রাজনৈতিক সমালোচনায় ভব্যতা-ভদ্রতা বজায় রাখতে বিরোধী দলগুলোর রাজনীতিকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
গতকাল রোববার দুপুরে ঢাকায় সচিবালয়ে তথ্য মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে ২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না ফোর-টুয়েন্টি বাজেট বলার বিষয়ে সাংবাদিকরা মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে মন্ত্রী বলেন, তিনি (মাহমুদুর রহমান মান্না) যে ভাষায় সমালোচনা করেছেন তা শুনে আমি প্রার্থনা করি যে, বারবার দলবদল করার কারণে তাকে যেন কেউ ফোর-টুয়েন্টি রাজনীতিবিদ না ভাবেন। সেইসাথে মন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্ব বলছে, বিশ্বব্যাংক বলছে, বাংলাদেশ এগিয়ে গেছে আর গত ১০ বছর ধরে সিপিডি ও বিএনপি একই বক্তব্য, গৎবাঁধা সমালোচনা করে আসছে। সিপিডি‘র গবেষণা কি বিশ্বব্যাংকের চেয়েও ভালো! গত বছর তো বিএনপি বাজেট দেবার আগেই প্রতিক্রিয়া দিয়ে দিয়েছিল, এবছর অবশ্য পরে দিয়েছে। এমন নিরর্থক সমালোচনা না করে আমি তাদের বলব, অর্থবহ সমালোচনা করে যুক্তি-তর্কের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে। আর রাজনৈতিক সমালোচনায় ভব্যতা-ভদ্রতা বজায় রাখতে।
প্রতি বাজেটের পর বিএনপি এবং সিপিডি গৎবাঁধা একই সমালোচনা করে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‹আপনারা দেখবেন, তারা ঘুরেফিরে তিনটি কথা বলে। তারা বলে, বাজেট বাস্তবায়নযোগ্য নয়, উচ্চাভিলাষী এবং গণমুখী নয়, এটি দরিদ্র মানুষের জন্য কোনো কল্যাণ বয়ে আনবে না- এসব কথাই তারা গত দশ বছর ধরে বলে আসছে। অথচ গত ১০ বছরে দেশে মাথাপিছু আয় ৬০০ ডলার থেকে ২০০০ ডলারে উন্নীত হয়েছে, মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে আড়াইগুণ। বাজেটে ভুল থাকলে মাথাপিছু আয় তিনগুণ কী করে হলো? কীভাবে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হলো?› প্রশ্ন রাখেন তথ্যমন্ত্রী।
ড. হাছান মাহমুদ বিএনপি ও সিপিডি’র কাছে আরো প্রশ্ন রেখে বলেন, তাদের কাছে আমার প্রশ্ন, গত ১০ বছরে দেশটা কিভাবে এগোলো? দারিদ্র্যসীমা অর্ধেকে কিভাবে এলো ? মানুষের মাথাপিছু আয় সাড়ে ৩ গুণ কিভাবে বাড়লো? ক্রয়ক্ষমতা কিভাবে আড়াই গুণ বাড়লো? খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে কিভাবে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হলো? বাংলাদেশ সমগ্র পৃথিবীর কাছে কিভাবে উদাহরণ হলো?› ‘শুধু তাই নয়, গত দশ বছর ধরে শেখ হাসিনার সরকারের বাজেট বাস্তবায়নের হার ৯৫ শতাংশ। উন্নয়ন বাজেট বাস্তবায়নের হারও ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ, যা বাজেট বাস্তবায়নে সরকারের সক্ষমতার বাড়িয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত বাজেট একটি চমৎকার বাজেট। এটি শিল্প ও ব্যবসা বান্ধব বাজেট, যাতে কর্ম সংস্থান ও করদাতার সংখ্যা বাড়বে। এসময় গণতান্ত্রিক উপায়ে সরকার পরিবর্তনের আন্দোলনে যাবে গণফোরাম এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আমি গণফোরাম সভাপতিকে বলব, তার নিজের দলের ঐক্যই আগে ধরে রাখার চেষ্টা করতে, কারণ অনেকেই সেখান থেকে চলে যাচ্ছে। তার দলই যদি ঠিক না থাকে, আন্দোলন করবেন কিভাবে।
তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা: মুরাদ হাসান, তথ্যসচিব আবদুল মালেক, ডিবিসি২৪ টিভি চ্যানেলের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরীসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন