শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

আইন অনুযায়ী ডিআইজি মিজানের শাস্তি হবে

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৯ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

ডিআইজি মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজের ভাগ্নে নিখোঁজ সৈয়দ ইফতেখার আলম প্রকাশ সৌরভকে খুঁজে বের করতে পুলিশ কাজ করছে। তিনি বেরিয়ে আসবেন। গ্রেফতারকৃত সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের অন্যায় অনুযায়ী যা ব্যবস্থা নেয়ার তা নেয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন দপ্তরগুলোর সঙ্গে বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ সব কথা বলেন।
এ সময় থানার ওসি হিসেবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপারদের পদায়নের বিষয়ে স্পষ্ট কিছু না জানালেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের যখনই যেটা প্রয়োজন হবে তা জনস্বার্থে করব।
ডিআইজি মিজানকে কেন গ্রেফতার করা হচ্ছে না- সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ডিআইজি মিজান অলরেডি সাসপেন্ড হয়েছে, অলরেডি ওএসডি হয়ে পড়ে রয়েছেন এবং আইনি প্রক্রিয়া চলছে। কেউ আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন অনুযায়ী তার শাস্তির বিধান হচ্ছে।
তিনি বলেন, সে (ওসি মোয়াজ্জেম) কিন্তু (নুসরাতের) মামলাটা রিসিভ করেছে। মামলাটা রিসিভ করে প্রিন্সিপালকে অ্যারেস্ট করে অলরেডি চালান দিয়ে দিয়েছিল। সে একটা বোকামি করেছে।
যেকোনো মানুষকে কারাগারে নিলে হাতকড়া পড়ানো হয়, মানুষ বলছে তাকে (ওমি মোয়াজ্জেম) জামাই আদর দেয়া হচ্ছে- এ বিষয়ে আসাদুজ্জামান খান বলেন, কতগুলো নিয়মও তো আছে। সে যে অন্যায় করেছে সেই অন্যায়ের জন্য যতখানি প্রয়োজন আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি।
অ্যাডিশনাল এসপিদের থানায় নিয়োগ দেয়া হচ্ছে কিনা- এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সব সময় সবকিছু এগিয়ে যায়। আগে ওসি হতেন একজন এসআই। এখন ওসি হন একজন প্রথম শ্রেণীর গেজেটেড অফিসার। উন্নয়ন, এগিয়ে যাওয়া একটা রুটিন ওয়ার্ক, এটা হবেই। এটা সব সময়ই সবকিছু অ্যাডপ করছি আরো এগিয়ে যাওয়ার জন্য। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা সবকিছু করে যাচ্ছি। এটা একটি চলমান প্রক্রিয়া। আমাদের যখনই যেটা প্রয়োজন হবে, যখনই যেটা মনে করবো এটা করা উচিত, আমরা সেটাই করছি জনস্বার্থে। আমরা যে প্রোগ্রাম নিচ্ছি জনসাধারণকে লক্ষ্য করে, জনকল্যাণ লক্ষ্য করে।
তিনি আরো বলেন, আগে ২০ জন কনস্টেবল থাকতো এক থানায়, এখন ৫০ জন। দু’জন এসআই থাকতো, একজন এসআই চার্জে থাকতো। এখন ৩০-৪০ জন এসআই একটি থানায় কাজ করে। একজন এএসপি একটি থানা মনিটর করছেন, একজন অ্যাডিশনাল এসপি দুইটা থানা মনিটর করছেন। এগুলো চলমান প্রক্রিয়া। মাদক অধিদপ্তরে তিন জেলা মিলে একজন একজন ইন্সপেক্টর ছিল, আমরা প্রতি জেলায় দিচ্ছি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি (সোহলে তাজ) ঘোষণা দিয়েছেন তার ভাগ্নেকে নাকি পাওয়া যাচ্ছে না। সেজন্য ওই থানায় একটা সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে। আমি মনে করি, তিনি যদি কোনোখানে যেয়ে থাকেন, তাহলে ফিরে আসবেন। আর না হলে জিডি অনুযায়ী আমাদের পুলিশ কর্মকর্তা আছেন তারা আইনি ব্যবস্থা নেবেন। তাকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য পরিচয়ে তাকে তুলে নেয়া হয়েছে- বলে শোনা যাচ্ছে, এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই রকম শব্দ আমি শুনিনি। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল আমাকে ফোন করে এ ঘটনাার কথা বলেছেন। আমি শুনে পুলিশ কমিশনারকে যা বলার বলে দিয়েছি। তিনি কাজ করছেন। হয়তো তার খোঁজ পাওয়া যাবে এবং তিনি বেরিয়ে আসবেন।
অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামানের সঙ্গে ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল সার্ভিস, কারা অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের প্রধানরা চুক্তি সই করেন।
পুলিশ সদর দফতরের তদন্ত কমিটি
ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে ডিআইজি মিজানের বিরুদ্ধে ৩ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে পুলিশ সদর দফতর। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কর্মকর্তাকে ঘুষ দেয়ার বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করবে এই কমিটি।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি মো. সোহেল রানা জানান, অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (অ্যাডমিন অ্যান্ড অপারেশন) ড. মইনুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে পুলিশের এ তদন্ত কমিটিতে রয়েছেন- অতিরিক্ত পুলিশ মহাপরিদর্শক (ফিন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট) শাহাবুদ্দীন কোরেশী ও পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মিয়া মাসুদ হোসেন।
তিনি আরো বলেন, ঘুষ লেনদেনের বিষয়টি অনুসন্ধান করে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির কাছ থেকে প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, ডিআইজি মিজানুর রহমানকে দায়মুক্তি দিতে ৫০ লাখ টাকা ও এর সঙ্গে দাবি করেন একটি গ্যাসচালিত গাড়ি ঘুষ নেয়ার জন্য ‘চুক্তি’ করেছিলেন দুদক পরিচালক খন্দকার এনামুল বাছির। এ অভিযোগে দুদক পরিচালককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে দুদক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন