পাবে।
Total Reply(0)
Doyal Mukti ১৭ জুন, ২০১৯, ১:৫০ এএম says : 0
বাংলাদেশে কিছু কিছু মানুষ বেহায়া, নির্লজ্জ, ওদের কারনে আজ এই অবস্থা, আর যারা এইরকম ধর্ষন করে তাদেকে রাস্তায় লেমপোস্টে ফাঁসি দেওয়া উচিত, যাতে এইরকম অবস্থা আর না হয়।
Total Reply(0)
Abdul Haque Sarker ১৭ জুন, ২০১৯, ১:৫০ এএম says : 0
দেশকে দুষারোপ করছেন কেন? বলতে পারেন না নৈতিক চরিত্র। যে এইসব করছে তার কি বোন নাই, তার বোনকে যদি অন্য কাহ এমন করে তখন? দুষ আরো আছে বাবা মা। মা বাবার চরিত্র ভাল হলে ছেলে মেয়ের চরিত্রও ভাল হবে। তাদেরকে সবসময় গৃনার চোখে দেখা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন